ঢাবিতে মামুনুল-বাবুনগরীর কুশপুত্তলিকা দাহ


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় | Published: 2021-03-31 23:24:55 BdST | Updated: 2024-04-24 07:54:57 BdST

আজ ৩১ মার্চ বুধবার বিকাল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে হেফাজত কর্তৃক দেশব্যাপী সহিংসতা, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাংচুর, যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও সাংবাদিক-পুলিশের ওপর হামলার মদদদাতা মামনুল-বাবুনগরীকে দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ চার দফা দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল ও কুশপুত্তলিকাদাহ করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। ঢাবির রাজু ভাস্কর্যে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মামুনুল-বাবুনগরীর কুশপুত্তলিকাদাহ শেষে শাহবাগ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেছে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ, কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো: আল মামুনের সঞ্চালনায় উক্ত প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। আরোও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি শাহীন মাতবর, শোয়েব হোসেন, অহিদুল ইসলাম তুষার, বুটেক্সের সাধারণ সম্পাদক রেদোয়ানুল ইসলামসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

প্রতিবাদ সমাবেশের বক্তব্যে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ, কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, "জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের অনুষ্ঠানকে বিতর্কিত করার জন্য একাত্তর সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ন্যায় সম্প্রতি হেফাজতে ইসলাম সমগ্র বাংলাদেশে আন্দোলনের নামে ব্যাপক সহিংসতা ও তাণ্ডব চালিয়েছে যা শান্তির ধর্ম ইসলামের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী। দেশের বিভিন্ন জেলায় যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, সাংবাদিকদের ওপর হামলা, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাংচুর, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ অফিস ভাংচুর, আওয়ামী লীগ অফিস ভাংচুর, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর হামলা, মানুষের বাড়িঘর ভাংচুর, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা ইত্যাদি কার্যক্রমই প্রমাণ করে হেফাজত কখনোই ইসলামের আদর্শে বিশ্বাস করে না। এরা প্রকৃতপক্ষে এজিদের উত্তরসূরী। এরা দেশ ও জাতির শত্রু।"

বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ, কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো: আল মামুন বলেন, "মামুনুল-বাবুনগরীরা কখনোই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না। এরা একাত্তরের পরাজিত অপশক্তির দোসর। এরা বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা থামিয়ে দিতে চায়। এরা এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশকে মনে প্রাণে মেনে নিতে পারেনি। দেশের কওমী মাদ্রাসাগুলোতে জাতীয় পতাকা ওড়ানো হয়না, জাতীয় সংগীত বাজানো হয়না, শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়নি। কওমী মাদ্রাসাগুলোকে এরা মিনি পাকিস্তান বানানোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। মাদ্রাসাগুলোকে মূলধারা শিক্ষা ব্যবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। মাদ্রাসার শিক্ষার্থী বলাৎকার বন্ধ করার জন্য বলাৎকারের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে হবে।মসজিদ-মাদ্রাসায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। হেফাজতের নিকট আমাদের প্রশ্ন, কোমলমতি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ধর্মীয় লেবাশে মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করে এরা প্রকৃতপক্ষে কাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়? জাতির বিবেক সাংবাদিকরাও এদের হামলা থেকে রক্ষা পায়নি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রেসক্লাব ও কয়েকটি টিভি চ্যানেলের সাংবাদিকদের ওপর হামলার মাধ্যমে প্রমাণ করেছে এরা কখনোই গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। গণমাধ্যমের ওপর আঘাত মানে পুরো রাষ্ট্রের ওপর আঘাত। জাতির কাছে হেফাজতের ভণ্ডামি ও ধর্ম ব্যবসা পরিষ্কার হয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভেঙ্গে হেফাজত স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে। জামাত-শিবিরের আপডেট ভার্সন হচ্ছে হেফাজত। এদেরকে রুখে দিবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।"

আল মামুন আরোও বলেন, "সন্ত্রাসী সংগঠন হেফাজতের মামুনুল-বাবুনগরী গংরা পাকিস্তানি দূতাবাসের অর্থায়নে প্রকাশ্য দিবালোকে নির্দেশ দিয়ে এধরনের ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে যা দেশের প্রচলিত আইন ও সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ইসলামের শত্রু হেফাজতের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি ধর্ম ব্যবসায়ী হেফাজত কর্তৃক দেশব্যাপী সহিংসতা, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাংচুর, যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও সাংবাদিক-পুলিশের ওপর হামলার মদদদাতা মামনুল-বাবুনগরীকে দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। অন্যথায় বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ আরোও কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করবে।"

বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ এর চার দফা দাবি সমূহ:

১) দেশব্যাপী সহিংসতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য হেফাজতকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করতে হবে।

২) সন্ত্রাসের মদদদাতা মামুনুল-বাবুনগরীকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

৩) সমগ্র দেশে সহিংসতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িতদের হেফাজতের সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

৪) আইন করে ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।