নারী দিবসকে যেভাবে দেখছেন ডিআইইউ শিক্ষার্থীরা


Rakibul Islam | Published: 2024-03-08 22:30:39 BdST | Updated: 2024-04-27 12:47:44 BdST

আজ ৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে প্রতিবছর যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপিত হয়। ১৯১০ সালের ৮ মার্চ কোপেনহেগেন শহরে অনুষ্ঠিত এক আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনে জার্মানির নারী নেত্রী কারা জেটকিন দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেন।

১৯১১ সালের ৮ মার্চ ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হয়। ১৯৮৫ সালে ৮ মার্চকে জাতিসংঘও আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে প্রথম দিবসটি পালন করা হয়। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) শিক্ষার্থীদের ভাবনা তুলে ধরেছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক মোঃ রাকিবুল ইসলাম।

নারীদের পণ্য হিসেবে না, মানুষ হিসেবে ব্যবহার করুন-

আন্তর্জাতিক নারী দিবসে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী সিরাজাম মুনিরা বলেন, আমার প্রথম পরিচয় আমি একজন নারী এবং আমি গর্বের সঙ্গে সমাজে এই পরিচয়টি দিতে চাই। নারীদের সম্মান দিয়ে (৮ই মার্চ) নারী দিবস ঘোষণা করেছে, যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি। নারী শিক্ষার্থী হিসেবে আমি সম্মানিত আবার কিছু ক্ষেত্রে আবার সম্মানহানির শিকার হতে হয়। নারীদের সব ধর্মেই সম্মান দেওয়া হয়েছে। তাই আমি চাই নারীদের শুধু পণ্য হিসেবে ব্যবহার না করে মানুষ হিসেবে ব্যবহার করুন। কারণ মেয়েরাই মা।

‘বিশ্বে যা কিছু সৃষ্টি চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর’-

রিশাত সুলতানা মলি বলেন, বিশ শতকের শুরুর দিকেই যেখানে কবি নজরুল পুরুষের পাশাপাশি নারীর গুরুত্ব উপলব্ধি করছেন, সেখানে এই আধুনিক জীবন ব্যবস্থায় এসেও অনেকে সেটা মানতে চান না। নারীকে এখনো একদল অধস্তন হিসেবে ভাবতে বদ্ধপরিকল্প! অথচ বর্তমান সমাজে অনেক ক্ষেত্রেই নারীরা এগিয়ে গেছে, যাচ্ছে। যেদিন নারীকে সম্মান দিতে শিখবে, নারীকে ভোগ্যসামগ্রী না ভেবে সমাজ গড়ার হাতিয়ার ভাববে, সেদিন নির্দিষ্ট নারী দিবসের আর হয়তো কোনো প্রয়োজন হবে না। তখন প্রতিদিনই নারী দিবস হিসেবে সমাজে বিবেচিত হবে। নারী পাবে তার সম্মান, পাবে চলার-বলার এবং অন্যান্য সব অধিকার।

নারী ও পুরুষ উভয়ে একটি মুদ্রার দুটি পিঠ-

স্মৃতি আক্তার বলেন, প্রায়ই বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় বিভিন্ন উৎসাহ উদ্দীপনামূলক লেখনী পড়ে থাকি। যেখানে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা, নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা করা হয়। তবে এসব লেখনীতে মানুষ কেবল পুঁথি বিদ্যার মতো চোখ বুলিয়ে যায়। নিজের মাঝে বিষয়গুলো ধারণ করে অল্প কিছু সংখ্যক মানুষ। একজন মানুষ যখনই নিজেকে একজন নারীর স্থানে রেখে চিন্তা করবে, তখন কিছুটা হলেও নারীদের সাথে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ও নির্মম বিষয়গুলো উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে! ভালো থাকুক সমাজ, ভালো থাকুক নারীরা!

অংশগ্রহণ বাড়লেও ক্ষমতায়ন বাড়েনি-

আয়েশা ইসলাম মুন্নী বলেন, প্রতিবছর নারী দিবস নিয়ে কাজ করা হলেও প্রান্তিক পর্যায়ের নারীরা এ দিবস কী বা এর গুরুত্ব কী এসব সম্পর্কে এখনও অবগত না। যে কারণে তারা অবহেলিত। যেদিন নারীরা তার নিজস্ব অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে শিখবে, তাদের প্রতি সব ধরনের বৈষম্যর বিলোপ সাধিত হবে, অত্যাচার-নির্যাতন থেকে নারী মুক্তি পাবে, আর্থসামাজিক ও উন্নয়ন খাতে নারীর মতামতকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে, সেদিন পৃথিবী এক নতুন স্বর্ণযুগে পা দেবে।