17321

করোনাভাইরাস রোধে চীনের ‘জীবাণু প্রতিরোধী’ গাড়ি

করোনাভাইরাস রোধে চীনের ‘জীবাণু প্রতিরোধী’ গাড়ি

2020-05-02 23:38:54

স্বাস্থ্য উদ্বেগ থেকে মুনাফা তুলতে চীনের গাড়ি নির্মাতারা ভাইরাস ঠেকানোর ব্যবস্থা সম্বলিত গাড়ি বাজারে ছেড়েছে। নতুন মডেলের এই গাড়িগুলোতে থাকছে ফেস মাস্ক পরলে যে মাত্রার সুরক্ষা পাওয়া যায় গাড়ির ভেতর সেরকম ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি।

দেশটির কয়েকটি বড় গাড়ি নির্মাতা সংস্থা এধরনের গাড়ি বাজারে ছেড়েছে। এর মধ্যে আছে গিলি নামে একটি সংস্থা যারা লন্ডনের রাস্তায় চলা কালো ট্যাক্সি বানায়।

গিলি নামের কোম্পানিটি প্রথম ভাইরাস প্রতিরোধী ব্যবস্থা সম্বলিত তাদের গাড়িটি বাজারে চালু করেছে। বড় শহরে বায়ু দূষণ থেকে মোটরগাড়ির চালকরা কীভাবে সুরক্ষা পেতে পারেন তা নিয়ে কিছু কাজ তারা আগেই করেছিল। তাদের এই কাজের নাম ছিল “স্বাস্থ্যকর গাড়ি প্রকল্প”। এর লক্ষ্য ছিল বাতাসের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র দূষণকণা যাতে গাড়ির ভেতরে ঢুকতে না পারে এবং গাড়ির চালক ও যাত্রীদের শরীরে এসব বিষাক্ত পদার্থ যাতে নিঃশ্বাসের সঙ্গে না ঢোকে এমন প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা তৈরি করা। গিলি এমন জীবাণু প্রতিরোধী পদার্থ তৈরি করছে যাতে গাড়ির ভেতরের জিনিসপত্র এবং গাড়ির দরোজার হ্যান্ডেল জীবাণু মুক্ত থাকে।

“অনেক গাড়ির চালক তাদের গাড়িতে লম্বা সময় কাটান, অনেকের কাছে তাদের গাড়ি তাদের ‘দ্বিতীয় বাড়ি’, কাজেই স্বাস্থ্যসম্মত গাড়ি বানাতে পারলে উন্নত জীবনমানের জন্য সেই গাড়ির চাহিদা বাজারে বাড়বে,” জানান গিলির একজন মুখপাত্র।

তিনি বলছেন তাদের দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যই হবে গাড়িতে চালক ও যাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার উপকরণ রাখা। গিলি এখন নতুন গাড়ির চাবি ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেবার জন্য ব্যবহার করছে ড্রোন।

ব্রিটিশ ব্র্যান্ড এমজির মালিক সংস্থা এসএআইসি আরও একটি বাড়তি ফিচার যোগ করেছে তাদের গাড়িতে। এতে গাড়ির ভেতর একটি অতিবেগুনি রশ্মির বাতি ব্যবহার করে গাড়ির শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার মাধ্যমে গাড়ির ভেতরের বাতাসকে জীবাণুমুক্ত করা যাবে।

প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠান গুয়ানঝু অটোমোবাইল তাদের বেশ কয়েকটি নতুন মডেলে তিন ধাপের বাতাস জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা বসিয়েছে।

“গাড়িকে আরও স্বাস্থ্য-সম্মত, ঝুঁকিমুক্ত করে তোলার অবশ্যই একটা প্রয়াস চলছে। গাড়িতে এসব নতুন সংযোজনের কাজ আগে থেকেই চলছিল। কিন্তু কোভিড-১৯-এর পর এগুলোকে সামনে আনা অবশ্যই বিক্রি বাড়ানোর একটা চেষ্টা,” বলছেন সংস্থার একজন বিশেষজ্ঞ ভিভেক বৈদ্য।

তিনি বলছেন বর্তমানে স্বাস্থ্য সচেতনতা বড়েছে এবং পাশাপাশি মানুষ গাড়ির ভেতরেও স্বাস্থ্যগত পরিবেশ নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে। কাজেই এটা শুধু চীনের একার কোন বিষয় নয়। সব গাড়ি নির্মাতাই এখন এই সুরক্ষা ব্যবস্থার দিকে নজর দিচ্ছে।

তবে বিষয়টাকে “চটকদার” বলা মানতে নারাজ চীনের মার্কেট রিসার্চ গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক শন রিয়েন।

“কোভিড-১৯ নিয়ে মানুষের মধ্যে যে ভীতি আছে অবশ্যই তার সুযোগ নিচ্ছে গাড়ি নির্মাতারা। খদ্দেররা যদি বাড়তি সুরক্ষা কিনতে বাড়তি অর্থ খরচ করে গাড়ি কোম্পানিগুলো সে সুযোগ হাতছাড়া করবে কেন?”

২০১৫ সালে টেসলা কোম্পানির যেসব গাড়িতে দূষণ মুক্ত বাতাস ফিলটার পদ্ধতির মাধ্যমে ঢোকার ব্যবস্থা ছিল, সেসব গাড়ি চীনের বাজারে প্রচুর বিক্রি হয়েছে।

তবে তিনি বলছেন কোন গাড়ি নির্মাতা যদি দাবি করে যে তাদের গাড়ির ভেতর এমন প্রযুক্তি আছে যে গাড়ির ভেতর থেকে কেউ কোভিড নাইনটিনে সংক্রমিত হতে পারবে না কারণ তাদের প্রযুক্তি গাড়ির ভেতর থেকে ভাইরাস তাড়িয়ে দেবে, তাহলে সেটা একটু আবস্তব দাবি হবে।

গাড়ি প্রস্তুতকারকরা মনে করছেন আগামী কয়েক মাসে মানুষ গণ পরিবহনে চলাফেরা করার বদলে হয়ত নিজেদের গাড়ি ব্যবহারে বেশি উৎসাহী হবে, তাই ভাইরাস মোকাবেলার বিশেষ ব্যবস্থা গাড়িতে আছে এমন ধারণা তাদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করতে পারে।

এসআর/ ০২ মে ২০২০

সম্পাদক: ইসমাঈল হোসাইন রাসেল
যোগাযোগ: ক্যাম্পাস টাইমস
৪৩ শহীদ নজরুল ইসলাম সড়ক, হাটখোলা রোড, চৌধুরী মল, টিকাটুলি, ঢাকা-১২০৩
মোবাইল: ০১৬২৫ ১৫৬৪৫৫
ইমেইল:[email protected]