চীনে বিদেশিদের শিক্ষকতার সুযোগ


Dhaka | Published: 2020-08-12 19:36:15 BdST | Updated: 2024-04-30 22:56:25 BdST

বিদেশি শিক্ষকদের জন্য চীনে শিক্ষকতার অনেক সুযোগ রয়েছে। মোটা দাগে আমরা সেটাকে দুই ভাগ করতে পারি। ইংরেজিসহ বিভিন্ন বিদেশি ভাষার শিক্ষক এবং বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক। কিন্ডারগার্টেন থেকে শুরু করে প্রাক্‌-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও ইংরেজি শিক্ষাসহ অন্যান্য ভাষাভাষীর শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। সাধারণত এসব শিক্ষক চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক হিসেবে কাজ করে থাকেন। তাঁদের চুক্তির মেয়াদ সাধারণত এক বছর।

তাঁদের বেতন এক হাজার থেকে দেড় হাজার ডলারের মধ্যে হয়, সঙ্গে ফ্রি আবাসন। প্রতিটি সেমিস্টার চার থেকে পাঁচ মাসের হয় এবং তাঁরা প্রতি সপ্তাহে ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টা ক্লাস নেন। সেমিস্টার শেষে শীতকালীন ছুটি এক মাসের মতো আর গ্রীষ্মকালীন ছুটি দেড় থেকে দুই মাসের হয়ে থাকে। ছুটির সময়ে বেতন পাওয়া যায় যদি পরবর্তী সেমিস্টারে চাকরি অব্যাহত থাকে।

অন্যদিকে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকদের সাধারণত কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে অথবা দুটি বিষয় নিয়ে শিক্ষকতা করেন। তাঁদের আবার দুটো ক্যাটাগরি আছে—একটি স্বল্পমেয়াদি আরেকটি দীর্ঘমেয়াদি। স্বল্পমেয়াদি চুক্তিভিত্তিক বিদেশি শিক্ষকেরা সাধারণত সপ্তাহে ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা শিক্ষকতা করেন। এক. দুই বছর মেয়াদি, তাঁদের বেতনও ১০০০ থেকে ২০০০ ডলারের মধ্যে।

গবেষণার জন্য তাঁদের তেমন চাপ থাকে না। কিছু কিছু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজগুলোতেও বাংলাদেশি পাকিস্তানিসহ কিছু কিছু বিদেশি চুক্তিভিত্তিক শিক্ষককে দেখা যায়। তাঁরা সাধারণত বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ অন্যান্য বিদেশি মেডিকেল শিক্ষার্থীকে পড়িয়ে থাকেন।

সর্বশেষ হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিকালীন বিদেশি ফ্যাকাল্টি বা গবেষক। ক্ষেত্রবিশেষে তাঁদের চীনা শিক্ষকদের সঙ্গেও তুলনা করা যায়। তাঁরা শিক্ষকতার পাশাপাশি গবেষণাও করে থাকেন। বিশ্বের নামীদামি শিক্ষকদের আকর্ষণীয় প্যাকেজ অফার করে চীন সরকার তাঁদের নিয়ে আসে এবং তাঁদের নির্দিষ্ট কোনো বেতন থাকে না। তাঁদের বেসিক বেতন ৩ হাজার থেকে শুরু করে ১০ হাজার ডলার পর্যন্ত হতে পারে, (একেকজনের যোগ্যতা অনুসারে) এর পাশাপাশি অন্যান্য সুযোগ–সুবিধা বিদ্যমান। ফ্রি আবাসনের পাশাপাশি তাঁরা গবেষণা ফান্ডও পেতে পারেন এমনকি সেটা ১ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত হতে পারে। এ গবেষকেরা সপ্তাহে ৪ থেকে ৮ ঘণ্টা শিক্ষকতা করে থাকেন। যোগ্যতা অনুসারে তাঁদের বিভিন্ন পদবি থাকে (অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর, প্রফেসর ইত্যাদি)। বাংলাদেশি শিক্ষকদের জন্য (অন্যান্য পেশারও) চীনা সরকার প্রথম তিন বছর করমুক্ত বেতন ঘোষণা করেছে। সহজেই কোনো বাংলাদেশি পেশাজীবী এই সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন।

পরিশেষে বলা যায়, শুধু চীনে নয়, যোগ্যতা দিয়ে সারা দুনিয়ায় বাংলাদেশিরা সাফল্যের সঙ্গে কাজ করতে পারেন। সেটার জন্য শুধু প্রয়োজন পর্যাপ্ত ইচ্ছাশক্তি আর অনুসন্ধিৎসু চোখ–কান খোলা রেখে সুযোগের সদ্ব্যবহার করা।