জবি ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে ফের দৌড়ঝাঁপ শুরু


Dhaka | Published: 2020-09-04 18:01:47 BdST | Updated: 2024-05-02 00:37:28 BdST

সিনিয়র না জুনিয়র, ফরিদপুর না বরিশাল না উত্তরবঙ্গ কোন আঙ্গিকে হবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ছাত্রলীগের কমিটি এটাই এখন আলোচনার তুঙ্গে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি ভাঙ্গার দেড় বছরের বেশি সময় পরে কমিটি নিয়ে আবার দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে।

করোনাকালীনও পার্টি অফিস ও শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি হয়েছে। শোভন-রাব্বানীর ছাত্রলীগের অব্যাহতির পর পদপ্রত্যাশীদের শোভন-রাব্বানী বলয় ভেঙ্গে জয়-লেখক বলয় সৃষ্টি হয়েছে।

পদপ্রত্যাশীরা নতুন করে লবিং তদবির করতে পরিবর্তন করেছেন বড় ভাই। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বাগে আনতে ছাত্রলীগ সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের রাজনৈতিক বড় ভাই ঘনিষ্ঠ আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন। ছাত্রলীগের এই সুপার ইউনিটটির পূর্ণাঙ্গ কমিটিও হয় না দীর্ঘ ৬ বছর থেকে।

১৫ আগস্ট উপলক্ষে ছাত্রলীগের এক আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগসহ দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও ইউনিটের কমিটি সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেয়ার নির্দেশনা দেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে।

জানা যায়, ২০১২ সালের ৩ অক্টোবর এফএম শরীফুল ইসলামকে সভাপতি ও এস এম সিরাজুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে জবি ছাত্রলীগ কমিটি করা হয়। ২০১৩ সালের ৩০ জুলাই শরীফ-সিরাজ ১৯৩ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে। ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ প্রথম সম্মেলনের পর শরীফ-সিরাজ কমিটির বিলুপ্তি ঘটে। এর পরে দীর্ঘ ছয় মাস পরে ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর তরিকুল ইসলামকে সভাপতি ও শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেলকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তরিক-রাসেল কমিটি দেড় বছর অতিবাহিত করলেও পরে আর পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেনি। শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে দুইবার স্থগিতাদেশের পর গত ১৮ মার্চ আবার দুপক্ষের সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়। পরে ১৯ মার্চ তরিক-রাসেল কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

গত ২০ জুলাই বিশ^বিদ্যালয় বিজ্ঞান অনুষদ মাঠে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক আশরাফুল ইসলাম টিটনের সভাপতিত্বে শাখা ছাত্রলীগের দ্বিতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনের দিন সম্মেলন স্থলেই ছাত্রলীগ কর্মী এস এম ওয়াসী হিটস্ট্রোকে মারা যান। পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ তার পরিবারের খোঁজখবরও নেয়নি। এরপর সম্মেলনের দেড় মাস পরে গত ১৫ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেন। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতার বিদায়ের পরে শাখা ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে জটলার সৃষ্টি হয়। পরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য ছাত্রলীগের দায়িত্ব পান। গত ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব পান। তাদের পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব নেয়ার আট মাস পরও শাখা ছাত্রলীগের কমিটি দিতে পারেননি।

এদিকে শাখা ছাত্রলীগের দীর্ঘদিনেও কমিটি না হওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ কর্মীদের একাডেমিক পড়াশুনা শেষ হওয়ার পরও ছাত্রলীগে নিজেদের পরিচয় না পেয়ে রাজনীতি থেকে বিদায় নিচ্ছেন। ক্যাম্পাসের জুনিয়র কর্মীরা সিনিয়রদের পদবঞ্চিতের চিত্র দেখে রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। শীর্ষপদ প্রত্যাশীরা ছাত্রলীগ ও সরকারী চাকরির বয়সের শেষের দিকে এসে নিজেদের ক্যারিয়ার নিয়ে দোলাচলে আছেন।

পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের পদে এগিয়ে আছেন জবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আশরাফুল ইসলাম টিটন, জামাল উদ্দিন, আব্দুলস্নাহ শাহীন, সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার হোসাইন, ইব্রাহীম ফরাজি, সৈয়দ শাকিল, মো. নুরুল আফসার, উপ-মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক নাহিদ পারভেজ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তারেক আজিজ, মশিউর রহমান লিজন প্রমুখ।