ইবিতে শিক্ষকের বিরুদ্ধে একই বিষয়ে বার বার ফেল করনোর অভিযোগ


আহসান নাঈম | Published: 2018-08-07 15:19:51 BdST | Updated: 2024-05-02 21:09:25 BdST

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগের এক ছাত্রীকে বার বার ফেল করানোর অভিযোগ উঠেছে। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভিসি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী সিরাজুম মনিরা। অভিযুক্ত ওই শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের প্রফেসর ড. ভুপেশ চন্দ্র রায়।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ভিসি প্রফেসর ড. হারুন উর রশিদ আসকারী। সোমবার (০৬ আগস্ট) কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভারপ্রাপ্ত রেজিষ্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফ। এদিকে ওই শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেস প্রশাসকের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে।

লিখিত অভিযোগ মুনিরা উল্লেখ করেন, দ্বিতীয় বর্ষের চুড়ান্ত পরীক্ষায় ড. ভুপেশ চন্দ্র রায় এর একটি ল্যাব বিষয়ে ফেল করি। কেন ফেল করানো হয় তা আমি এখনো জানি না। ফলে স্যার আমাকে তৃতীয় বর্ষে উত্তীর্ণ হওয়ার সুযোগ দেননি। তারপর তৃতীয় বর্ষে ড. ভুপেশ স্যারের কেমিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে আশ্চর্যভাবে ফেল আসে। আমি জীবনে কোনদিন নকল করি নাই। অতঃপর ২০১৮ সালে অনার্স (সম্মান) চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষে ওই বিষয়ে পুণঃমূল্যায়ন পরীক্ষায় স্যার আবারো অকৃতকার্য করিয়ে দিয়েছেন। এরপর গত ৩০ জুলাই ঐ বিষয়ে আমার জীবনের শেষ সুযোগ ছিল। পরীক্ষার হলে আমি একা পরীক্ষা দিচ্ছিলাম, হলে তিন জন শিক্ষক কর্তব্যরত ছিলেন। পরীক্ষার সময় আমার লিখিত খাতা স্যার আমাকে দিয়ে জোর করে কাটিয়ে নিয়েছেন। এই বিষয়ে এবারো যদি পাশ না আসে তবে আমি স্নাতক এর কোন সনদ পাব না।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রীর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত বুধবার তাৎক্ষনিকভাবে ভিসি প্রফেসর ড. হারুন উর রশিদ আসকারী প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের কর্মকর্তাদের দিয়ে পরীক্ষার খাতা ও নম্বরপত্র যাচাই বাছাই করেন। তবে নম্বরপত্রে ওই বিষয়ে কোন নম্বর উল্লেখ ছিলো না।

বিষয়টি আমলে নিয়ে ভিসি বিষয়টি অনুসন্ধান পূর্বক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. রেজোয়ানুল ইসলামকে আহবায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান ও ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. আতিকুর রহমান। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এদিকে প্রফেসর ড. ভুপেশ চন্দ্র রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেস প্রশাসকের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে প্রফেসর ড. ভুপেশ চন্দ্র রায় বলেন, ’আমাকে নিয়ে যে অভিযোগ করা হয়েছে সে বিষয়ে কিছু বলার ভাষা আমার নেই। আমার সম্পর্কে আমার বর্তমান ও সাবেক ছাত্রছাত্রী এবং আমার সহকর্মীদের কাছে জিজ্ঞাসা করলে ভালভাবে জানতে পারবেন।’ এছাড়া প্রেস প্রশাসকের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন বলেও জানান তিনি।

রেজিষ্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফ বলেন, এক ছাত্রীর লিখিত অভিযোগর প্রেক্ষিতে ভিসি বিষয়টি অনুসন্ধান পূর্বক তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছেন। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এসএম/ ০৭ আগস্ট ২০১৮