করোনা গবেষণায় সুপার কম্পিউটার


টাইমস ডেস্ক | Published: 2020-10-07 15:51:37 BdST | Updated: 2024-05-01 17:26:54 BdST

মার্কিন চিপ নির্মাতা এনভিডিয়া যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে শক্তিশালী সুপারকম্পিউটার তৈরি করছে। এ সুপারকম্পিউটারের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চিকিৎসা খাতের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে গবেষকদের সাহায্য করবে। এর বাইরে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত নানা সমস্যা সমাধানে এ সুপার কম্পিউটার কাজে লাগানো যাবে। গতকাল সোমবার এক প্রযুক্তি সম্মেলনে এনভিডিয়ার পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এনভিডিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, টিকা গবেষণার সঙ্গে যুক্ত গ্লাক্সোস্মিথক্লাইন ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা প্রথম দুই ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি হিসেবে সুপারকম্পিউটারের সাহায্য নেবে।

এনভিডিয়ার তৈরি সুপারকম্পিউটারটির নাম হবে ‘কেমব্রিজ-১’। এ বছরের শেষ দিকে এটি কেমব্রিজে চালু হবে। এতে এনভিডিয়া ডিজিএক্স সুপারপড সিস্টেম ব্যবহৃত হবে, যাতে ৪০০ পেটাফ্লপর এআই দক্ষতা দেখাতে পারবে।

সুপারকম্পিউটারের ক্ষমতা মাপার যে ইউনিট, সেই বিচারে এটির ক্ষমতা হচ্ছে প্রায় ৪০০ পেটাফ্লপ। কম্পিউটারের কাজ করার দক্ষতা নির্ণয়ের একক হচ্ছে ফ্লপস।
বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির সুপারকম্পিউটারের তালিকায় এর অবস্থান হবে ২৯তম।
গত মে মাসে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতিসম্পন্ন কম্পিউটারের তালিকায় শীর্ষে উঠে আসে ‘ফ্রন্টায়ার’। এটি তৈরি করছে মার্কিন সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানি অ্যাডভান্সড মাইক্রো ডিভাইসেস (এএমডি)। এ কাজে তাদের সহায়তা করছে ক্রে কম্পিউটিং।

তাদের তৈরি সুপার কম্পিউটারটি যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ‘ওক রিজ ন্যাশনাল ল্যাবরেটরিতে’ স্থাপন করা হবে। ২০২১ সাল নাগাদ এটি চালু হতে পারে।
ফ্রন্টায়ার নামের এ সুপারকম্পিউটার চালু হলে এটি হবে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী এক্সাস্কেল সুপারকম্পিউটার। এ কম্পিউটার থেকে প্রসেসিং ফলাফল পাওয়া যাবে ১ দশমিক ৫ এক্সাফ্লপ। ১ এক্সাফ্লপ হচ্ছে ১ পেটাফ্লপের চেয়ে হাজার গুণ দ্রুতগতির হিসাব করার ক্ষমতা। সুপার কম্পিউটারটি আধুনিক কম্পিউটারে নানা কাজ সম্পাদন করতে সক্ষম হবে। পারমাণবিক কাঠামোর গবেষণা, আবহাওয়া, বংশগতি, পদার্থবিদ্যাসহ বিজ্ঞানের নানা খাতে এর ব্যবহার হবে।

এএমডির দাবি, ফ্রন্টায়ারের যে পরিমাণ ক্ষমতা, তা এখনকার আধুনিক সুপার কম্পিউটারের চেয়ে ৫০ গুণ বেশি হবে। বিশ্বের এখনকার সবচেয়ে দ্রুতগতির ১৬০টি সুপার কম্পিউটার যে ক্ষমতার, ফ্রন্টায়ার একাই সে পরিমাণ শক্তিশালী হবে।

এতে যে নেটওয়ার্ক ব্যান্ডউইডথ থাকবে, তা বাড়িতে ব্যবহৃত ইন্টারনেট সংযোগের তুলনায় ২ কোটি ৪০ লাখ গুণ বেশি। অর্থাৎ সেকেন্ডে এক লাখ এইচডি রেজল্যুশনের মুভি ডাউনলোড করা যাবে।

এর আগে গত বছরের জুনে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ও উন্নত বৈজ্ঞানিক সুপার কম্পিউটার ‘সামিট’ উন্মুক্ত করে মার্কিন কম্পিউটার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আইবিএম ও চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনভিডিয়া। এ সুপার কম্পিউটার প্রতি সেকেন্ডে দুই লাখ ট্রিলিয়ন হিসাব সম্পন্ন করতে পারে।

আরেক সুপার কম্পিউটার টাইটানের চেয়ে এটি আট গুণ বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন। সামিটের আগে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী কম্পিউটার ছিল সানওয়ে তাইহু লাইট। এর সর্বোচ্চ পারফরম্যান্স ২০০ পেটাফ্লপস বা প্রতি সেকেন্ডে দুই লাখ ট্রিলিয়ন হিসাব করার ক্ষমতা।

রয়টার্স জানিয়েছে, কেমব্রিজে যুক্তরাজ্যের চিপ নির্মাতা এআরএমের কার্যক্রম রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি জাপানের সফট ব্যাংকের কাছ থেকে কিনে নিতে রাজি হয়েছে এনভিডিয়া।
এর আগে এনভিডিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, তারা কেমব্রিজে একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণাকেন্দ্র করবে, যাতে এআরএমভিত্তিক সুপারকম্পিউটার থাকবে। এখানে গবেষক, বিজ্ঞানী ও যুক্তরাজ্যের স্টার্টআপগুলো ব্যবহারের উপযোগী নানা ফিচার থাকবে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সেন্টারের পাশাপাশি কেমব্রিজ-১ নামের সুপারকম্পিউটারেও বিভিন্ন খাতের গবেষকেরা কাজ করতে পারবেন।

এনভিডিয়ার প্রধান নির্বাহী জেনসেন হং জিপিইউ টেকনোলজি কনফারেন্সে মূল বক্তব্য দেওয়ার সময় বলেন, সুপারকম্পিউটারটি যুক্তরাজ্যের উদ্ভাবনী হাব হিসেবে কাজে লাগবে। জটিল স্বাস্থ্যসেবা খাত ও ওষুধ আবিষ্কারে গবেষকেদের কাজে লাগবে।