পাচার অর্থ দেশে ফিরছে না এখনই, লাগতে পারে ৫ বছর: গভর্নর


নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা | Published: 2025-05-19 21:42:22 BdST | Updated: 2025-06-13 12:46:28 BdST

পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরত আনার বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তোড়জোড় দেখালেও শিগগিরই কোনো ফল মিলছে না। আইনি প্রক্রিয়া শেষে এসব অর্থ ফেরাতে ৪-৫ বছর লেগে যাবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।

যুক্তরাজ্য সফর শেষে দেশে ফিরে তিনি জানান, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়া শুরু হলেও তা দ্রুত শেষ হওয়ার সুযোগ নেই।

আজ সোমবার (১৯ মে) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে ‘বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ও সম্পদ পুনরুদ্ধার: গৃহীত কার্যক্রম ও বাস্তবায়ন অগ্রগতি’ শীর্ষক বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

তাঁরা জানান, বিদেশে থাকা সম্পদ এক বছরের মধ্যেই জব্দ করা সম্ভব।

এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘টাকা কীভাবে ফেরত আনতে হয়, সে বিষয়ে আমাদের আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা নেই। তবে ইন্টারন্যাশনাল এক্সপেরিয়েন্স জানি। সাধারণত আইনি প্রক্রিয়া শেষ হতে চার থেকে পাঁচ বছর লাগে।’

তিনি বলেন, পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে সময় লাগলেও সংশ্লিষ্ট দেশে সম্পদ জব্দ করা সম্ভব। তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন কিছু ব্যবস্থা নেওয়া যায়। যেমন—বিদেশে তাদের যে সম্পদ আছে, তা ফ্রিজ করা যায়। এটা আপেক্ষিকভাবে এক বছরের মধ্যেই সম্ভব। যদি দেশে সঠিকভাবে আইনি প্রক্রিয়া শেষ করা যায়, তাহলে সময় আরও কম লাগবে।’

গভর্নর বলেন, ‘তারপর এই অনুরোধটা বিদেশে আমাদের সঠিক প্রক্রিয়ায় পাঠাতে হবে। এটাকে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স বলে। আমরা এখন সেই অনুরোধ পাঠাচ্ছি। বিদেশি সহায়তা পেলে এসেট ফ্রিজ করা সম্ভব হবে। এরপর আদালতে আইনগত প্রক্রিয়া শুরু হবে, যা শেষ হতে চার-পাঁচ বছর লাগে।’

তবে এই প্রক্রিয়ায় সফলতার জন্য মানসম্পন্ন তথ্য সংগ্রহ জরুরি বলে মনে করেন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, ‘তথ্যের গুণগত মান বিদেশি আদালতের রায়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে। আমাদের আইনি প্রক্রিয়া বিদেশে শুরু করতে হবে, আমরা সেই দিকেই এগোচ্ছি।’

এর আগে গত এপ্রিল মাসে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর বলেছিলেন, ছয় মাসের মধ্যে বিদেশে পাচার হওয়া সম্পদের একটি বড় অংশ জব্দ করা হবে।

সেখানে তিনি বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কথা বলছি, চিঠি দিচ্ছি। বিদেশি আইন সংস্থা বা ফার্মের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে, তাদের নিয়োগ দেওয়ার বিষয়েও ভাবছি। এরই মধ্যে কিছু সম্পদ যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ভালো সহযোগিতা পাচ্ছি। এই প্রক্রিয়ায় ছয় মাসের মধ্যে বিদেশে থাকা সম্পদ জব্দ করা সম্ভব হবে।’