পিঠা উৎসবে মেতেছেন রাবি শিক্ষার্থীরা


RU Correspondent | Published: 2024-02-02 09:04:59 BdST | Updated: 2024-05-03 21:06:14 BdST

‘শীতের আমেজে পিঠার গন্ধে, বাউল মাতে মন-আনন্দে’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বাউলিয়ানার আয়োজনে দ্বিতীয়বারের মতো দুই দিনব্যাপী ‘শৈত্যোৎসব ও পিঠা-পুলি মেলা’ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সুরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্রশিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের (টিএসসিসি) সামনে এ মেলা শুরু হয়।

রঙ-বেরঙের দেড় শতাধিক বাহারি পদের নকশী পিঠায় জমে উঠেছে এই মেলা। এতে আরও আছে নাচ-গান-আনন্দ-উল্লাস, আবৃত্তি, বিতর্কসহ নানা আয়োজন। ‘শৈত্যোৎসব ও পিঠা-পুলি মেলা’ চলবে আগামীকাল শুক্রবার রাত পর্যন্ত।

সরেজমিনে মেলা ঘুরে দেখা যায়, দেশি-বিদেশি প্রায় দেড় শতাধিক বাহারি পদের পিঠা নিয়ে প্রায় অর্ধশতাধিক স্টল বসিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। স্টলগুলোতে দুধ পুলি, চন্দ্র পুলি, নারকেল পুলি, খোলা চিতই, তেল পিঠা, নকশী পিঠা, মালাই বিহার, সুজির বড়া, জামাই পিঠা, পাটি সাপটা, গোলাপ ফুল, ডাবের পিঠা, লবঙ্গ পিঠা, শামুক পিঠা, রুপালি পিঠা, বুটের বরফি, মোহন ভোগ, ডিম সুন্দরী, মাছের পিঠা, গাজরের হালুয়া ডিমপুরি, গোলাপ, আরশি নগর, ঝাল-মিষ্টি, হৃদয়হরণ পিঠা, সূর্যমুখী, পাকোয়ান পিঠা, রসে ভরা সবজি পিঠা, রস মলাই খিরপুলিসহ প্রায় দেড় শতাধিক পদের পিঠা শোভা পাচ্ছে। বাহারি পদের এসব পিঠা খেতে শিক্ষার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ১০ টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে এসব পিঠা।

পিঠার পাশাপাশি স্টলের নামগুলোর মধ্যেও রয়েছে অন্যরকম বৈচিত্র্য। স্টলগুলোর মধ্যে শ্বশুরবাড়ি পুলির আসর, পিঠা খাবি কি না বল, হ য ব র ল, স্বপ্ন ঘুড়ি, খাই দাই পিঠা ঘর, হৃদয় হরণ পিঠা, রসমঞ্জুরী, পিঠা ওয়ালী, পিঠা মহল, সরদার মার্ট, চন্দ্রপুলি, বিহান কুঞ্জ, হাউ মাউ পিঠা খাও, রাণী পিঠা ঘর, মাসুম আলির পিঠা, শৈত্যপুলিসহ আরও বিভিন্ন বাহারি নামে স্টল নিয়ে বসেছেন শিক্ষার্থীরা।

কথা হয় শ্বশুরবাড়ি পুলির আসর স্টলের উদ্যোক্তাদের সঙ্গে। তারা জানান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পিঠা উৎসব খুবই জমজমাট হয়ে থাকে। এখানে এসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শীতের পিঠা খাওয়ার পাশাপাশি দারুণ সময় কাটান। এ বছর শখের বসে বন্ধু-বান্ধবীরা মিলে স্টল নিয়েছেন। আনন্দের সাথে সবাই মিলে পিঠা বানানো, স্টলে বসে বিক্রি করা, সবার সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিয়ে অনবদ্য সময় অতিবাহিত হচ্ছে তাদের। এছাড়া পিঠা বিক্রির যে লভ্যাংশ থাকবে তার ১০ শতাংশ অসহায় মানুষের সাহায্যের জন্য ব্যয় করবেন তারা।

পিঠা উৎসবে আসা ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বাপ্পি বলেন, এই শীতে মায়ের হাতের পিঠা খুব মিস করছি। ক্যাম্পাসে শীতের পিঠা-পুলি উৎসবের আয়োজনের জন্য ক্যাম্পাস বাউলিয়ানাকে ধন্যবাদ। যারা স্টল নিয়ে বসেছেন তাদের পিঠার মান খুবই ভালো। বিভিন্ন রকমের পিঠা এখানে উঠেছে। কয়েক রকম পিঠা খেয়েছি এরই মধ্যে। তবে দাম কিছুটা বেশি। পাশাপাশি সাংস্কৃতিক আড্ডাও উপভোগ করছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম সাউদ বলেন, আমাদের গ্রাম-বাংলার সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে ক্যাম্পাসে বাউলিয়ানা গত বছরের ন্যায় এবারও পিটা উৎসবের আয়োজন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে যতটুকু সহযোগিতা করার প্রয়োজন আমরা ততটুকু করেছি। এমন আয়োজন করলে প্রশাসন থেকে যথাসাধ্য সহযোগিতার হাত বাড়ানো হয়।