হল খোলা রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত: জাবি প্রক্টর


জাবি | Published: 2021-02-20 21:27:22 BdST | Updated: 2024-04-25 12:10:54 BdST

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীদের ওপর গতকাল হামলা চালায় স্থানীয়রা। এর প্রতিবাদে আজ শনিবার সকালে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে হল খুলে দেওয়ার দাবি জানানো হয়। তবে কর্তৃপক্ষ তাতে সাড়া দেয়নি।

এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা হলের তালা ভাঙতে শুরু করেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তারা আল-বিরুনী হল ও ফজিলাতুন্নেসা হলের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকেছেন। এ ছাড়াও, নওয়াব ফয়জুন্নেসা হল এবং খালেদা জিয়া হলের তালা ভাঙার চেষ্টা করছেন।

এর আগে, আজ সকালে এসব বিষয় নিয়ে জাবির ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসানের সঙ্গে দ্য ডেইলি স্টারের কথা হয়।

তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর যারা হামলা চালিয়েছে তাদের চিহ্নিত করে রাষ্ট্রীয় আইনে বিচার হবে, সেই দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করছি। তারা আরেকটি দাবি জানিয়েছে, ওই রাস্তাটি আমাদের জন্য অনিরাপদ এবং আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে অনিরাপদ করেছে। আমরা যখন শিক্ষার্থী ছিলাম তখনও আমরা এই দাবি জানিয়েছি। এই দাবির সঙ্গেও আমরা সহমত প্রকাশ করছি।’

আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বিশ্ববিদ্যালয় নিয়েছে জানিয়ে হল খোলার দাবির বিষয়ে প্রক্টর বলেন, ‘বর্তমান মহামারি এবং রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। এটা একান্তই সরকারি সিদ্ধান্ত। সরকারি সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় আলাদা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। সরকার যে মুহূর্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবে, সঙ্গে সঙ্গেই আমরা হলগুলোও খুলে দেব।’

হল খুলে দিতে দেরি হলে যদি কোনো ধরনের অরাজকতা তৈরি হয় সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কী করবে, এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা পড়াশুনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছেন। তারা কোনোভাবেই যেন অরাজকতা তৈরি না করেন, সেজন্য তাদের অনুরোধ জানাচ্ছি। রাষ্ট্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তকে তারা যেন মেনে নেন।’

হল খুলে দেওয়ার দাবি প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়েই উঠছে এবং সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে জাবি কর্তৃপক্ষ কোনো আলোচনা করেছে কি না? জানতে চাইলে ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘এগুলো নিয়ে নিয়মিতই আলোচনা হচ্ছে। গত পরশুদিনও (বৃহস্পতিবার) উপাচার্য পরিষদে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সরকার সিদ্ধান্ত জানানোর পর দ্রুততম সময়ে তা বাস্তবায়ন করা হবে।’

আজ অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, ‘তাদের সব দাবি যৌক্তিক। তবে হল খোলার দাবিটি আমাদের সিদ্ধান্তের বিষয় না।’

শিক্ষার্থীরা জোর করে হলে ঢুকলে কর্তৃপক্ষ কী করবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি শিক্ষার্থীদের এমন অশিক্ষার্থী সুলভ আচরণ না করতে অনুরোধ জানাচ্ছি। যারা হামলা চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রাষ্ট্রীয় আইনে কী করণীয় সে বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করেছি।’

এ ঘটনায় কোনো মামলা করা হয়েছে কি না বা কাউকে আটক করা হয়েছে কি না? জানতে চাইলে প্রক্টর বলেন, ‘না, আলাপ-আলোচনা চলছে। হল বন্ধ থাকায় করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের বিভিন্ন বাসা ভাড়া নিয়ে অবস্থান করছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল রাতের ঘটনার পর সেসব জায়গা তাদের জন্য আরও বেশি অনিরাপদ হয়ে উঠেছে।’

আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘স্থানীয় প্রশাসন আমাদের নিশ্চিত করেছে যে, এখনও যারা সেখানে অবস্থান করছেন তাদের নিরাপত্তায় কোনো ধরনের সমস্যা হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে সামাজিকভাবে এই সমস্যা সমাধানে আমরা চেষ্টা করছি।’

এদিকে, হলের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকতে পারলেও হলে থাকা সম্ভব কি না? জানতে চাইলে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা হলে উঠে পরব। যদি আমাদের বের করে দেয় তাহলে পরবর্তী কোনো ব্যবস্থা নেব।’

আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘থাকা সম্ভব হোক বা না হোক আজ আমরা হলে উঠব।’