‘চীনা অস্ত্র থাকলে ইরানের এত ক্ষয়ক্ষতি হতো না’


ডেস্ক নিউজ | Published: 2025-06-18 21:42:43 BdST | Updated: 2025-07-12 06:27:49 BdST

চীনের কাছ থেকে অস্ত্র না কিনে বড় ভুল করেছে ইরান—এমন দাবি করছেন চীনা সমরবিদেরা। তাঁদের ভাষ্য, ইরান যদি রাশিয়ার বদলে চীনের অস্ত্র ব্যবহার করত, তাহলে এত ক্ষয়ক্ষতি হতো না, এমনকি ইরানের আকাশও নিয়ন্ত্রণে নিতে পারত না ইসরায়েল। মার্কিন সাপ্তাহিক নিউজ উইক এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে। অবশ্য অনেকে বলছেন, নিজেদের অস্ত্রশক্তির প্রচার এবং বাজার সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যেই এমন মন্তব্য করছেন চীনারা।

চীনা জাতীয়তাবাদী পত্রিকা গ্লোবাল টাইমসের সাবেক প্রধান সম্পাদক হু শিজিন সম্প্রতি চীনা সামাজিক মাধ্যম উইবোতে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘ইরানের কাছে যদি কয়েক ডজন জে-১০ যুদ্ধবিমান, হংচি সিরিজের আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র আর পাকিস্তানের মতো আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা থাকত, তাহলে ইসরায়েল এত সহজে আঘাত হানতে পারত না।’ অবশ্য কিছুক্ষণ পরই পোস্টটি ডিলিট করেন তিনি।

নিউজ উইকের তথ্যমতে, চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল সিসিটিভিতে প্রচারিত এক অনুষ্ঠানে বলা হয়, ইরানে ইসরায়েলের হামলার পর পাকিস্তান, মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক, আলজেরিয়াসহ বহু মুসলিম দেশের নাগরিকেরা তাঁদের সরকারকে চীনের জে-৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার আহ্বান জানিয়েছেন।

চীনা বিশ্লেষকেরা বলছেন, ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিক লড়াইয়ে বড় সাফল্য দেখিয়েছে চীনা যুদ্ধবিমান ও প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। মূলত এরপরই চীনা অস্ত্রশস্ত্রের দিকে বিভিন্ন দেশের ঝোঁক বাড়ছে। এ ছাড়া চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় দুর্বলতা প্রকাশের পর ইরানও এখন চীনা আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার দিকে ঝুঁকতে পারে বলে মত অনেকের। তাঁদের ভাষ্য, শুধু ইরান নয়, মধ্যপ্রাচ্যের আরও অনেক দেশই চীনের সামরিক প্রযুক্তির দিকে আগ্রহী হয়ে উঠতে পারে; বিশেষ করে যারা মার্কিন অস্ত্র কিনতে পারে না বা চায় না, সেসব দেশের বাজার ধরার বড় সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে চীনের জন্য।

চীনের সমর বিশারদদের দাবি, যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও আকাশ প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিতে চীন অনেক দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। খুব শিগগির রাশিয়াকে ছাড়িয়ে যেতে পারবে বলে আত্মবিশ্বাসী তারা।

জরিপ বলছে, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর চীনা বিমান প্রস্তুতকারক কোম্পানি অ্যাভিক শেনইয়াংয়ের শেয়ারদর বেড়েছে ১০ শতাংশের বেশি। আন্তর্জাতিক কৌশলগত গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইআইএসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনা অস্ত্র রপ্তানির বড় অংশ যাচ্ছে পাকিস্তান, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে। ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে চীনের অস্ত্র রপ্তানির ৭৭ শতাংশ গেছে এশিয়া ও ওশেনিয়া অঞ্চলে, আর ৬৩ শতাংশ শুধু পাকিস্তানে।

তবে স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট মার্চ মাসের এক প্রতিবেদনে বলেছে, রাজনৈতিক কারণে অনেক দেশ এখনো চীনের তৈরি বড় অস্ত্র কিনতে চায় না।