20416

অনলাইন ক্লাসে মনোযোগ থাকে না, কি করবো?

অনলাইন ক্লাসে মনোযোগ থাকে না, কি করবো?

2020-11-21 17:39:47

১. তোমার বিছানায় এক বালতি পানি ঢেলে দাও। মোবাইল ফোনের ব্যাটারি খুলে তোমার আম্মুকে দিয়ে দাও। আর টিচারকে বলে দাও-- ক্লাসের মাঝে হুটহাট করে প্রশ্ন ধরতে এবং কেউ উত্তর দিতে না পারলে তাকে কানে ধরিয়ে দাঁড়া করিয়ে তার ছবি ফেইসবুকে ট্যাগ করে পোস্ট দিয়ে দিতে। তাহলে দেখবে অলসতা শুধু তোমার মাথা থেকে না বরং তোমার এলাকা থেকে পালিয়ে যাবে।

যেহেতু শিক্ষক এই অপমানজনক কাজটি করবেন না। তাই তোমাকে আরো ছয়টা সিস্টেম জানিয়ে দিচ্ছি। এবং এর মধ্যে কোন সিস্টেম কাজ না করলে ৭ নম্বর সিস্টেমটা অবশ্যই কাজ করবেই। গ্যারান্টি।

২. টিচারের ডান্ডি
যেকোন বিষয়ে আমাদের ফাঁকিবাজি করার প্রথম কারণ হচ্ছে আমরা ফাঁকিবাজি করে পার পেয়ে যেতে পারি। বা আলসেমি করার পরেও আমাদের কোন জবাবদিহিতা নাই বলেই আমরা ফাঁকিবাজি, আলসেমি বা পিছলামী করি। কারণ মানুষ হিসেবে আমরা-- শক্তের ভক্ত নরমের ঝম। অর্থাৎ যে টিচার কড়া সে টিচারের ক্লাসে দরকার হলে চোখে গরম পানি ঢেলে দিয়েও এটেনশন ধরে রাখি। আর যে টিচার একটু দরদী তার ক্লাসে ইচ্ছা করেই ফাঁকিবাজি করি। সিরিয়াসনেস ধরে রাখি না। তাই কোন টিচার তোমার জন্য ডান্ডি রেডি করে না রাখলেও তুমি মনে মনে ভাববে সেই টিচার পরীক্ষায় বাম্বু দিবে। তাহলে সেই ভয়ে তুমি নিজে নিজে সিরিয়াস থাকবে।

৩. তুমি একজন বোকা।
কারণ কোন ক্লাসে ফাঁকিবাজি করে তুমি ভাবছো তুমি অনেক স্মার্ট হয়ে গেছো। আসলে সেটা তো না ই। বরং ক্লাসে ফাঁকিবাজি করে তুমি বোকামি করেছো। প্রথমত, তুমি যেহেতু ক্লাস করছো। হয়তো এই রিলেটেড পরীক্ষা হবে। আর পরীক্ষায় এই টাইপের জিনিসগুলো আসতে পারে। আর তুমি পরীক্ষায় মার্কস পেতে হলে তোমাকে জিনিসগুলো বাসায় গিয়ে আবার পড়তে হবে। বা জানতে হবে।

তারমানে তুমি ক্লাসেও সময় দিলে আবার বাসায় গিয়ে আবার নতুন করে জানলে। অথচ অনলাইন ক্লাস চলাকালীন সময় একটু বেশি মনোযোগ দিলেই তোমার বাসায় গিয়ে পড়ার প্রয়োজনটা অর্ধেক কমে যেতো। অথচ ক্লাসে ফাঁকিবাজি করে তুমি ক্লাসের সময়ও নষ্ট করলে আবার বাসায় গিয়েও বাড়তি সময় লাগিয়ে দিলে।

৪. ক্লাসনোট তোলা
অফলাইন ক্লাসে যেমন তুমি টান হয়ে বেঞ্চে বসো। সামনে খাতা কলম এবং মনোযোগ টিচারের সামনে। অনলাইন ক্লাসেও সেইম সিস্টেমে বসতে হবে। তারপর টিচার যা যা বলতেছে সেগুলা খাতায় নোট তোলা। এই কারণে অফলাইন ক্লাসে অনেক মনোযোগ থাকে। অনলাইন ক্লাসেও তোমাকে সেইম কাজ করতে হবে। ক্লাস নোট তুলতে হবে। খাতায় লিখতে হবে। কোন জিনিসটা টিচার গুরুত্বপূর্ণ বলতেছে সেটা নোট করে রাখলে তোমার মনোযোগ থাকবে। অলসতা আসবে না।

পরে আবার ভিডিও দেখতে পাবে সেই কথা ভুলে যাও।

৫. অনলাইন ক্লাস ছাড়া বাকি সব কিছু থেকে ডিসকানেক্টেড
তোমার অন্য সব ডিভাইস এর ওয়াইফাই বন্ধ করে দিতে হবে। এমনকি যেভাবে অনলাইন ক্লাস করতেছো সেটা ছাড়া বাকি সব অফ করে দিতে হবে। ল্যাপটপ দিয়ে অনলাইন ক্লাসে জয়েন করলে মোবাইল অফ করে দিতে হবে। এমনকি বাসার অন্য সবাইকে বলে দিতে হবে যে তোমার ক্লাস শুরু হয়ে যাচ্ছে কোন ডিস্টার্ব না করতে। তাহলে অনলাইন বা অফলাইন এর সব ডিস্ট্রাকশন থেকে তুমি আলাদা হয়ে গেলে অনলাইন ক্লাসে মনোযোগ রাখা সহজ হবে।

৬. ক্লাসের প্রথম যে তার সাথে প্রতিযোগিতায় নামো
তুমি যদি পড়ালেখায় সিরিয়াস হয়ে যাও। ক্লাসে যে সবচেয়ে ভালো করতেছে তার সাথে টক্কর দিতে চাও। তাহলেই সেই কম্পিটিশনে ভালো করার তাগিদেই তুমি ক্লাসে মনোযোগ দিবে। এমন একটা ভাব ঠিক করো যে তুমি তোমার অনলাইন ক্লাসে জয়েন করার জন্য যে এমবি কিনছো সেই টাকা উসুল করবে। তুমি যে সময় দিয়ে ক্লাসে এটেন্ড করতেছো সেই সময় উসুল করবে। তাহলে তোমার দ্বারা মনোযোগ রাখা অনেক সহজ হবে।

৭. লাষ্ট চিকিৎসা
উপরের কোন সিস্টেমে কাজ না হলে-- ক্লাসের সবচেয়ে হট মেয়েকে বা সবচেয়ে স্মার্ট ছেলেকে বলো-- ক্লাস নিয়ে টেনশন করো না। ক্লাসের পরে আমি তোমাকে সব বুঝিয়ে দিবো। তাহলেই সেই উছিলায় ক্লাসে শুধু মনোযোগই থাকবে না। বরং উপচে পড়বে।

আর কোন কারণে সেরকম কাউকে ক্লাসে খুঁজে না পেলে ধরে নাও তুমি আলিয়া বাট বা আরিয়ানা গ্রান্ডের সাথে ক্লাস করছো।

বি: দ্র: উপরের লেখার সাথে ছবির তেমন প্রাসঙ্গিকতা নাই ধরে নেয়া ঠিক হবে না। কারণ আলিয়া বাট কিন্তু স্টুডেন্ট অফ দ্য ইয়ার দিয়েই শুরু করছে। সে যেহেতু স্টুডেন্ট অফ দ্য ইয়ার দিয়ে তার ক্যারিয়ার শুরু করছে সে ভালো স্টুডেন্ট হবেই হবে :D

আর আলিয়া বাট ক্লাসে থাকলে যদি মনোযোগ পড়ার দিকে না থেকে অন্য দিকে চলে যায়। টেনশনের কিছু নাই। কারণ অন্তত মনোযোগটাতো থাকছে।

লেখকঃ ঝংকার মাহবুব

সম্পাদক: ইসমাঈল হোসাইন রাসেল
যোগাযোগ: ক্যাম্পাস টাইমস
৪৩ শহীদ নজরুল ইসলাম সড়ক, হাটখোলা রোড, চৌধুরী মল, টিকাটুলি, ঢাকা-১২০৩
মোবাইল: ০১৬২৫ ১৫৬৪৫৫
ইমেইল:[email protected]