'মানুষের ভালবাসায় ঝুঁকি নেওয়ার সাহস পাই'


Dhaka | Published: 2020-06-03 01:26:52 BdST | Updated: 2024-05-04 18:34:31 BdST

ফারহানুর রহমান। ৩৬ তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে উত্তীর্ণ হয়ে বর্তমানে তিনি সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে পিরোজপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কর্মরত আছেন। করোনা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন সম্মুখ যোদ্ধার ভূমিকায়। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ফার্মাসি বিভাগের ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি।

বাবা -মা থাকেন নোয়াখালীতে, নিজে থাকেন পিরোজপুরে। ডিউটি শেষে যতটুকু সময় পান বাবা-মায়ের খোজ খবর নেন টেলিফোনের মাধ্যমে।
তিনি বলেন, প্রত্যেক বাবা-মাই তার সন্তানকে নিয়ে চিন্তায় থাকেন। বর্তমান পরিস্থিতিতিতে সেটা আরও বেশি। তবে অভিভাবকরাও আমাদেরকে দেশের জন্য স্যাক্রিফাইস করছেন দেশের মানুষের সেবা করার জন্য।

তিনি জানান, মানুষকে সচেতন করতে যাই। মনে হয় তারা চোর-পুলিশ খেলেন। একটা শ্রেণি আছে যারা প্রয়োজনে বের হন। আবার অনেকেই আছে আড্ডা দিতে রাস্তা-ঘাটে বেরিয়ে পড়ছেন। এটাও সত্য বেশিরভাগ মানুষ আসলে জীবিকার তাগিদে বের হয়ে পড়ছেন। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সচেতনতার বিকল্প নেই।

করোনা কালীন পেশাগত দায়িত্বপালন চ্যালেঞ্জিং মনে করে বলেন ' শুরুতেই আমরা লোকজনকে ঘরে রাখতে তাদের কাছে গিয়ে গিয়ে বুঝাতাম। মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে খুব খাটতে হয়েছে। লকডাউন কার্যকর করতে রেগুলার মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিং, টিসিবির পণ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার মতো কাজ করতে হয়েছে। এগুলো যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং ছিলো। এবং নিজে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা যে ছিলো না তা নয়, বরং তা সত্ত্বেও চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করার দৃঢ় মনোবল সব সময় ছিলো।'

করোনাকালীন দায়িত্বপালনের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলেন 'ভিন্ন এক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। প্রতিটা মানুষ যেন এক একটা গল্প। ভালো খারাপ মিলিয়ে বিভিন্ন ধরনের ঘটনার সম্মুখীন হয়েছি। এর মধ্যে টিবিসির পণ্য বিক্রয়ে অনিয়ম করতে দেখা যায়। দোষী ব্যক্তিকে শাস্তির আওতায় আনাটা একটা অভিজ্ঞতা।তাছাড়া ত্রাণ দিতে গিয়ে মানুষজনের আবেগ দেখে আবেগাক্রান্ত হয়েছি। মানুষের মুখের হাসি অমূল্য। আবার বহুজনকে পেয়েছি বিনা প্রয়োজনে বাইরে ঘোরাঘুরি করে। এছাড়া বাজার মনিটরিং করতে গিয়ে বুঝলাম দুর্যোগকালীন সময়েও কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী পণ্যের অধিক দাম রাখে। দুর্যোগের মধ্যেও লোভে পড়ে নিত্যপণ্যের অযথা দাম বাড়ানো দেখে হতবাক হয়েছি।'

সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে এবং যতটা সম্ভব ঘরে থাকতে হবে, অপ্রয়োজনে বাইরে ঘুরাঘুরি করা একদম ঠিক হবে না। আগে জীবন বাঁচুক, পৃথিবী সুস্থ হোক সব করা যাবে। অসহায় মানুষের পাশে থেকে সর্বাত্মক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেই। আমাদের মাতৃভুমিকে রক্ষা করি— যোগ করেন তিনি।

হাসিব আল আমিন
নোবিপ্রবি প্রতিনিধি