ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ইসকন সন্ত্রাসী কর্তৃক আইনজীবী শহীদ সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শিবির। জাতীয় সংহতি সপ্তাহ উপলক্ষে ফ্যাসিবাদ বিরোধী সকল ছাত্রসংগঠন এ বিক্ষোভ সমাবেশে শিবিরের ব্যানারে অংশ নেন জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়া, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন'সহ অন্যান্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকেল ৩ টার দিকে পূর্বঘোষিত সাপ্তাহিক সংহতি কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় হতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে ক্যাম্পাস সংলগ্ন শেখপাড়া বাজার-সহ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা।
এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক এস এম সুইট, ছাত্র শিবিরের সভাপতি এইচ এম আবু মুসা, সেক্রেটারি মাহমুদুল হাসান, জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়ার সাধারণ সম্পাদক মো. সাজ্জাতুল্লাহ শেখ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন রাহাত, ছাত্রদলের নেতাকর্মী'সহ অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় শিক্ষার্থীরা নারায়ে তাকবির আল্লাহ আকবার, আবু সাইদ মুগ্ধ শেষ হয়নি যুদ্ধ, আলিফ ভায়ের রক্ত বৃথা যেত দিব না, আমার ভায়ের রক্ত বৃথা যেতে দিবনা, ইস্কন জঙ্গি ফ্যাসিবাদের সঙ্গী, ইস্কন জঙ্গি সৈরাচারের সঙ্গী, হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই, ইস্কনের ঠাই নাই, ইস্কনের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না, সন্ত্রাসীদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না, জঙ্গিবাদের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না এমন স্লোগান দেন।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন রাহাত, ইসকন কোন ধর্মীয় সংগঠন নয়, যদি ধর্মীয় সংগঠন হয় তাহলে হিন্দু ভাইদের বলবো আপনারা মানুষ হত্যার ধর্ম চর্চা করেন কি না? যদি না করেন তাহলে ইসকন প্রীতি বাদ দিয়ে দেন।
জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়ার সাধারণ সম্পাদক মো. সাজ্জাতুল্লাহ শেখ বলেন, ইসকনের দালালরা আমার ভাই অলিফকে কিভাবে হত্যা করেছে। এইভাবে জাবাই করার নীতি শুধুমাত্র জঙ্গিদের হতে পারে। অতএব ইসকন জঙ্গি সংগঠন। ইসকন নিষিদ্ধের দাবি আপামার জনতার দাবি, শান্তি প্রিয় মানুষ দাবি, সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি।
ছাত্রশিবির ইবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান বলেন, আমরা যেখানে সকল ঐক্যমত হয়ে দেশ রক্ষার্থে এবং দেশের স্বাধীনতা রক্ষার্থে কাজ করে যাচ্ছি তখন তারা (স্বৈরাচার পতিত সরকার) ঐ ভারতীয় উগ্রবাদী সংগঠন ইসকনের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্তে মেতে ওঠেছে। তাদের চক্রান্ত গুটিয়ে দিতে ছাত্র সমাজ সর্বদা প্রস্তুত।
শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি এইচ এম আবু মুসা বলেন, স্বৈরাচারী তার শাসনামলে যেভাবে খুন করেছে, গুম করেছে, হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে এবং লাঠিয়াল বানিয়ে ছাত্রলীগ দিয়ে যেভাবে নির্যাতন করেছে তা বাংলাদেশের মানুষ কোনদিন ভুলে যাবে না। আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত এই আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা কোন বার কাউন্সিল, কোন সমিতির, কোন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। আমাদের হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিস্টান সম্প্রীতি সারা বিশ্বে উদাহরণ দেওয়ার মতো। আমরা মন্দির পাহাড়া দিয়েছি যাতে কেও না ভাঙ্গে আর আপনারা আমাদের মসজিদ ভেঙে চুরমার করে দিয়েছেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবি শাখার সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, পতিত স্বৈরাচার সরকারকে ভারতে আশ্রয় দিয়ে পুরো বাংলাদেশের ছাত্র জনতার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। স্বৈরাচার সরকার পতিত ৩ মাস হওয়ার পরেও ভারতীয় সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকনকে দিয়ে পুরো দেশে লেলিয়ে দিচ্ছে। যখন ছাত্র জনতা ৫ আগস্টের পরে সকল মতের, ধর্মের মানুষ ঐক্যের কথা বলেছি তখন তারা হত্যার মতো নজির দেখাচ্ছে। বাংলাদেশে জুলাই বিপ্লবে ছাত্রসেনা, ছাত্রদল, জমিয়তে তালাবা, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন এবং ছাত্রশিবির ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল। সামনে পিছনে তারাই ছিল এবং আন্দোলনের স্টকহোল্ডার ছিল ছাত্রশিবির। আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্লাটফর্ম সকল ছাত্র সংগঠনের সাথে সপ্তাহ সংহতি কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছি। যারা আমাদের ঐক্যের মধ্যে কোনো ধরনের সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করে তাদেরকেও পতিত সরকারের মতো দমন করব।