সন্তানের স্নেহে পালিত শিয়ালটির জন্য কাঁদছেন হাসিনা আক্তার


Desk report | Published: 2022-01-09 03:01:03 BdST | Updated: 2024-03-28 19:37:04 BdST

এক বছর আগে খুব ছোট অবস্থায় জনৈক ব্যক্তির কাছ থেকে দুটি শিয়াল শাবক কিনে পালন শুরু করেন বেদেবধূ হাসিনা আক্তার। এর কয়েকদিন পরই একটি মারা যায়। খুব আদর-যত্নে বড় করতে থাকেন অপর শিয়ালটি। এই একবছরে হাসিনার দুই প্রতিবন্ধী সন্তান শিয়ালটির বন্ধু হয়ে ওঠে। তবে হঠাৎ করে বনবিভাগের লোকজন এসে শিয়ালটিকে নিয়ে যাওয়ায় হাসিনা আক্তার ও তার দুই শিশুসন্তান কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এমন ঘটনা ঘটেছে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরফলকন গ্রামে। খাঁচায় বন্যপ্রাণী লালন-পালন অপরাধ। বিষয়টি খবর পেয়ে শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলা প্রশাসন ও বনবিভাগ এসে শিয়ালটি নিয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানান, কেউ একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামানকে বেদেবধূর শিয়াল পালনের তথ্য দেন। পরে ইউএনওর নির্দেশে বনবিভাগের লোকজন এসে বাড়ি থেকে খাঁচায় বন্দি শিয়ালটি উদ্ধার করে নিয়ে যান। পালিত শিয়াল নিয়ে যাওয়ার শোক সামলাতে না পেরে ওই নারীও বন কর্মকর্তাদের পেছন পেছন ছুটে যান উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে। তার সঙ্গে প্রতিবন্ধী দুই শিশুও ছুটে আসে।

গৃহবধূ হাসিনা আক্তার বলেন, একবছর ধরে খুব যত্ন করে শিয়ালটিকে তিনি লালন করেছেন। সন্তানের মতোই তিনি আদর করতেন। সাবান মেখে গোসল করিয়ে দিতেন। আদর-যত্নের কখনো ত্রুটি ছিল না। শিয়ালটি নিয়ে যাওয়ার ঘটনা তিনি মেনে নিতে পারছেন না। ফেরত পেতে কর্মকর্তাদের পেছন পেছন ছুটে এসেছেন। তার দুই প্রতিবন্ধী শিশুসন্তানের খেলার সঙ্গীও ছিল শিয়ালটি।

উপজেলা বনবিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল কাদের বলেন, খাঁচায় বন্যপ্রাণী লালন-পালন করা অপরাধ। তাই ইউএনওর নির্দেশে শিয়ালটি উদ্ধার করা হয়েছে। রাতে এটি অবমুক্ত করা হবে।

এ বিষয়ে কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘একবছর ধরে শিয়ালটিকে ওই নারী লালন করেছেন। তাই শিয়ালটির প্রতি তারা মায়া জন্মেছে। আইনে অপরাধ হওয়ায় শিয়ালটিকে অবমুক্ত করার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। ওই নারীকে বুঝিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।

//