17048

করোনা মোকাবেলায় দরকার এক লাখ কোটি টাকা

করোনা মোকাবেলায় দরকার এক লাখ কোটি টাকা

2020-04-05 02:28:49

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের কালো ছোবল পড়েছে দেশের মাটিতেও। গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম বারের মতো করোনা আক্রান্ত রোগীর তথ্য জানায় সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। সে সংখ্যা এখন গিয়ে ঠেকেছে ৭০ জনে। তাদের মধ্যে মারা গেছে ৮ জন।

প্রাণঘাতী এ ভাইরাস মোকাবিলায় বিভিন্ন দেশ তাদের নাগরিকদের জন্যে ইতোমধ্যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের সরকারও করোনা প্রতিরোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। তবে দেশে করোনা মোকাবিলায় এক লাখ কোটি টাকা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবুল বারকাত।

গত সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো ‘করোনাভাইরাস-১৯ : সম্ভাব্য অনিশ্চয়তা ও করণীয় কল্পচিত্র’ নামে এক প্রতিবেদনে আবুল বারকাত এক লাখ কোটি টাকা কোথা থেকে আসবে তারও একটি ধারণাপত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এক লাখ কোটি টাকা একসঙ্গে এখনই প্রয়োজন হবে না। পরিবহন ব্যয়, বেতন-ভাতা, রি-এজেন্ট এসবের জন্য ভিন্ন ভিন্ন সময়ে এই টাকা লাগবে।

ধারণা পত্রে তিনি বলেন, বৈশ্বিকভাবে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় এরই মধ্যে দুই হাজার কোটি ডলারের তহবিল ঘোষণা করা হয়েছে। ওই তহবিল আক্রান্ত দেশগুলো ব্যবহার করতে পারবে। পাশাপাশি করোনাভাইরাস মোকাবেলায় আরো ৩০ বিলিয়ন ডলার অর্থ দিচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন ফাউন্ডেশন, ট্রাস্ট ও চ্যারিটি সংস্থা। অর্থাৎ এই মুহূর্তে করোনা প্রতিরোধে বৈশ্বিক তহবিলে আছে ৫০ বিলিয়ন ডলার। যৌক্তিক কারণেই বৈশ্বিক জনসংখ্যা অনুপাতে বাংলাদেশের ন্যায্য হিসসা হওয়া উচিত ওই ৫০ বিলিয়ন ডলারের কমপক্ষে ৩ শতাংশ। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পাওনা হতে পারে ১২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। এ হিসসা পেতে হলে প্রয়োজন হবে শক্তিশালী কূটনৈতিক কর্মকাণ্ড। এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেই সামনে থেকে তহবিল থেকে টাকা আনার দায়িত্ব নিতে হবে। বৈশ্বিক তহবিল থেকে ওই অর্থ পাওয়া গেলে ঘাটতি থাকবে ৮৭ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। ঘাটতি অর্থ পূরণের উৎস হতে পারে জরুরি অবস্থায় সম্পদশালীদের ওপর সম্পদ কর বা ওয়েলথ ট্যাক্স আরোপ। এখান থেকে আসতে পারে ৩০ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া পাচারকৃত অর্থ ও কালোটাকা উদ্ধার থেকে আসতে পারে ৬০ হাজার কোটি টাকা।

আবুল বারকাত বলেন, এখানে অর্থনীতিশাস্ত্রের কয়েকটি প্রমাণিত-পরীক্ষিত সত্য কথা উল্লেখ করা জরুরি। সম্পদ কর বৈষম্য কমিয়ে আনে। অর্থপাচার ও কালোটাকা বৈষম্য বাড়ায়। সম্পদশালীদের ওপর করহার কমালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ে না। সমাজের নিচতলার ৯০ শতাংশ মানুষের ওপর কর কমালে তাদের কর্মসংস্থান ও আয় বাড়ে। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এক লাখ কোটি টাকার বিনিয়োগ ফল হবে বহুমুখী ইতিবাচক। স্বল্প ও দীর্ঘ উভয় মেয়াদেই লাভবান হবে বাংলাদেশ। স্বল্প মেয়াদে আক্রান্ত মানুষ বাঁচবে, সংক্রমণ হার কমবে, সংক্রমণ বিস্তার রোধ হবে, মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত হবে, মানুষের মানসিক দুশ্চিন্তা এবং উদ্ভূত দুর্দশা কমবে।

সম্পাদক: ইসমাঈল হোসাইন রাসেল
যোগাযোগ: ক্যাম্পাস টাইমস
৪৩ শহীদ নজরুল ইসলাম সড়ক, হাটখোলা রোড, চৌধুরী মল, টিকাটুলি, ঢাকা-১২০৩
মোবাইল: ০১৬২৫ ১৫৬৪৫৫
ইমেইল:[email protected]