রাজারবাগ দরবারকে মূল্যায়নের দাবিতে ১৩টি সংগঠনের বিশাল মি‌ছিল


ঢাকা | Published: 2021-12-05 01:46:03 BdST | Updated: 2024-04-20 06:16:00 BdST

জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে গত ৫০ বছরে নিরলস কাজ করার প্রেক্ষিতে রাজারবাগ শরীফকে যথাযথ মূল্যায়নের দাবীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি কামনা করে বাংলাদেশ উলামা পীর মাশায়েখ মহাজোটসহ সমমনা ১৩টি সংগঠন আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিশাল প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধনের আয়োজন করেছে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, রাজারবাগ দরবার শরীফের সাথে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের আকাশ পাতাল পার্থক্য। কারণ- জঙ্গিদের কাজের পদ্ধতি ও চিন্তা-ভাবনার সাথে রাজারবাগ শরীফের কাজের পদ্ধতি ও চিন্তাভাবনায় রয়েছে বিস্তর ফারাক। জঙ্গিদের কাজের ধরন হলো- তারা মানুষকে হতাহত করে, ভীত সন্ত্রস্ত করে, অস্ত্র হাতে নিয়ে, হুমকি ধামকি দিয়ে, বোমাবাজি করে, ত্রাস সৃষ্টি করে, অর্থাৎ আইন অমান্য করে তাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের চেষ্টা চালায়। কিন্তু রাজারবাগ দরবার শরীফের কাজের পদ্ধতি হলো, রাজারবাগ শরীফ রাষ্ট্রের আইন মেনে, জনমত তৈরী করে, সংশোধন, পরিবর্তন ও পরিশুদ্ধকরণের মধ্য দিয়ে ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের সাথে রাজারবাগ দরবার শরীফের এখানেই মৌলিক পার্থক্য।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, রাজারবাগ দরবার শরীফের পক্ষ থেকে যদি এ দেশে কোন ইসলামী আইনের প্রয়োজন অনুভব করা হয়, তখন প্রয়োজনের কথা রাজারবাগ শরীফের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, অধিদফতর বা কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়। তারপরও যদি কাজ না হয়, তখন মিডিয়ার মাধ্যমে জনমত তৈরী, পত্রপত্রিকায় লেখালেখি, প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করা হয় যেন সরকার বুঝতে সক্ষম হয়, জনগণের আইনটি প্রয়োজন। এতে উদ্বুদ্ধ হয়ে সরকার যখন আইন তৈরীর কাজ শুরু করে, তখন সেই খসড়া আইন নিয়ে কোন কথা থাকলে রাজারবাগ শরীফ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি পাঠায়, আইন বিয়োজন-সংযোজনের জন্য পরামর্শ দেয়। এরপরও আইনটি নিয়ে যদি রাজারবাগ দরবার শরীফের কোন কথা থাকে, তবে আদালতের দারস্থ হয়ে আইনের ব্যাপারে আপত্তি সরকারকে জানানো হয়। অর্থাৎ রাজারবাগ শরীফ সংবিধান অনুযায়ী আইনটির পরিবর্তন বা পরিশোধন চায়। পাশাপাশি কেউ ধর্মবিরোধী কোন অপরাধ করলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী রাজারবাগ শরীফ তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, আখেরী নবী হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে কটূক্তির বিরুদ্ধে মৃত্যুদ- বিধান রেখে আইন পাশ করার জন্য রাজারবাগ শরীফ আইন মন্ত্রনালয়ের কাছে চিঠি দেয়। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা না নেয়ায় রাজারবাগ শরীফ পত্রিকায় লেখনীর মাধ্যমে জনমত তৈরী করে, যেন জনগণ সরকারের প্রতি এ আইন প্রণয়নের ব্যাপারে দাবী তুলতে পারে। পাশাপাশি, অনলাইনে আখেরী নবী হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে কটূক্তি অব্যাহত থাকায় রাজারবাগ শরীফ কটূক্তি বন্ধে উচ্চ আদালতে রিট দায়ের করে। এতে বিটিআরসি সচেতন হয়ে অনেক ধর্মবিদ্বেষী ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেয়। রিট নম্বর- ৯৬৬০/২০১৫।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০১৩ সালে নাস্তিক ব্লগারদের বিরুদ্ধে উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলো শাপলা চত্বরে ভাংচুর ও সহিংস কার্যক্রম চালালেও রাজারবাগ দরবার শরীফ তা থেকে বিরত থাকে। এর বদলে যে সকল নাস্তিক এসব অপকর্মের সাথে যুক্ত, তাদের দলিলভিত্তিক তালিকা তৈরী করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে জমা দেয়। সেই তালিকা নিয়েই পরবর্তীতে দেশের গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মিটিং করে এবং সেই সূত্র ধরে ধর্মবিদ্বেষী নাস্তিকদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যবস্থা নেয়া হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০১৫ সালের পর কিছু ধর্মবিদ্বেষীদের উপর হামলা ও হত্যাযজ্ঞ চালায় উগ্রবাদী ও জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো। বিশেষ করে, বইমেলার লেখক অভিজিৎ রায়কে হত্যা কিংবা জাফর ইকবালের উপর হামলার ঘটনা উল্লেখযোগ্য। কিন্তু রাজারবাগ দরবার শরীফ এ ধরনের হামলা-হত্যা না করে, রাষ্ট্রীয় আইন ব্যবহার করে ধর্মবিদ্বেষীদের বিরুদ্ধে রিট-মামলা দায়ের করে। যেমন- বইমেলায় নাস্তিক লেখক দ্বিয়ার্ষি আরাগ দিপুর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মেনশন করে রুল নেয়া এবং নিম্ন আদালতে মামলা করা। নাস্তিক লেখক তসলিমা নাসরিন, সুপ্রীতি ধর, সুচিষ্মিতা সিমন্তি ও অপু ম-লের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইবুনালে মামলা করা ইত্যাদি।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, উগ্রবাদী গ্রুপগুলো বিভিন্ন সময় মূর্তি-ভাস্কর্য ভাংচুর করে থাকে। কিন্তু রাজারবাগ দরবার শরীফ এ ধর্মবিরোধী ভাস্কর্য সরিয়ে ফেলার জন্য ভাংচুরে না গিয়ে উচ্চ আদালতে রিট দায়ের করে। যেমন- ২০১৭ সালে হাইকোর্টে থেমিসের মূর্তির বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইসলামী দলগুলো সহিংস আন্দোলন করলেও রাজারবাগ দরবার শরীফ এসবে সমর্থন দেয় নি। বরং উচ্চ আদালত

থেকে থেমিসের মূর্তি সরাতে রাজারবাগ দরবার শরীফের পক্ষ থেকে রিট দায়ের করা হয়েছিলো।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশে মসজিদ ভাঙ্গার ঘটনা থেকে সহিংস ঘটনার জন্ম হয়। কিন্তু রাজারবাগ দরবার শরীফ সহিংস ঘটনা দিয়ে নয়, বরং মসজিদ ভাঙ্গা রুখতে উচ্চ আদালতে রিট দায়ের করে। রিট নং- ৭২১২/২০১৮ ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ইসলামিক পারিবারিক আইনে বিয়ের জন্য কোন নির্দ্দিষ্ট বয়স নেই। তাই বাল্যবিয়ে বাধ্যতামূলক না হলেও ক্ষেত্র বিশেষে প্রয়োজন আছে। যে বিষয়টি নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য দিয়েছিলেন (সুত্র: চ্যানেল২৪ ৭ই ডিসেম্বর, ২০১৬)। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী পুত্র শেখ সজীব ওয়াজেদ জয়ও ফেসবুক স্ট্যাটাসে বাল্যবিয়ের প্রয়োজনীয়তা বর্ণনা করে স্ট্যাটাস দেন (৮ই ডিসেম্বর, ২০১৬)। রাজারবাগ দরবার শরীফ তাই সামাজিক ও ধর্মীয় দায়বদ্ধতা থেকেই বিয়ের জন্য বয়স নির্ধারণ করে দেয়ার বিপক্ষে অবস্থান নেয়। কিন্তু এজন্য কোন সহিংস ঘটনা নয়, বরং রাষ্ট্রীয় আইনের মাধ্যমেই যেন বিষয়টির ফয়সালা হয়, সে জন্য তারা বাল্যবিয়ের পক্ষে একটি রিট দায়ের করে। রিট নং- ২৪৭৭/২০২০ ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধান তুলে দেয়ার জন্য একদল রিট দায়ের করলে তার বিরুদ্ধে কথিত ইসলামী দলগুলো হরতাল, মিটিং মিছিল ও সহিংস ঘটনার হুমকি দেয়া শুরু করে। কিন্তু রাজারবাগ দরবার শরীফ সে পথে না গিয়ে ইন্টারভেনার হিসেবে সেই রিটে পার্টি হয়ে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম দ্বীন ইসলাম বহাল রাখা ও তাদের রিট আবেদনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে। রিট নং- ১৪৩৪/১৯৮৮।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, পত্র-পত্রিকায় জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে রাজারবাগ দরবার শরীফের পক্ষ থেকে অনেক ক্ষুরধার বিবৃতি-বক্তব্য পত্রস্থ হয়েছে-
ক্স জঙ্গি উত্থান ঠেকাতে ধর্মের নামে রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়া জরুরী। দৈনিক আল ইহসান ১২/১০/২০০৭ ইং
ক্স ২১ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে গ্রেনেড হামলায় জড়িত কুখ্যাত জঙ্গি নেতা মুফতে হান্নানের হরকাতুল জিহাদ। দৈনিক আল ইহসান ২০/১০/২০০৭ ইং
ক্স জঙ্গিরা জাহান্নামি ও মুরতাদ। ঘোষণা দিয়েছেন দৈনিক আল ইহসান ও মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকার সম্পাদক সাহেব (দৈনিক ডেসটিনি ১ নভেম্বর ২০০০ ইং)
ক্স ঔধসসধঃ, ড়রশুধ লড়ঃব ৎবপবরাব ভঁহফং ভৎড়স রহঃ'ষ রংষধসরপ ঃববৎড়ৎরংঃং, ংধুং ধহলঁসধহ ষবধফবৎং. ঞযব ওহফবঢ়বহফবহঃ ১৯ ংবঢ়ঃবসনবৎ ২০০৩
ক্স নিজামিকে আল-বাইয়্যিনাতের কোটি টাকা চ্যালেঞ্জ। দৈনিক জনকন্ঠ- ৪ নভেম্বর ২০০৯ ইং
ক্স সাঈদীর বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছে আল-বাইয়্যিনাত। দৈনিক ইত্তেফাক, ৪ নভেম্বর ২০০৯ ইং।
ক্স জঙ্গিদের ষাট ভাগই জামায়াত শিবির- আনজুমানে আল-বাইয়্যিনাত, বাংলাদেশ। যুগান্তর, ৪ নভেম্বর ২০০৯ ইং।
ক্স বিদেশী টাকায় মৌলবাদীরা দেশে জঙ্গি আস্তানা গড়ছে- চট্টগ্রামে আল-বাইয়্যিনাতের সম্মেলনে বলেছেন বক্তারা। ভোরের কাগজ, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০০৩ ।
ক্স যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাসী নয়, ধর্মের নামে রাজনীতি করে- তারাই রাজারবাগের পীর সাহেবের বিরোধী। দৈনিক জনকন্ঠ, ১২ আগষ্ট ২০০৩ ইং।
ক্স জামায়াত জামায়াতীদের আদর্শ বিবর্জিত এক দল যারা সাক্ষাৎ ধর্মব্যবসায়ী ও সুস্পষ্ট মুনাফিক এবং সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব। আল বাইয়্যিনাত-১৭৮, পৃ.৫
সমাবেশে বক্তারা বলেন, রাজারবাগ শরীফ এর পীর ছাহেবের জঙ্গিবাদের সহিত সম্পৃক্ততার বিষয়টি প্রমাণিত হয় না। তাহাকে শত্রুতাবশতঃ জঙ্গিবাদের সহিত সম্পৃক্ততার অপবাদ দিয়া অপপ্রচার চালানো হয়েছে। অনুসন্ধানে তিনি জঙ্গিবাদবিরোধী প্রতীয়মান হয়। ডিসি(ডিবি-দক্ষিন)(গোঃঅপঃবিঃ)- স্মারক নং- যুঃকঃ(গোঃঅপঃবিঃ)/৪৫-২০০৮/অংশ-১১৯৯ তারিখ-৮/১০/০৯ইং।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দৈনিক আল ইহসান ও মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকা দুটি বরং জঙ্গি তৎপরতার বিরুদ্ধে একটি বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর এবং পীর ছাহেব, উনার পত্রিকা অফিসের স্টাফ, মাদরাসার ছাত্র এবং শিক্ষকগণ জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে জড়িত আছে- এমন কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ তদন্তকালে পাওয়া যায় নাই এবং তারা আদর্শগত ও ধ্যান ধারণাভাবে একান্ত জঙ্গিবাদ বিরোধী বলে প্রতীয়মান হয়। স্মারক নং-৪৬৯২-২/ডিসি (ডিবি দক্ষিণ) (গোঃ অপঃবিঃ) তাং-১২-১০-০৯ইং
সমাবেশে বক্তারা বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অধিশাখা-২ থেকে ৩০ শে আগষ্ট ২০১৬ সালের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে- দৈনিক আল ইহসান ও মাসিক আল বাইয়্যিনাত এবং রাজারবাগ দরবার শরীফ জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ ও জামাতের বিরুদ্ধে ক্ষুরধার অবস্থানে। স্মারক নং-৪৪.০০.০০০০.০৭৫.০৬.০১১.১৬-৬৪৭
সমাবেশে বক্তারা বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অধিশাখা-২ থেকে ২১ শে জুলাই ২০১০ সালের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে- আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত/উলামা আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত, বাংলাদেশ নামীয় সংস্থাটি সম্পর্কে কোনো বিরূপ মন্তব্য নেই। স্মারক নং-স্বম(রাজ-২)/গোপ্র-ধউস/৪-১/২০০৯-২৪।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, মতিঝিল থানার ওসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- তদন্তকালে দেখা যায়, রাজারবাগের পীর সাহেব তিনি নালিসী সম্পত্তিতে মসজিদ-মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করিয়াছেন। তাছাড়া সাড়া দেশে তাহার অসংখ্য মুরিদান রহিয়াছে। তিনি বা ত

াহার মুরিদগণ জঙ্গি তৎপরতায় লিপ্ত এই ধরণের অভিযোগের কোনো সত্যতা পাওয়া যায় নাই। স্মারক নং-৩৩৫ ডিসি মতিঝিল, তারিখ-১৪-০৮-০৯। সমাবেশে বক্তারা বলেন, স্থানীয় সাংসদ ও কমিশনার জঙ্গিবাদ-জামাতবিরোধী অবস্থানের জন্য সব সময় ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং তাদের কাছে এযাবত রাজারবাগ দরবার শরীফের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, রাজারবাগ দরবার শরীফ হচ্ছে ত্বরিকতপন্থী ইলমে তাসাউফ বা অন্তর পরিশুদ্ধকরণের দরবার শরীফ। মূলত দ্বীন ইসলামের প্রচার প্রসার হয়েছে পীর সাহেব বা সূফী সাধকদের অন্তর পরিশুদ্ধকরণ কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে। কারণ একটি মানুষের অন্তর যখন পরিশুদ্ধ হয়ে যায়, তখন সে স্বাভাবিকভাবে মন্দ কাজ হতে ফিরে আসে এবং ভালো কাজ গ্রহণ করে। তাই সুফী-পীর সাহেবগণ যখন দ্বীন ইসলামের প্রচার করেছেন, তখন তাদের বোমাবাজি আর সন্ত্রাসের দরকার হয়নি। কিন্তু যে সব তথাকথিত ইসলামপন্থীরা তরিক্বত বা ইলমে তাসাউফ বিশ্বাস করে না, তাদের কাছে অপরকে শুদ্ধ করার জন্য জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ তথা শক্তি প্রয়োগ ভিন্ন অন্য কোন পদ্ধতি অবশিষ্ট থাকে না। কারণ অপরের অন্তর পরিশুদ্ধের জ্ঞান তাদের কাছেই নেই। এ কারণে ঐ সমস্ত দলগুলো ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে অস্ত্র ও গায়ের শক্তি ব্যবহার করে। তখনই তৈরী হয় জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাসবাদ। এজন্য এখন পর্যন্ত দেশ-বিদেশে যারা জঙ্গি বা সন্ত্রাসী কার্যক্রমে ধরা পড়েছে, তারা সবাই তাসাউফ বিরোধী সালাফী বা আহলে হাদীস দলের লোক, যারা ইলমে তাসাউফ বা তরিক্বতপন্থীদের বিরুদ্ধে। অপরদিকে সুফী বা তরিক্বত ও তাসাউফপন্থী কোন লোক কখনই জঙ্গি বা সন্ত্রাসী কার্যক্রমে ধরা পড়ে নাই। বরং কোন অঞ্চলে তাসাউফ চর্চার বিস্তার ঘটলে সেখানে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ সম্পূর্ণরূপে দূরীভূত হতে দেখা যায়।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন গোপালগঞ্জ দরবারের পীর ছাহেব আল্লামা শোয়াইব আহমদ। সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, মুহম্মদ মহিউদ্দিন সালেহী-পীর সাহেব, মোজাদ্দেদিয়া দরবার শরীফ, শনির আখড়া, মুহম্মদ আবদুস সালাম-পীর সাহেব, নক্সবন্দী মোজাদ্দেদিয়া দরবার, কদমতলা, ফকির মোসলেহউদ্দিন, পীর সাহেব, ফকিরবাড়ি দরবার, মিরপুর, চরনপুর দরবারের পীর ছাহেব মাও: আ: সালাম, কাঠালিয়া সুন্নিয়া দরবারের পীর ছাহেব আল্লামা মুফতি আলতাফ হোসাইন জামী, বাংলাদেশ জাতীয় মসজিদ বাইতুল মোকাররম মসজিদের প্রধান মুয়াজ্জিন আলহাজ্জ্ব মাওলানা ক্বারী কাজী মাসউদুর রহমান, বাংলাদেশ ওলামা লীগের সেক্রেটারী আলহাজ্জ্ব মাও: আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদের সভাপতি হাফেজ মাও: আ: সাত্তার, গোপালগঞ্জ দরবারের পীর ছাহেব আল্লামা শোয়াইব আহমদ, টাঙ্গাইলের পীর ছাহেব বীর মুক্তিযোদ্ধা আল্লামা আখতার হোসাইন বুখারী, নীলফামারী দরবারের পীর ছাহেব আল্লামা নূর মোহাম্মদ আহাদ আলী সরকার, কাঞ্চনপুর দরবারের হাফেজ মাও: আ: জলীল, ওলামা মাশায়েখ ঐক্যজোট সা: সম্পাদক অধ্যাপক মাও: আখতারুজ্জামান, রানীপুরা দরবারের আ: সবুর, করটিয়া দরবারের আলহাজ্ব মাও: মুহাম্মদ শওকত আলী শেখ সিলিমপুরী, আল্লামা ক্বারী কাজী মাসুদুর রহমান, আওয়ামী যুবলীগের ধর্ম সম্পাদক আলহাজ্ব মাও: খলীলুর রহমান সরদার, ওলামা মাশায়েখ যুগ্ম সম্পাদক মুফতি আল আমীন সহ শতাধিক মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত দরবারের ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।