গেমিং ও ইস্পোর্টস : বাংলাদেশ পরিপ্রেক্ষিতে সুযোগ ওসম্ভাবনা
2023-11-12 14:40:16
আধুনিক বিনোদন মাধ্যমে গেমিং ও ইস্পোর্টস অত্যন্ত জনপ্রিয় এবংলাভজনক সেক্টর হিসেবে বৈশ্বিক পরিচিতি লাভ করেছে। ২০২২সালের রিপোর্ট অনুযায়ী গেমিং বাজারের মুল্য ছিলো ১৯৬.৮বিলিয়ন ডলার যা ২০২৭ সাল নাগাদ প্রায় ৩২১.২ বিলিয়ন ডলারেগিয়ে পৌঁছাবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। মোবাইল ডিভাইসেরসহজলভ্যতায় গেমিং এর প্লেয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি, ক্লাউড গেমিং এরউত্থান এবং ইস্পোর্টসের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা সহ বেশ কয়েকটিকারনে এই সেক্টরে দ্রুত বিকাশের কারন হিসেবে ধরা হচ্ছে।
গেমিং ও ইস্পোর্টস সেক্টরে সকল বয়স, জাতি, বর্ণ, লিঙ্গ, সক্ষমতানির্বিশেষে সকলেই অংশ নিয়ে সুফল লাভ করতে পারেন।উদাহরণস্বরূপ কিছু সুযোগ নীচে তুলে ধরা হলো:
১. গেইম তৈরি করা: গেমিং শিল্পের ক্রমাগত বৃদ্ধির কারনে গেইমডেভোলোপারদের চাহিদাও বেড়ে চলেছে। পাশাপাশি প্রোগ্রামার, আর্টিস্ট, গেইম স্টোরি রাইটার, গেইম ডিজাইনার সহ নানান সুযোগরয়েছে।
২. ইস্পোর্টস বা প্রতিযোগিতামুলক গেমিং:
বিশাল প্রাইজপুলের টুর্নামেন্ট তো রয়েছেই সাথে একজন প্লেয়ার বাইস্পোর্টস এথলেট হিসেবে নিজেকে গড়তে পারলে আপনিও পেতেপারেন দেশে বিদেশে নিজেকে মেলে ধরবার সুযোগ। তাছাড়া এরকমটুর্নামেন্ট আয়োজক হিসেবে করলে বা ক্রু হিসেবে কাজ করলেও একটিভালো আয়ের সুযোগ হতে পারে। এছাড়াও রয়েছে, কোচ, কমেন্টেটর, এনালিস্ট, টিম ম্যানেজার হওয়া সহ আরো নানান সুযোগ। তবেবাংলাদেশের জন্য এই সুযোগগুলি এখনো সীমিত। টেনসেন্ট গেইমসসর্বপ্রথম বাংলাদেশে ২ টি অফিশিয়াল ইভেন্ট আনে যার সর্বমোটপ্রাইজপুল ছিলো ১ কোটি টাকা।
৩. কন্টেন্ট তৈরি বা ইনফ্লুয়েন্সার: অন্যান্য মিডিয়ার মতো এই গেমিংসেক্টরেও ফেসবুক, ইউটিউব বা টুইচ স্ট্রিম করে আপনি হয়ে যেতেপারেন ইনফ্লুয়েন্সার আর ব্রান্ড ডিল ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেবেশ ভালো আয় করতে পারবেন। উল্লেখ্য এই সেক্টরটি বাংলাদেশেদ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
৪.গেমিং ও ইস্পোর্টস এডুকেশন: গেইমিং মানব মস্তিষ্ক ও স্কিলউন্নয়নেও সাহায্য করে। আর এই বিষয়ক গবেষণা ও পাঠদান করবারলক্ষ্যে পাশ্চাত্যে ইউরোপ, আমেরিকা, চীন এর মত অনেক উন্নতদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে মেইনস্ট্রিম শিক্ষার অংশ হিসেবে ইস্পোর্টসঅন্তর্ভুক্ত হয়েছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত এই বছরেই প্রথমইস্পোর্টস স্কুল খুলেছে।
সামগ্রিকভাবে, গেমিং ও ইস্পোর্টস ইন্ডাস্ট্রি এমন একটি সেক্টর যেখানেসব বয়সী, সব সুযোগ সুবিধার মানুষের জন্য সীমাহীন সুযোগ তৈরিকরেছে। যদি আপনি গেমিংয়ে ক্যারিয়ার গড়ার আগ্রহী হন, অথবাযদি আপনি কেবল এই ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে আরও জানতে চান, তাহলেইন্টারনেটে এ বিষয় অনেক রিসোর্স রয়েছে।
যদি আপনি গেমিং ইন্ডাস্ট্রিতে ক্যারিয়ার শুরু করতে আগ্রহী হন, তাহলে এখানে আপনার জন্য কিছু টিপস:
-বিভিন্ন ধরনের গেম ডেভেলপমেন্ট কাজ সম্পর্কে জানুন। গেমডেভেলপমেন্টের বিভিন্ন ধরনের কাজ পাওয়া যায়, আপনি আপনারইচ্ছে অনুযায়ী সেক্টর এ কাজ করতে পারবেন।
-বিভিন্ন গেমিং কমিউনিটিতে যুক্ত হোন। অনেক অনলাইন এবংঅফলাইন গেমিং কমিউনিটি রয়েছে যেখানে আপনি অন্যান্যগেমারদের সাথে দেখা করতে এবং নেটওয়ার্ক তৈরি করতে পারেন৷ এইইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে আরও জানতে গেমিং কমিউনিটির গুলো মানুষেরসাথে নেটওয়ার্ক তৈরি করতে পারেন। এটি আপনাকে অনেক সাহায্যেকরবে।
-আপনার কাজের একটি পোর্টফোলিও তৈরি করুন। আপনি যদি গেমডেভেলপমেন্টে চাকরি পেতে আগ্রহী হন তবে আপনার কাজের একটিপোর্টফোলিও তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে গেম ডেমো, কাজেরনমুনা বা লেখার নমুনা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
-তাছাড়া গেমিং কনফারেন্স এবং বিভিন্ন অনলাইন অফলাইনইভেন্টগুলিতে যোগ দিতে পারেন এবং LinkedIn এবং অন্যান্যসোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে নেটওয়ার্ক বিল্ডিং সাহায্যে করবে।
গেমিং ও ইস্পোর্টস ইন্ডাস্ট্রি বর্তমানে ক্যারিয়ার হিসেবে একদম প্রথাগতনা হলেও অদুর ভবিষ্যতে এটি যে আমাদের যুব সমাজের জন্য একটিবিকল্পধারার কর্মসংস্থান হতে পারে তাতে কোন সন্দেহ নেই। কঠোরপরিশ্রম এবং সঠিক পরিকল্পনা, আপনাকে গেমিং ইন্ডাস্ট্রিতে আপনারলক্ষ্যগুলি অর্জন করে সুন্দর ও নিরাপদ একটি ক্যারিয়ার গড়তেপারেন।
লেখকঃ
মোঃ ইমরান হোসেন আলভী
কমিউনিটি ম্যানেজার
টেনসেন্ট গেইমস