ঢাবিকে ভিন্ন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় নবনিযুক্ত উপাচার্যের


Desk report | Published: 2023-11-04 22:57:39 BdST | Updated: 2024-05-04 08:00:19 BdST

দেশ ও মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালকে বিশ্ব শিক্ষা মানচিত্রে এক ভিন্ন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নব নিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এস. এম. মাকসুদ কামাল। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাত, উন্নত দেশগুলোর মতো ফান্ডেড স্কলারশিপ প্রোগ্রাম, টিচিং ইভালুয়েশনসহ সৃজনশীল কাজের প্রতি গুরুত্ব দেওয়ার কথা জানান তিনি।

শনিবার (৪ নভেম্বর) উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে উপাচার্য হিসেবে শুভেচ্ছা বক্তব্যকালে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কার্যালয়ে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ অখাতারুজ্জামান, প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ এবং ট্রেজারার অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদের উপস্থিতিতে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।

উপাচার্য হিসেবে প্রথম ভাষণে তিনি বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। এই অঞ্চলের মানুষ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে তাকিয়ে থাকে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতি আমাকে উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করেছেন। তাদের প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। গত বুধবার প্রধান আমাকে ডেকেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে কিভাবে কাজ করতে হবে সে ব্যাপারে তিনি আমাকে পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় হলো আমার বিশ্ববিদ্যালয়। আমি চাই, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান যেন বিশ্বশিক্ষা মানচিত্রে ভিন্ন উচ্চতায় থাকে। সেজন্য যে সহযোগিতা দরকার সবধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন। তার দৃষ্টি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি, যেন এই বিশ্ববিদ্যালয় মানুষের মনে জায়গা করে নিতে পারে। এজন্য তিনি আমাদের সকলকে দলগতভাবে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ প্রসঙ্গে ঢাবি উপাচার্য মাকসুদ কামাল বলেন, ‘আমরা সৃজনশীল কাজ করার চেষ্টা করব। আমরা দেখেছি, এশিয়া মহাদেশে ইনোভেশনের ক্ষেত্রে আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনেক পেছনে রয়েছে। আপনারা জানেন যে, টাইমস হায়ার এডুকেশন তাদের মূল্যায়ন পদ্ধতি পরিবর্তন করেছে। তাদের এই মূল্যায়নের ক্ষেত্রে রিসার্চ এনভায়রনমেন্ট এবং রিসার্চ কোয়ালিটির উপর ৬০ মার্ক। অনেক গবেষণার কাজ হয় কিন্তু সেটা মানসম্মত হয় না। সুতরাং গবেষণার সংখ্যার চেয়ে গবেষণার মান কেমন এবং সমাজে সেটির ইম্প্যাক্ট কি, সেটাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই দেশের সর্বোচ্চ এবং সর্ববৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এখানে আমরা যারা দায়িত্বে আছি আমাদের সকলকে নিয়েই এই বিশ্ববিদ্যালয়। কেউ যদি উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তার কাছে নীতিগত সিদ্ধান্তের ব্যাপারগুলো আসে। কিন্তু, মূল বিষয়টি হলো এই নলেজগুলো তৈরি করা। সামনের দিনগুলোতে আমাদের অনেক কাজ করার আছে।’

নতুন উপাচার্য আরও বলেন, ‘মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে আমরা ইতোমধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি বিশেষ জায়গায় নিয়ে এসেছি। এর আগে, আমি প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে তার সাথে কাজ করেছি। আমি উনার প্রতি ভীষণ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এজন্য যে, যেখানে প্রয়োজন ছিল সেখানেই তিনি সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে ইমপ্লিমেন্টেশন প্রক্রিয়াটা বাধা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। যেমন- "টিচিং ইভালুয়েশন"। এটার সুন্দর একটি ডকুমেন্টেশন আমরা করেছি। কিন্তু এর বাস্তবায়ন এখনও আমরা করতে পারিনি এটি বাস্তবায়ন হলে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যকার যে ইন্টারেকশন বা বন্ডিং সেটা জোরদার হবে। যখন শিক্ষার্থীরা একজন শিক্ষককে মূল্যায়ন করবেন তখন তিনি সতর্ক হওয়ার চেষ্টা করবেন এবং তিনি মনে করবেন যে, তার মধ্যে কোন মিসিং না থাকে। এই জিনিসটা আমরা বাস্তবায়ন করব। এর বাইরে উন্নত দেশগুলোর মতো ফান্ডেড স্কলারশিপ প্রোগ্রামের কাজ করব। সেটির একটি নীতিমালাও তৈরি করা হয়েছে। এরকম অনেক কাজ আমাদের হাতে রয়েছে।’

অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক এবং শিক্ষাসহ বিভিন্ন দায়িত্বেই ছিলাম। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সকলের পরামর্শক্রমে যেন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করি সেই পরামর্শ প্রধানমন্ত্রী আমাকে দিয়েছেন। আমি যতদিন আপনাদের সাথে থাকি ততদিন আমার অভিজ্ঞতার আলোকে আপনাদের সাথে দলগতভাবে কাজ করব। ইতিপূর্বে অনেক বিষয়কে আমরা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পেরেছি, আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে গ্যাপও রয়েছে। সেই জায়গাগুলোতে আমরা সকলেই মিলেমিশে কাজ করব।’