19356

'সেই দিনগুলো থেকে অনেক বড় শিক্ষা নিয়েছি'

'সেই দিনগুলো থেকে অনেক বড় শিক্ষা নিয়েছি'

2020-09-28 20:47:32

ইচ্ছা ছিল হবেন টেলিভিশন উপস্থাপিকা। তারপর হঠাৎ করেই ডাক পান নাটকে অভিনয়ের। অভিষেক ছোট একটি চরিত্র দিয়ে হলেও অল্প সময়েই অভিনেত্রী হিসেবে সবার নজর কাড়েন তাসনুভা তিশা। এখন তো টেলিভিশন ও ওয়েব প্রযোজনায় অভিনয় নিয়ে বেশ ব্যস্ত তিনি। ব্যক্তিগত ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা হলো তাসনুভা তিশার সঙ্গে।

আপনার অভিনয়ের শুরু কীভাবে?

হঠাৎ করে নির্মাতা মোস্তফা কামাল রাজের ‘লাল খাম বনাম নীল খাম’ নাটক দিয়েই প্রথম কাজ শুরু করি। খুব ছোট একটি চরিত্র করেছিলাম। মাত্র তিনটি দৃশ্য ছিল। নাটক করব, সে রকম কোনো পরিকল্পনা ছিল না।

হঠাৎ করে অভিনয়ে কীভাবে এলেন?

আমার ইচ্ছা ছিল সংবাদপাঠিকা হব। এভাবে অ্যাক্টিং করতে হবে, এটা কখনো ভাবিনি। সংবাদপাঠিকা হওয়ার জন্য এনটিভির কিছু বড় ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। তাঁরাই পরে নির্মাতা মোস্তফা কামাল রাজের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। এভাবেই আমার ইচ্ছা অভিনয়ের কাছে হেরে গেল!

অভিনয় করা নিয়ে আপনার পরিবারের সদস্যরা কী বলতেন?

কাউকে না জানিয়ে প্রথম নাটকে শুটিং করেছিলাম। নাটকটি প্রচারের সময় সবাই জেনেছে। প্রথম দিকে পরিবারের কেউ বোঝেননি, আমি অভিনয়ে ক্যারিয়ার গড়ব। পরে যখন সবাই জানলেন, তখন কেউই নিষেধ করেননি। পরে যখন প্রধান চরিত্র করতে শুরু করলাম, তখন সবাই প্রশংসা করতেন। আম্মুর কাছে শুনেছি, আব্বু খুঁজে খুঁজে আমার নাটকগুলো দেখেন।

কবে বুঝতে পারলেন এই শিল্প আপনার ভালো লাগে?

প্রথম দিন যখন অভিনয় করি, তখন থেকেই বুঝতে পেরেছি, অভিনয়টাই আমরা জায়গা। ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো নিয়ে আমার মধ্যে কোনো জড়তা কাজ করেনি। আমার এখনো মনে আছে, আমি অভিনয় করে আনন্দ পাচ্ছিলাম। পরে দেখলাম বিভিন্ন শুটিংয়ে গিয়ে সহজেই চরিত্রগুলোয় আমি ঢুকে যেতে পারছি।

প্রথম দিকে কাজ করতে গিয়ে মন খারাপের কোনো ঘটনা আছে?

একটা ঘটনা আমার মনটা খুবই খারাপ করে দিয়েছিল। হঠাৎ একটি নাটকের শুটিং ইউনিট থেকে ফোন দিয়ে বলল, ‘খুব ভালো একটা কাজ আছে তাড়াতাড়ি এসো।’ ফোন পেয়ে আমি সঙ্গে সঙ্গে গেলাম ধানমন্ডি। বেলা ১টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বসিয়ে রেখে বলে আপনার কোনো দৃশ্য আজ হবে না। সেদিন রাতে আমার প্রচণ্ড কান্না পাচ্ছিল। আমি বুঝতে পারছিলাম, তাঁরা আমার জায়গায় অন্য একজনকে নিয়েছে। যে মেয়েটাকে নিয়েছে, সে কথাই বলতে পারে না। অথচ আমার ডেডিকেশনের কোনো দাম নেই। সেদিন আমার মনে জেদ চেপেছিল, আমি ভালো করে দেখাব।

.

আর কোনো ঘটনা, যেটায় আপনার এই জেদ আরও বেড়েছে?

প্রধান চরিত্র করার আগে বিভিন্ন শুটিং সেটে গিয়ে পার্শ্বচরিত্রের অভিনেত্রী হিসেবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতাম। মূল নায়িকাদের শুটিং ঠিকই করা হচ্ছে, কিন্তু আমাদের মেকআপ রুমের এক পাশে বসিয়ে রাখা হতো। অনেক নায়িকার ব্যবহার খারাপ লাগত। তখন মনে মনে বলতাম, আমিও একদিন লিড ক্যারেক্টারে অভিনয় করব। সেই দিনগুলো থেকে অনেক বড় শিক্ষা নিয়েছি।

কী ধরনের শিক্ষা?

আমি যদি কখনো প্রধান চরিত্র করি, তাহলে কোনো এক্সট্রা আটির্স্ট বা সহ–অভিনেত্রীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করব না। যাঁরা ছোট ক্যারেক্টার করতে আসেন, তাঁদের সবার সঙ্গে আমি ভালো ব্যবহার করি। আমি লিড করছি, তুমি ছোট ক্যারেক্টার করছ—এসব বলে আমি কখনো ভাব দেখাই না।

আলোচনা–সমালোচনা—কোনটিকে কীভাবে নেন?

দুটোই ইতিবাচকভাবে নিই। আমার মনে হয়, আলোচনা–সমালোচনা দুটোরই দরকার আছে।

এটা তো বলার অপেক্ষাই রাখে না, এ সময়ের সবচেয়ে রোমান্টিক অভিনেতা কে। সবচেয়ে রোমান্টিক অভিনেতা নিঃসন্দেহে অপূর্ব। অপূর্ব ভাইয়ের পরে রোমান্টিক নায়ক সিয়ামকে মনে হয়। জোভানও বেশ ভালো।

সহ–অভিনেতা হিসেবে দশে দশ দেবেন কাকে?

(একটু সময় নিয়ে) যাঁদের সঙ্গে কাজ হয়, সবাইকে দশে দশ দেওয়া যায়। তবে শুটিংয়ের আগে চরিত্র, গল্প নিয়ে সবচেয়ে বেশি কথা হয় জোভানের সঙ্গে। তাঁর সঙ্গে আমার ক্যামেরার সামনের রসায়ন ভালো। কিন্তু তাঁর সঙ্গে ক্যামেরার পেছনের যোগাযোগটা একদমই ভালো নয়। তার মানে এই না যে আমাদের মধ্যে কোনো মনোমালিন্য আছে। আমরা কথা বলি কম। এতে আমরা নিজেরাই মাঝেমধ্যে অবাক হয়ে যাই। সহ–অভিনেতা হিসেবে ওকে দশে দশ দেওয়া যায়।

নিজেকে অভিনেত্রী বলবেন, নাকি নায়িকা?

আমি নায়িকা না, অভিনেত্রী। নায়িকা পরিচয়ে আমি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না।

কাজ করতে গিয়ে সবচেয়ে খুশি হন কখন?

যখন নির্মাতারা বলেন, গল্পটা আপনার ওপর; তখন খুব খুশি লাগে।

সম্পাদক: ইসমাঈল হোসাইন রাসেল
যোগাযোগ: ক্যাম্পাস টাইমস
৪৩ শহীদ নজরুল ইসলাম সড়ক, হাটখোলা রোড, চৌধুরী মল, টিকাটুলি, ঢাকা-১২০৩
মোবাইল: ০১৬২৫ ১৫৬৪৫৫
ইমেইল:[email protected]