
কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলাকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার তীব্র উত্তেজনার মধ্যে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির সামরিক বাহিনীর দাবি, আজ শনিবার ৪৫০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম একটি ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করা হয়েছে।
পাকিস্তানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ‘ইন্ডাস’ নামের সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবে এই পরীক্ষাটি চালানো হয়। উৎক্ষেপণ করা ক্ষেপণাস্ত্রটি ‘আবদালি অস্ত্র ব্যবস্থা’ বা এডব্লিউএস–এর অংশ। ইসলামাবাদ বলছে, সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি যাচাই এবং উন্নত নেভিগেশনসহ প্রযুক্তিগত সক্ষমতা পরীক্ষাই ছিল এই উৎক্ষেপণের উদ্দেশ্য।
এই পরীক্ষার সময়টা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল। কারণ এর কয়েক দিন আগেই কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ হামলায় ২৫ ভারতীয় এবং একজন নেপালি নিহত হন। এরপর থেকেই দুই দেশের সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা বেড়েছে এবং প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখাসহ আন্তর্জাতিক সীমান্তে অস্ত্রবিরতির নিয়ম ভেঙে চলছে পাল্টাপাল্টি গুলি বিনিময়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, পাকিস্তানের এই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণকে ‘উসকানিমূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে দেখতে পারে ভারত। হামলার পর ভারত কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু নদ-সংক্রান্ত পানিবণ্টন চুক্তি বাতিল করেছে, পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল এবং দেশত্যাগের নির্দেশও দিয়েছে। পাল্টা জবাবে পাকিস্তানও ‘সিমলা চুক্তি’ বাতিল করেছে।
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার দাবি করেছিলেন, ভারত ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে হামলা চালাতে পারে। যদিও তার বক্তব্যের ৭২ ঘণ্টা পার হলেও তেমন কিছু ঘটেনি। এর আগেই পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীও ভারতের সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন।
কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তান বহুদিন ধরেই বিরোধে জড়ানো। এই অঞ্চল নিয়ে দুই দেশ দুইবার যুদ্ধে জড়ায়। ভারত বরাবরই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে, তারা কাশ্মিরে স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন দেয়।
সাম্প্রতিক উত্তেজনার জেরে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কও এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। ভারত পাকিস্তান থেকে সব পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করেছে এবং পাকিস্তানি পতাকাবাহী জাহাজকে নিজেদের জলসীমায় ঢুকতে দিচ্ছে না।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি ও জিও নিউজ