'মানুষের সেবা করার ইচ্ছে ছিলো তাই অধৈর্য্য হইনি'


Dhaka | Published: 2020-06-01 01:07:48 BdST | Updated: 2024-05-05 00:41:09 BdST

নিরুপম মজুমদার। ৩৭ তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে উত্তীর্ণ হয়ে বর্তমানে তিনি সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কর্মরত আছেন। করোনা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন সম্মুখ যোদ্ধার ভূমিকায়। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি।

পরিবার থাকেন নোয়াখালীতে । ডিউটি শেষে যতটুকু সময় পান বাবা-মায়ের খোজ খবর নেন টেলিফোনের মাধ্যমে। তিনি বলেন, করোনা সবার উপর অদৃশ্য একটা চাপ সৃষ্টি করেছে। অচেনা এবং অদৃশ্য শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে আমাদের প্রশাসনের অনেকেই আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের দেখে অনুপ্রেরণা পেয়েছি। কখনো পিছিয়ে যাওয়ার কথা মাথায় আসেনি। যেহেতু আগে থেকেই মানুষের পাশে দাঁড়ানোর, মানুষের সেবা করার ইচ্ছে ছিলো তাই অধৈর্য্য হই নি।

করোনা কালীন দায়িত্বপালন চ্যালেঞ্জিং মনে করে বলেন 'স্বাভাবিক সময়ে দায়িত্ব পালন থেকে সম্পূর্ণ আলাদা অভিজ্ঞতায় ভরপুর করোনা কালীন সময়টা। শুরুতেই আমরা লোকজনকে ঘরে রাখতে তাদের কাছে গিয়ে গিয়ে বুঝাতাম। মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে খুব খাটতে হয়েছে। লকডাউন কার্যকর করতে রেগুলার মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিং, টিসিবির পণ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার মতো কাজ করতে হয়েছে। এগুলো যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং ছিলো। এবং নিজে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা যে ছিলো না তা নয়, বরং তা সত্ত্বেও চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করার দৃঢ় মনোবল সব সময় ছিলো।'

করোনাকালীন দায়িত্বপালনের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলেন 'স্বল্প সময়ে বেশ কিছু অভিজ্ঞিতা অর্জন করা হলো। প্রতিটা মানুষ যেন এক একটা গল্প। ভালো খারাপ মিলিয়ে বিভিন্ন ধরনের ঘটনার সম্মুখীন হয়েছি। এর মধ্যে টিবিসির পণ্য বিক্রয়ে অনিয়ম করতে দেখা যায়। দোষী ব্যক্তিকে শাস্তির আওতায় আনাটা একটা অভিজ্ঞতা।তাছাড়া ত্রাণ দিতে গিয়ে মানুষজনের আবেগ দেখে আবেগাক্রান্ত হয়েছি। মানুষের মুখের হাসি অমূল্য। আবার বহুজনকে পেয়েছি বিনা প্রয়োজনে বাইরে ঘোরাঘুরি করে। এছাড়া বাজার মনিটরিং করতে গিয়ে বুঝলাম দুর্যোগকালীন সময়েও কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী পণ্যের অধিক দাম রাখে। দুর্যোগের মধ্যেও লোভে পড়ে নিত্যপণ্যের অযথা দাম বাড়ানো দেখে হতবাক হয়েছি।'

প্রশাসন জনগণের পাশে ছিলো, আছে, থাকবে। তাদের যে কোন সেবায় প্রশাসন নিবেদিত। তবে তাদেরকেও সাহায্য করতে হবে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে এবং যতটা সম্ভব ঘরে থাকতে হবে, অপ্রয়োজনে বাইরে ঘুরাঘুরি করা একদম ঠিক হবে না। আগে জীবন বাঁচুক, পৃথিবী সুস্থ হোক সব করা যাবে। এবং, আর একটা বিষয় জনতাকে সহনশীল হতে হবে, ভেঙে পড়া যাবে না- যোগ করেন তিনি।

হাসিব আল আমিন
নোবিপ্রবি প্রতিনিধি