মোশতাককে শ্রদ্ধা : উপ-উপাচার্য সামাদকে রহমত উল্লাহর লিগ্যাল নোটিশ


DU Correspondent | Published: 2022-04-27 05:16:14 BdST | Updated: 2024-04-25 03:56:13 BdST

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সম্মানহানি করার হীন উদ্দেশ্যে প্রকৃত সত্য গোপন করে মনগড়া বক্তব্য সাজিয়ে মিথ্যাচারের আশ্রয় নেয়া, প্রতিবাদের নামে ঘোলাটে পরিস্থিতি সৃষ্টি করা এবং বক্তব্যের মাধ্যমে উক্ত আলোচনা সভার সভাপতিকে প্রভাবিত করার কারণ জানতে চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন ঢাবি আইন অনুষদের ডিন ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো: রহমত উল্লাহ।

মঙ্গলবার সকালে ঢাকা জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট মো: আমিনুল গণী টিটোর মাধ্যমে এই নোটিশ পাঠান তিনি। অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ ছাড়াও বি-বার্তার সম্পাদক বাণী ইয়াসমিন হাসি ও প্রতিবেদক মহিউদ্দিন রাসেলকেও নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

নোটিশে বলা হয়, রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করার হীন উদ্দেশ্যে অধ্যাপক রহমত উল্লাহর বক্তব্যের প্রকৃত সত্য গোপন করে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মনগড়া, বিকৃত ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য বি-বার্তা পত্রিকার প্রতিবেদক ও সম্পাদকের সহায়তায় তাদের অনলাইন পত্রিকায় তথ্যসূত্র উল্লেখ না করে প্রচার ও প্রকাশ করে অধ্যাপক রহমতুল্লাহর ব্যক্তিগত, পেশাগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থানকে কালিমা লেপন করে সম্মান ক্ষুণ্ণসহ অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করেন মুহাম্মদ সামাদ।

নোটিশে আরো বলা হয়, ড. রহমত উল্লাহ খন্দকার মোশতাক আহমেদের প্রতি কোনরূপ শ্রদ্ধা নিবেদন করেননি এবং তাকে কুলাঙ্গার হিসেবে চিহ্নিত করে ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও ঘৃণা প্রকাশ করেছেন। যা তার বক্তব্যের সত্যতা প্রমাণ করে এবং ড. সামাদের বিভ্রান্তিকর বক্তব্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

ড. সামাদ ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করে একটি বস্তুনিষ্ঠ বক্তব্যকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কলুষিত করেছেন এবং ড. রহমত উল্লাহর সম্পূর্ণ বক্তব্যের উদ্ধৃতি কোনো পত্রিকায় সরবরাহ না করে কেবলমাত্র তার প্রতিবাদের বিষয়টি উল্লেখ করেছেন এবং ওই পত্রিকার সম্পাদক ড. সামাদের সরবরাহকৃত ভ্রান্ত খণ্ডিত কথিত বক্তব্যের নামে অসত্য বক্তব্য ‘খুনি মোশতাকের প্রতি ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতির শ্রদ্ধা!’ শিরোনামে প্রতিবেদক মহিউদ্দিন রাসেলের প্রতিবেদনে প্রচার ও প্রকাশ করে সত্যকে আড়াল করার মাধ্যমে ড. রহমত উল্লাহর ব্যক্তিগত, পেশাগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক সম্মান এবং ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করেছেন। যার প্রেক্ষিতে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এবং ছাত্র সংগঠন তার বিরুদ্ধে হুমকিসহ কুশপুত্তলিকা দাহ করায় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটে।

নোটিশে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ ও বাকি দু’জনকে তিন দিনের মধ্যে ড. মো: রহমত উল্লাহর বক্তব্য প্রকাশ করে তার আলোকে প্রচারিত, প্রকাশিত ও কথিত অভিযোগের সত্যতা প্রকাশ করার জন্য বলা হয়। অন্যথায় সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় গ্রহণ করার কথাও বলা হয়।

এ ব্যাপারে ড. রহমত উল্লাহ বলেন, ‘তাকে উকিলের মাধ্যমে নোটিশ পাঠিয়েছি। এখন দেখি তিনি কী জবাব দেন? তারপর সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেব।’

উল্লেখ্য, গত ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবসের আলোচনা সভায় বক্তব্য প্রদানকালে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের অন্য মন্ত্রীদের পাশাপাশি তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোশতাকের অবদানের কথা উল্লেখ করে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন অধ্যাপক ড. মো: রহমত উল্লাহ। পরের দিন সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন রহমত উল্লাহ।

তিনি আলোচনা সভায় বক্তব্য দেয়ার সময় অজ্ঞতাবশত কোনো শব্দ বা বাক্য উচ্চারণ করে থাকলে তা নিতান্তই অনিচ্ছাকৃত ভুল হিসেবে উল্লেখ করেন এবং এজন্য ব্যক্তিগতভাবে দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে সকল প্রকার প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।