24663

দুই প্যানেলে ভাগ হয়ে নির্বাচনে শাবিপ্রবির আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা

দুই প্যানেলে ভাগ হয়ে নির্বাচনে শাবিপ্রবির আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা

2022-03-30 21:04:42

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) শিক্ষক সমিতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চলছে প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ। ছয় বছর পর নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত না থাকলেও দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন আওয়ামীপন্থী দুই প্যানেলের প্রার্থীরা। নির্বাচনকে নিজেদের ‘অস্তিত্বের লড়াই’ হিসেবে নিয়েছেন উভয়পক্ষ। সঙ্গত কারণেই ৩০ মার্চের নির্বাচন অন্যান্য বছরের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

এবারের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে চলছে নানা সমীকরণ। উপাচার্যের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম বছর, চলমান দুটি মেগা প্রকল্প, আন্দোলনে উপাচার্যের ঠিকে যাওয়া ও বর্তমান শিক্ষক সমিতির কর্মকাণ্ড ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গত ১৬ জানুয়ারি চারদফা দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। দেশব্যাপী আলোচিত-সমালোচিত হয় শাবিপ্রবি। এ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে সৃষ্টি হয় বিরূপ প্রতিক্রিয়া। এসব ঘটনার প্রেক্ষাপটে শিক্ষক সমিতি কতটুকু কার্যকর ভূমিকা রাখতে পেরেছিল- শিক্ষকসহ বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে এমন প্রশ্ন এখন রীতিমত ঘুরপাক খাচ্ছে।

এছাড়া গত বছরের ২১ আগস্ট দ্বিতীয় মেয়াদে যোগদান করেন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। প্রথম মেয়াদ শেষের দিকে উপাচার্যের সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব তৈরি হলেও পরে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মধ্যে শুরু হয় নতুন সমীকরণ। শিক্ষকদের একটি বড় অংশ উপাচার্য ঘেঁষা হতে চেষ্টা-তদবির করেন। পাশাপাশি দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্যের নিয়োগের পর উপাচার্য বিরোধী অবস্থান থেকে সরে আসে শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শিক্ষক সমিতির ‘দোদুল্যমান’ ভূমিকা বারবার প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আন্দোলনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমঝোতা চেষ্টায় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন সমিতির নেতৃবৃন্দ।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে একাধিকবার চেষ্টা করেও ব্যর্থতার পরিচয় দেন শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ। আন্দোলনের এক পর্যায়ে ঢাকা থেকে ছুটে আসেন অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তার হস্তক্ষেপে অনশন ভাঙতে রাজি হয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। ওই সময় আন্দোলনে শিক্ষকদের ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন ড. জাফর ইকবাল।

গত ২৩ জানুয়ারি শিক্ষক সমিতির সভা শেষে সংকট সমাধানে সরকারের কাছে চারদফা দাবি জানিয়ে ছিলেন শিক্ষক সমিতি। এর মধ্যে উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়ে সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানালে শিক্ষার্থীদের কাছে প্রশংসিত হয় শিক্ষক সমিতি। কিন্তু এক ঘণ্টাপর আরেক বিজ্ঞপ্তিতে উপাচার্যের বাসভবনের বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় নিন্দা জানালে শিক্ষার্থীদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে শিক্ষক সমিতি।

‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ প্যানেল থেকে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী সহযোগী অধ্যাপক শিশির কান্তি প্রামাণিক জাগো নিউজকে বলেন, গবেষণা বান্ধব বিশ্ববিদ্যালয় তৈরিতে যেভাবে অগ্রযাত্রা হওয়ার কথা সেভাবে তৈরি হয়নি। এ জায়গায় বেশি প্রাধান্য দিতে চাই।

অন্যদিকে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তচিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ প্যানেল থেকে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম জাগো নিউজকে বলেন, সরকার কাকে ভাইস চ্যান্সেলর করবে সেটা তাদের বিষয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থিতিশীলতার স্বার্থে ভাইস চ্যান্সেলরকে সহযোগিতা করতে হবে।

তিনি বলেন, যোগ্যতা অর্জন করলে রাজনৈতিক বা অন্যান্য কারণে কারও প্রমোশন আটকানো যাবে না। নির্বাচিত হলে এ ব্যবহারে সতর্ক থাকব ও মানসম্মত গবেষণার দিকে নজর দিব।

সম্পাদক: ইসমাঈল হোসাইন রাসেল
যোগাযোগ: ক্যাম্পাস টাইমস
৪৩ শহীদ নজরুল ইসলাম সড়ক, হাটখোলা রোড, চৌধুরী মল, টিকাটুলি, ঢাকা-১২০৩
মোবাইল: ০১৬২৫ ১৫৬৪৫৫
ইমেইল:[email protected]