হাইকোর্ট কর্তৃক প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের আদেশের বিরুদ্ধে এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে রোববার (৭ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে ‘ব্লকেড’ (অবরোধ) কর্মসূচিরও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
রোববার বিকেল ৩টায় সারাদেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি শুরু হবে বলে শনিবার (৬ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টায় শাহবাগ মোড়ে অবরোধ শেষে এই ঘোষণা দেন কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।
বিকেল ৩টায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হল থেকে আলাদা ব্যানারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে জড়ো হন। পরে সেখান থেকে বিশাল মিছিল নিয়ে হলপাড়া-ভিসি চত্বর-টিএসসি-বকশিবাজার-বুয়েট-ইডেন কলেজ-হোম ইকোনমিকস-নীলক্ষেত-টিএসসি হয়ে বিকেল ৫টায় শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা।
সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, সরকার ভেবেছে আমরা এক-দুইদিন আন্দোলন করব এবং একদিন ক্লান্ত হয়ে যাব। আমরা এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে যাচ্ছি। আমাদেরকে যদি বাধ্য করা হয় আমরা প্রয়োজনে সারাদেশে হরতালের মতো কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। আজকের ছাত্র সমাজকে আদালতের মুখোমুখি করা হচ্ছে, এ দায় নির্বাহী বিভাগ এড়াতে পারে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যেতে বাধাদানের কারণে ছাত্রলীগের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে নাহিদ বলেন, আমরা কিন্তু হলের তালা ভাঙতে জানি। শিক্ষার্থীদের যদি বাধা দেওয়া হয় এর জবাব আপনাদের দিতে হবে। যদি আমরা চাকরি না পাই তাহলে আপনাদেরও চাকরি থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, আমরা শুধু শাহবাগে বসে থাকব না। আগামীকাল বিকেল ৩টা থেকে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো। আগামীকাল ঢাকা শহরের শাহবাগ, নীলক্ষেত, মতিঝিল, চানখারপুল, সায়েন্সল্যাবসহ প্রতিটি পয়েন্টে শিক্ষার্থীরা নেমে আসবেন এবং বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি সফল করবেন। ঢাকার বাইরে শিক্ষার্থীরা সব মহাসড়কগুলো অবরোধ করবেন।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, আমরা নির্বাহী বিভাগের কাছে জানতে চাই ২০১৮ সালের পরিপত্র কেন বাতিল করা হলো? শিক্ষকদের আন্দোলন কিন্তু বন্ধ হয়ে যাবে, আমাদের আন্দোলন বন্ধ হবে না। এরইমধ্যে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে আমাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছে। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্লাসে ফিরে যাব না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ও সায়েন্স লাইব্রেরি খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা যদি না খোলেন তাহলে আমরা নিজ দায়িত্বে খুলে নিতে বাধ্য হব।