31156

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ চায় শিক্ষার্থীরা

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ চায় শিক্ষার্থীরা

2024-09-24 18:25:44

রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী এর পদত্যাগের দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের।

জানা গেছে, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সর্বশেষ গত ৫ ফেব্রুয়ারি তৃতীয় দফায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মুহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী একের পর এক অবৈধভাবে নানা সুবিধা নিয়েই চলেছেন। বছরের পর বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্টহাউসের একটি রুম দখল করে আছেন। এমনকি উপাচার্যের নামে বরাদ্দ একটি গাড়িও সার্বক্ষণিক ব্যবহার করেন তিনি। গত বছর চুক্তির শর্ত ভেঙে অবৈধভাবে প্রায় দেড় লাখ টাকা ঈদ বোনাস নিয়েছিলেন প্রকৌশলী আলমগীর চৌধুরী। এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে ইউজিসির নির্দেশনায় ওই অর্থ ফেরত দিতে বাধ্য হন তিনি

বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক ভবনের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ নিয়োগ পাওয়ার পর ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ৮৬ দিনের মধ্যে ৫৩ দিন ছুটি কাটিয়েছেন রেজিস্ট্রার আলমগীর চৌধুরী। মাঝে ২০ দিন বিরতি দিয়ে আবার টানা ৪০ দিনের ছুটি কাটাতে দেশের বাইরে যান। সর্বশেষ গত ৭ আগস্ট অসুস্থতার কথা বলে ছুটিতে চট্টগ্রামে চলে যান। তবে চিঠিতে তিনি লেখেন, 'সুস্থ হয়ে কর্মস্থলে যোগদানের আশা রাখি।' কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন শুনে ৯ আগস্ট রাতে তড়িঘড়ি করে ক্যাম্পাসে চলে আসেন। এরপর আবার ২ সেপ্টেম্বর কাউকে না জানিয়ে ছুটিতে যায়।

এছাড়াও আলমগীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বর্হিভ‚ত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয় থেকে দ্বিতীয়বারের মতো প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে।

আলমগীর চৌধুরী হলফনামার তথ্য গোপন করে নিজ নামে অবৈধভাবে সুগন্ধা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৪.২৪ কাঠার প্লট ও ঢাকার পূর্বাচলে ৭.৫ কাঠার দুটি প্লট নিয়েছেন ।

একই সঙ্গে তার স্ত্রীও রাজউক উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ হতে কর্ণফুলি আবাসিক এলাকায় ৪.২৫ কাঠার প্লট বরাদ্দ ও ঢাকার পূর্বাচলে ০৫ কাঠার প্লট নিয়েছেন। যা প্লট বরাদ্দ বিজ্ঞপ্তির ১২ নং অনুচ্ছেদ এর লংঘন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী যদি কেহ আবাসিক প্লট বা ফ্ল্যাট ইতোপূর্বে বরাদ্দ নিয়ে থাকেন বা বরাদ্দ পেয়ে হস্তান্তর করে থাকেন তবে তিনি দরখাস্ত করার অযোগ্য হবেন। আলমগীর চৌধুরী তথ্য গোপন নিজ নামে ও স্ত্রীর নামে একাধিক প্লট ও ফ্ল্যাট নিয়েছেন।
এছাড়াও আলমগীর চৌধুরীর বনানী ও ধানমন্ডির ফ্ল্যাট ক্রয়ের তথ্য এবং রাংগুনিয়ার গ্রামের বাড়ি নির্মাণে অবৈধ অর্থ ব্যবহারের অভিযোগ যাচাই করতে বলা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাকির হোসেন পাশা বলেন, অত্যন্ত লজ্জাজনক শহীদ আবু সাঈদের ক্যাম্পাসে দুর্নীতির সাথে সংশ্লিষ্ট এমন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতির যথোপযুক্ত প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।উল্লেখ্য তিনি শুধু সম্প্রতি সময়ে নয় বরং প্রায়ই সময় অফিস করেননা। দায়িত্ব পালনে দায়ছাড়া মনোভাব দেখিয়ে আসছেন এক্ষেত্রে তিনি সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এর স্নেহধন্য বলে আসছেন। সর্বোপরি আমরা আশা করি নতুন উপাচার্য এই দুর্নীতিগ্রস্থ রেজিস্ট্রারকে দ্রুত অপসারণে যথাযথ পদক্ষেপ নিবেন অন্যথায় আমরা সাধারণ শিক্ষার্থী এই দুর্নীতিবাজ রেজিস্ট্রারকে অপসারণে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।

আরেক শিক্ষার্থী মোছাঃ রাজিয়া সুলতানা বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ নিহত হয়েছে কিন্তু রেজিস্ট্রার কোন মামলা করে নাই, মামলা করেছে ভিসি বাংলোর হামলার। আওয়ামী সরকার পক্ষে কাজ করেছে এই রেজিস্ট্রার তাই আমরা তার পদত্যাগ চাই।

গণিত বিভাগের আবু রায়হান বলেন, আমরা জানতে পেরেছি তিনি নিয়মিত অফিসে আসেন না বেশির ভাগ সময় অসুস্থ থাকেন। তাহলে তো এই রকম রেজিস্ট্রার দিয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কোন পরিবর্তন আনতে পারবো না। আমরা এমন একজন রেজিস্ট্রার যে সৎ, দক্ষ, শিক্ষা বান্ধব, শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবে সব সময়। বর্তমানে যে আছে এই রকম অযোগ্য কোন রেজিস্টারকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখতে চাই না।

রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী বলেন, "উপাচার্য স্যার চাইলে চলে যাবো।"

এ ব্যাপারে মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড.শওকাত আলী বলেন, একজন কে পদত্যাগ করে যে আরেক জন কে আনতে হবে সেটার আমি যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন করতে যাচ্ছি । এই রেজিস্ট্রারের জায়গায় যে আরেক জন কে আনতে হবে সেটা ইতিমধ্যে আলোচনা করেছি বা করতে যাচ্ছি । বিষয় টা প্রক্রিয়াধীন।

সম্পাদক: ইসমাঈল হোসাইন রাসেল
যোগাযোগ: ক্যাম্পাস টাইমস
৪৩ শহীদ নজরুল ইসলাম সড়ক, হাটখোলা রোড, চৌধুরী মল, টিকাটুলি, ঢাকা-১২০৩
মোবাইল: ০১৬২৫ ১৫৬৪৫৫
ইমেইল:[email protected]