যে ৭টি কারণে ভর্তি হতে পারো নটরডেম কলেজে


Dhaka | Published: 2020-06-03 03:33:23 BdST | Updated: 2024-05-04 12:44:23 BdST

নটরডেম কলেজে ২০২০-২১ শিক্ষা বর্ষে ভর্তি বিগ্গপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। যে ৭টি কারণে ভর্তি হতে পারো নটরডেম কলেজে...

১। ক্যাম্পাস (যা কিনা তোমার প্রেয়সীকে দেবে শক্ত প্রতিযোগিতা!):

আমার মনে আছে, আমি যখন নটরডেম কলেজে ভর্তি পরীক্ষা দিতে যাচ্ছি, কেউ একজন আমাকে বলেছিল, ” মতিঝিল এলাকায় সব বড় বড় বিল্ডিং। ওখানে সবচাইতে নিরিবিলি আর সুন্দর জায়গাটা হচ্ছে নটরডেম কলেজ! বিশ্বাস হয় না? আমিও করিনি। ঢাকা শহরে এরকম জায়গা কোথা থেকে আসবে, এরকম চিন্তা আমার মধ্যেও এসেছিল। কিন্তু আমার এ ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়ে যায়! এবার তোমাদের পালা।

২। মহান ও দেশসেরা শিক্ষক:
গল্প-উপন্যাসে হয়তো পড়েছ যে শিক্ষকেরা কখনো কখনো শুধু শিক্ষকতা ছাড়িয়েও অনেক ঊর্ধ্বে অবস্থান নেন। বর্তমান যুগে যদি এরকম মহান ব্যক্তিদের কাছ থেকে দীক্ষা নিতে চাও, তবে নটরডেম কলেজে চলে এসো। তুমি হয়তো নতুন একটা জগতের সন্ধান পাবে এই শিক্ষকদের কাছে পেয়ে। যাঁদের প্রতিটা কথা, ক্লাসে আছে অন্যরকম এক মাদকতা। এটা তো গেল আত্মিক বা মানসিক দিকটা। সারাদেশের ছাত্র-ছাত্রীরা যেসব শিক্ষকদের বই পড়ে, তুমি পাচ্ছ তাঁদের সামনে বসে ক্লাস করার সুযোগ! এ সুযোগ হেলাফেলার?!

৩। দেশব্যাপী বন্ধুত্বের নেটওয়ার্ক(!):
নটরডেম কলেজের সবচেয়ে মজার আর আকর্ষণীয় ব্যাপারটা হচ্ছে প্রতিটা গ্রুপে দেশের প্রায় সব জেলার ছেলে থাকে। তাই তোমাদের জন্য থাকছে দেশের ৬৫ জেলায় বন্ধু বানানোর এক সুবর্ণ সুযোগ! (আর একটা সুযোগ অবশ্য পাবে। তা হচ্ছে এই দু’বছরে বহুভাষাবিদ হয়ে যাওয়ার সুযোগ!)

৪। কিছু Nerdy ফ্যাক্ট(!):
নটরডেম কলেজ কিছু দিকে অনন্য। একটা মজার কথাই বলে ফেলি। জীবনে যদি কখনো আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভোগো(!), নটরডেম তোমাকে দেবে একটা স্বকীয় রোল নাম্বার। যে রোল কলেজের ইতিহাসে আর কারো হবে না, সেটা শুধু তোমার! এখানে অসীম সংখ্যক পরীক্ষার পেরেশানি নেই। বরং সুবিন্যস্তভাবে একটা রুটিনে প্রতি সপ্তাহে দু’টি কুইজ হয়।

যদি এই স্রোতের সাথে চলা হয়, তাহলে তোমার প্রস্তুতি হয়ে যায় একদম পার্ফেক্ট। আর নটরডেম কলেজে সবচেয়ে ‘মজার’ অভিজ্ঞতা দেবে ল্যাবগুলো! কলেজে উপস্থিতি আর ল্যাবওয়ার্কের ওপর নটরডেম কলেজ সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়, যেটা দেশের আর কোনো কলেজে করা হয় না। আর ক্লাসের বোরিং থিওরি লেকচারের চেয়ে হাতে কলমে শেখা আনন্দের নয় কি? ( অবশ্য নটরডেম কলেজে বোরিং ক্লাস বলে কিছু নেই। প্রতিটা ক্লাসই থাকে প্রাণ প্রাচুর্যে ভরা)

নার্ডি কথাবার্তা শুনে আঁতকে উঠছ? ভয় হচ্ছে? ল্যাব, কুইজ, ক্লাসের এই চক্রকে ফাঁদ ভাবছ? বিশ্বাস করো, কলেজে ভর্তি হলে তা আর মনে হবে না! কারণ তোমাদের জন্য কলেজে আছে একটা বিশাল সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল।

৫। ছড়িয়ে দাও নিজের প্রতিভা:
নটরডেম কলেজে আছে ১৯ টি ক্লাব। বাংলাদেশে তো বটেই উপমহাদেশেই প্রথম, এমন নজিরও আছে কিছু ক্লাবের। প্রতিটা ক্লাবের আছে নিজস্ব প্রকাশনা আর ইভেন্ট। তোমাদের প্রতিভার প্রকাশ ও প্রচারের একটা বড় প্লাটফর্ম দেবে এই ক্লাবগুলো।

৬। বর্ণিল নটরডেম:
প্রতিবছর ক্লাবগুলোর আয়োজনে সায়েন্স ফেস্ট, ইংলিশ ফেস্ট, নেচার ফেস্ট, ডিবেট ক্লাব, আবৃত্তিদল, নাট্যদলের অসাধারণ ও বিশাল কিছু ইভেন্টে কলেজ থাকবে সরগম, বর্ণিল আর তোমরাও পাবে অসাধারণ কিছু স্মৃতি।

৭। অনুপ্রেরণার ভাণ্ডার:
ড. কামাল হোসেন, ড. আইনুন নিশাত, শাইখ সিরাজ, ইয়াফেস ওসমান, মাননীয় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু থেকে সংস্কৃতি অঙ্গনের প্রয়াত চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ, চ্যানেল আই বা ইম্প্রেস টেলিফিল্মের ফরিদুর রেজা সাগর, আজাদ আবুল কালাম কিংবা হালের প্রখ্যাত তাহসান খান, বাপ্পা মজুমদার, শিরোনামহীনের জিয়াউর রহমান, অথবা প্রথম এভারেস্টজয়ী বাংলাদেশী মুসা ইব্রাহীম। প্রত্যেকে “নটরডেমিয়ান”.

দেশের প্রখ্যাত ভার্সিটিগুলোর ভর্তি পরীক্ষার মেধাতালিকায়ই শুধু নটরডেম কলেজের ছাত্রদের বিচরণ নয়(!), বরং রাজনীতি, বিজ্ঞান, শিক্ষাক্ষেত্র থেকে সংস্কৃতি, প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাঁদের সদর্প বিচরণ। এই লেগাসির অংশ হতে নিশ্চয়ই তোমাদের খারাপ লাগার কথা নয়!

আমাদের বাংলাদেশে, বিশাল প্রাতিষ্ঠানিক একটা শিক্ষাজীবনে খুব সামান্য একটা সময় বরাদ্দ থাকে “কলেজ লাইফ” হিসেবে। কিন্তু এই সামান্য সময়টাকে যদি সারাজীবনের পুঁজি করতে চাও, নটরডেম কলেজে চলে আসার চেষ্টা করো। কলেজ থেকে পাশ করে নামের শুরুতে “এক্স” টার্মটা যুক্ত হবে না। বরং নটরডেম কলেজের প্রতিটি ছাত্রের থাকে একটা স্বতন্ত্র্য পরিচয়, তারা প্রত্যেকে একেকজন “নটরডেমিয়ান”!

সূত্র: রবি টেন মিনিট স্কুল