ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ও সাতটি ইউনিয়নের আইন শৃঙ্খলা রক্ষা ও মানুষের জান-মালের নিরাপত্তায় দীর্ঘ দিন ধরে ক্যাম্পাসের মধ্যে স্থাপিত ইবি থানার কার্যক্রম চলে আসছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৬ কিলোমিটার দুর্গম এলাকায় এই থানা স্থানান্তর প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দুপুর ৩ টায় সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি ড. রশিদুজ্জামানের সভাপতিত্বে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। আরো উপস্থিত ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা ও উপজেলা বাস্তবায়ন কমিটি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাধারণ শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন স্তরের সাংবাদিক কর্মীরা।
এ সময় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা ও উপজেলা বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যরা জানান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও এলাকার মানুষের মতামত না নিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের কিছু স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক ব্যক্তি মিথ্যা তথ্য দিয়ে এই থানাকে সরিয়ে ১৬ কিলোমিটার দূরে দুর্গম ঝাউদিয়ায় নেওয়ার অপচেষ্টা করছে। গত ২০২২ সালের ২৭ নভেম্বর নিকার কমিটির সভায় ঝাউদিয়াকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ও এলাকাবাসীর সম্মতিতে থানা স্থানান্তর করে এখানে পুলিশ ক্যাম্প প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়। সে সময় প্রকাশিত সংবাদ মাধ্যমে তৎকালীন ভিসি অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম স্পষ্ট করে জানিয়েছিলেন, এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে কিছুই জানানো হয়নি।
আলোচনা সভায় পূর্ববর্তী সরকারের এক তরফা সিদ্ধান্ত বাতিল করে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অত্র অঞ্চলের মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে কুষ্টিয়া-খুলনা প্রধান সড়ক সংলগ্ন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্নিকটে পছন্দমতো জায়গায় 'ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা' স্থাপন বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্রদানে অনুরোধও করেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী সিন্থিয়া ছোঁয়া আনিকা বলেন, আমরা চাই ইবি থানা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেই থাকুক, একান্ত সম্ভব না হলে পাশ্ববর্তী এলাকায় স্থানান্তর করা যেতে পারে কিন্তু ১৬ কিলোমিটার দূরে স্থানান্তরের প্রশ্ন ওঠেনা। আমরা এখানে পড়তে এসেছি সেক্ষেত্রে আমাদের নিরাপত্তার দিকও নিশ্চিত করতে হবে। আর এই নিরাপত্তা নিশ্চিতে অবশ্যই ইবি থানা বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, আমরা অবশ্যই চাই থানা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকুক। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষার্থীরা এখানে পড়তে আসছে, এবং তারা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ তাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব অবশ্যই আমাদের তাছাড়া আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনটি মেয়েদের হল এবং পাঁচটি ছেলেদের হল রয়েছে তাদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে অবশ্যই ইবি থানা স্থানান্তরের প্রশ্নই ওঠেনা।
সবশেষে তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা ও উপজেলা বাস্তবায়নের কমিটির সদস্যাদের আশ্বাস প্রদান করেন যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে থানা স্থানান্তর রোধে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবেন।