সন্তানসহ গায়ে হলুদে আলিসা-শুভ দম্পতি


Desk report | Published: 2022-03-11 03:10:12 BdST | Updated: 2024-04-27 08:52:43 BdST

আড়ম্বর আয়োজনে জার্মান নাগরিক আলিসা থিওডোরা পিত্তা আর বরিশালের সন্তান রাকিব হাসান শুভর বিয়ের দুই বছর পর গায়ে হলুদ সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বুধবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যায় সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের উলালবাটনা গ্রামে শুভর বাড়িতে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এতে আলিসা ও শুভর ছয় মাস বয়সী সন্তানও যোগ দেয়। ছেলের বিয়েতে নেচে বাড়তি আনন্দের জোগান দেন চরবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম। অনুষ্ঠান চলে গভীর রাত পর্যন্ত। আয়োজন ছিল উন্মুক্ত কনসার্টেরও।

স্থানীয়রা বলছেন, আলিসা-শুভর গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান মনে রাখার মতো হয়েছে।

বাংলাদেশি বিয়ের সংস্কৃতি দেখে যথারীতি মুগ্ধ হয়েছেন আলিসা থিওডোরা পিত্তা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের সংস্কৃতি, মানুষের সহযোগিতার মনোভাব, বাঙালি পোশাক, খাবার খুবই পছন্দ হয়েছে। আমি অনেক খুশি হয়েছি আমার হাতে মেহেদি দেওয়া খুবই ভালো লেগেছে।

আলিসা আরও বলেন, ইসলাম ধর্মকে আমি সম্মান করি এবং আমার কাছে ইসলাম ধর্ম ভালো লাগে।

আলিসার বান্ধবী লেইসা বলেন, আলিসার সঙ্গে বাংলাদেশ ভ্রমণ আমার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আমি বাংলাদেশের গল্প জার্মানিতে আমার আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের কাছে বলব। বাংলাদেশের আবহাওয়া খুবই চমৎকার। এখানে যে কোনো সময়ে বাইরে যাওয়া যায়। মানুষজন খুবই বন্ধুভাবাপন্ন।

রাকিব হাসান শুভ বলেন, আমি একার সিদ্ধান্তে বাংলাদেশে আসিনি। দেশে আসার আগে দুজনে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি পরিবারের সদস্যদের দেখার জন্য দেশে আসা উচিত। ওর (আলিসা) পরিবার থেকেও আসার সম্মতি দিয়েছে। তারপর আমরা দেশে এসেছি।

বাংলাদেশে স্থায়ী হওয়ার পরিকল্পনা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, যেহেতু আমাদের দুজনের কর্মস্থল জার্মানিতে, এজন্য হয়তো বছরে দুই-একবার বাংলাদেশে আসার আসার পরিকল্পনা আছে। জার্মানিতে অবস্থানকালে আমার ছেলের সঙ্গে সব সময়ে বাংলায় কথা বলি। চেষ্টা করি ছেলেকে বাংলায় কথা শেখানোর।

শুভর বাবা শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার আব্বা যখন বেঁচে ছিলেন, তখন তিনি নাতির (শুভ) সঙ্গে দুষ্টুমি করতেন, ‘দাদু তুমি একজন বিদেশি বউ বিয়ে করবে।’ আব্বার সেই কথা আজ অক্ষরে অক্ষরে কার্যকর হয়ে গেল। শুভর বিয়ে পারিবারিকভাবেই হয়েছে। আমি তাকে শর্ত দিয়েছিলাম যদি শুভ জার্মানে বিয়ে করে তাহলে খোদ জামার্নি মেয়েকে বিয়ে করতে হবে। আর তার মা (শহিদুল ইসলামের স্ত্রী) বলেছিল, বিয়ে করলে মেয়েকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করাতে হবে। এখন সেটিই হয়েছে। আমি এর আগে জার্মানে গিয়েছিলাম। তখন আমার ছেলের শাশুড়ি আস্ত খাসি জবাই করিয়ে খাইয়েছে। সকালে ৬০ প্রকারের নাশতা করিয়েছে এবং পাঁচটি দেশ ভ্রমণ করিয়েছে আমার পুত্রবধূ। পাঁচ তারকা হেটেলে আমাকে রেখেছে। আমি এমন একজন পুত্রবধূ পেয়ে খুব খুশি।

রাকিব হাসান শুভর মা বলেন, বিদেশি পুত্রবধূ পেয়ে আমি খুব খুশি হয়েছি। সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছি একজন খিস্ট্রান মেয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৫ মার্চ আলিসা থিওডোর পিত্তা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে রাকিব হাসান শুভর সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। দুজনের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পকের সূত্র ধরে পরিচয় হলেও বিয়ে হয় পারিবারিক সিদ্ধান্তে। করোনার কারণে দুই বছর দেশে ফিরতে না পারলেও চলতি বছরের ৪ মার্চ দেশে ফেরেন শুভ-আলিসা দম্পতি। তাদের ৬ মাসের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। আলিসার সঙ্গে দেশে এসেছেন তার বান্ধবী লেইসা। ১১ মার্চ এই দম্পতির বিবাহোত্তর সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে।