21603

হাইপেশিয়া ও উররাকা

হাইপেশিয়া ও উররাকা

2021-03-12 11:19:15

হাইপেশিয়া
তাঁর স্বাধীনতাকে হেয় করার জন্য তাঁরা বলত, “সে যে কারও সাথে নস্টামি করতে পারে”। তাঁর বুদ্ধিমত্তার প্রশংসা করে তাঁরা বলত, “সে ঠিক নারীদের মতো নয়।”

কিন্তু দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য অধ্যাপক, মেজিস্ট্রেট, দার্শনিক ও রাজনীতিবিদরা তাঁর কথা শুনতে স্কুল অব আলেকজেন্দ্রিয়াতে আসত।

হাইপেশিয়া সেই সব ধাঁধাঁ নিয়ে গবেষণা করতেন যা ইউক্লিড ও আর্কেমেডিসকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখায়, আবার তিনি স্বর্গীয় ভালোবাসা বা মানবিক প্রেমের ক্ষেত্রে সস্তা অন্ধ বিশ্বাসের বিরুদ্ধেও কথা বলতেন। তিনি মানুষকে সন্দেহ পোষণ ও প্রশ্ন করার শিক্ষা দিয়েছিলেন। তাঁর পরামর্শ ছিলঃ

“তোমার চিন্তা করার অধিকারকে সমুন্নত রাখো। একেবারে কোন কিছু চিন্তা না করার থেকে ভুল চিন্তা করাও ভালো।”

খ্রিস্টান পুরুষ কর্তৃত্ব দ্বারা পরিচালিত এক শহরে প্রচলিত মতবিরোধী এই নারী ক্লাসে কী শিক্ষা দিচ্ছিলেন? তাঁরা তাঁকে ডাইনি ও কুহকী বলে ডাকত। তাঁকে তারা মেরে ফেলার হুমকি দিত।

এবং ৪১৫ সালের মার্চের কোন একদিনে, দুপুর বেলা একদল লোক তাঁর ওপর চড়াও হয়। গাড়ি থেকে তাঁকে টেনে নামিয়ে উলঙ্গ করে রাস্তা দিয়ে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁকে প্রচন্ড মারধর ও ছুরিকাঘাত করা হয়। এরপর পাবলিক স্কয়ারে এক বহ্নি উৎসবের মাধ্যমে তাঁর যা কিছু অবশিষ্ট ছিল, সবটাই পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
নগরকর্তা বলেছিলেন, “এটার তদন্ত হবে।”

উররাকা

তিনি ছিলেন স্পেনের প্রথম রাণি। উররাকা সতের বছর রাজত্ব করেছিলেন, যদিও চার্চের সূত্র বলে, তাঁর রাজত্ব চার বছরের বেশী টেকেনি।

জোরপূর্বক বিয়ে আর স্বামীর লাঞ্ছনা ও মারধর সহ্য করতে না পেরে উররাকা স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। নিজের শয্যা ও প্রাসাদ থেকে তাঁকে লাথি মেরে তাড়িয়ে দেন। যদিও চার্চের সূত্র মতে, স্বামীই নাকি তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন।

ক্ষমতায় কে আছেন চার্চকে তা দেখিয়ে দেবার জন্য আর একজন সম্রাজ্ঞীকে কীভাবে শ্রদ্ধা করতে হয় তা শেখানোর জন্য রাণি উররাকা সান্টিয়াগো দে কম্পোসতেলা’র আর্চবিশপকে বন্দি করেন এবং তাঁর গীর্জা দখলে নেন। কোন খ্রিস্টান ভূমিতেই আগে এরকম কোন ঘটনার কথা শোনা যায়নি। যদিও চার্চ ব্যাখ্যা করে, “এটা ছিল কেবল এক নারী আত্মা ও নারী বুদ্ধির বিস্ফোরণ মাত্র, যা সহজেই বিপর্যস্ত করা যেত এবং যা ছিল সংক্রামক বিষে পরিপূর্ণ।”

তাঁর জীবন ছিল আমোদ-প্রমোদে ভরপূর, তাঁর প্রণয়ঘটিত ব্যাপার ছিল অগণিত, প্রেমিকও ছিল বহু আর তিনি বেশ জাঁকালভাবে তা দেখাতেন। যদিও চার্চের সূত্র মতে, সেগুলি ছিল “এমন ধরণের আচরণ যা বলতে গেলে যে কেউ লজ্জ্বায় লাল হয়ে যাবেন।”

সম্পাদক: ইসমাঈল হোসাইন রাসেল
যোগাযোগ: ক্যাম্পাস টাইমস
৪৩ শহীদ নজরুল ইসলাম সড়ক, হাটখোলা রোড, চৌধুরী মল, টিকাটুলি, ঢাকা-১২০৩
মোবাইল: ০১৬২৫ ১৫৬৪৫৫
ইমেইল:[email protected]