ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা


আইন টাইমস | Published: 2017-10-03 16:19:36 BdST | Updated: 2024-05-04 11:19:39 BdST

ব্যক্তিগত অসুস্থতার কারণে এক মাসের ছুটিতে গেলেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। এ ব্যাপারে তিনি সোমবার রাষ্ট্রপতি বরাবর একটি আবেদন করেন। আবেদনে মঙ্গলবার থেকেই ছুটিতে যাওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন তিনি। এই ছুটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার অনুপস্থিতিতে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করবেন। সোমবার রাতে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেন, সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কর্মে প্রবীণ হওয়ায় রাষ্ট্রপতি তাকে (আবদুল ওয়াহহাব মিঞা) ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার থেকে তিনি দায়িত্ব পালন করবেন।

অধস্তন আদালতের বিচারকের চাকরি শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা ও ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের সঙ্গে টানাপোড়েনের মধ্যে এ ছুটির আবেদন করলেন প্রধান বিচারপতি।

এদিকে এক প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, কোনো চাপে নয়, এটা প্রধান বিচারপতির ব্যক্তিগত ছুটি। এ ছুটির সঙ্গে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের কোনো সম্পর্ক নেই।

অন্যদিকে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেছেন, অবকাশ শেষে আদালত খোলার দিনে প্রধান বিচারপতির ছুটিতে যাওয়ার ঘটনা সুপ্রিমকোর্টের ইতিহাসে নজিরবিহীন।

গত ২৭ আগস্ট থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত সুপ্রিমকোর্টের অবকাশকালীন ছুটি ছিল। মঙ্গলবার থেকে নিয়মিত আদালত বসেছে। এর মধ্যে প্রধান বিচারপতি ৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিদেশ সফরে ছিলেন।

উল্লেখ্য, ২৪ আগস্ট ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় বাতিল ও প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান বিচারপতির সব অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দেয় বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ।

উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নিতে সংবিধানে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় ১ আগস্ট প্রকাশ করেন সুপ্রিমকোর্ট। রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতি দেশের রাজনীতি, সামরিক শাসন, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি, সুশাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার চাকরির আরও প্রায় চার মাস বাকি আছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত রয়েছে তার চাকরির মেয়াদ। ২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পাওয়া বিচারপতি সিনহা এ বছর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় দেয়ার পর থেকে ক্ষমতাসীনদের সমালোচনার মুখে পড়েন। বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে প্রধান বিচারপতির দেয়া রায়ের পর্যবেক্ষণ প্রত্যাহারের দাবিতে সুপ্রিমকোর্টসহ সারা দেশে সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে। রায় নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার প্রস্তাব গৃহীত হয় জাতীয় সংসদে। সূত্র: যুগান্তর।

এমএস/ ০৩ অক্টোবর ২০১৭