সিমাগো র‌্যাঙ্কিংয়ে চার ধাপ এগিয়ে ১৩তম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়


Shoeb Shuvro | Published: 2024-03-14 17:41:59 BdST | Updated: 2024-05-03 04:45:30 BdST

স্পেনের শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিমাগো ইনস্টিটিউশন ২০২৪ সালের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ করেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৪ হাজার ৭৬২টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে এবারের তালিকায়। বাংলাদেশের সেরা এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ১৩তম।

এই র‌্যাঙ্কিংয়ের তথ্য ঘেঁটে দেখা গেছে, গত বছরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ছিল ১৭তম।
২০২২ ও ২০২১ সালে ১২তম, ২০২০ সালে ৬তম, ২০১৯ সালে ৫ম ও ২০১৮ সালে রাবির অবস্থান ছিল ৪র্থ। অর্থাৎ গত ৬ বছরে এই র‌্যাঙ্কিংয়ে ক্রমাগতভাবে রাবির অবস্থান পেছালেও এ বছর উন্নতি হয়েছে।

গবেষণা, সামাজিক প্রভাব এবং উদ্ভাবন- এ তিনটি সূচকের ফলাফল পর্যালোচনা করে এই র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি এ তিনটি সূচকের ফলাফল অনুযায়ী আলাদা র‌্যাঙ্কিং এবং একসাথে মিলিয়ে সার্বিক র‌্যাঙ্কিং (overall ranking) প্রকাশ করে থাকে। সার্বিক র‌্যাঙ্কিং করার জন্য তারা গবেষণায় ৫০%, উদ্ভাবনে ৩০% এবং সামাজিক প্রভাবে ২০% ওয়েট দিয়ে থাকে।

সিমাগো ইউনিভার্সিটি র‌্যাঙ্কিং ২০২৪ অনুযায়ী, গবেষণা, সামাজিক প্রভাব এবং উদ্ভাবন এ তিনটি সূচকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান দেশে যথাক্রমে ২৩তম, ৪র্থ ও ৩০তম। আর এ তিনটি বিষয় মিলে রাবির সার্বিক অবস্থান দেশে ১৩তম। তবে ২০২৩ সালে গবেষণা, সামাজিক প্রভাব এবং উদ্ভাবন এ তিনটি সূচকে রাবির অবস্থান ছিল দেশে যথাক্রমে ১২তম, ২য় ও ২৬তম। এর মানে দাঁড়াচ্ছে, আলাদা আলাদাভাবে তিন সূচকেই গতবছর থেকে রাবি এ বছর পিছিয়ে পড়েছে।
  
সিমাগো র‌্যাঙ্কিং অনুযায়ী ২০২৪ সালে গবেষণায় দেশের সেরা দশ বিশ্ববিদ্যালয় হলো যথাক্রমে চট্টগ্রামের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরকৃবি), ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক), স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি), মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)।

অন্যদিকে সামাজিক প্রভাব বিবেচনায় দেশের সেরা ১০ বিশ্ববিদ্যালয় হলো যথাক্রমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)।
 
আর উদ্ভাবন সূচকে দেশের সেরা দশ বিশ্ববিদ্যালয় হলো যথাক্রমে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সেকৃবি), স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

আর সার্বিক বিবেচনায় (গবেষণা-৫০%, সামাজিক প্রভাব-২০% ও উদ্ভাবন-৩০%) সিমাগো র‌্যাঙ্কিং ২০২৪ অনুযায়ী, দেশের সেরা দশ বিশ্ববিদ্যালয় হলো বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, "এটা আমাদের জন্য অনেক আনন্দের খবর। কারণ এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‌্যাঙ্কিং দিয়েই মান, মর্যাদা রক্ষা করা হচ্ছে। এই র‌্যাঙ্কিংয়ে উপরে ওঠার ক্ষেত্রে শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনই নয়, বরং যাঁরা গবেষণা করছেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সমান অবদান রয়েছে। এই র‌্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, আমরা যদি সবাই মিলে ইচ্ছা করি ও কাজ করি, তাহলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি ভালো জায়গায় পৌঁছে দিতে পারব। আমি বলব, সামনের দিনগুলোতে যেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ও বিভাগগুলো আরো সচেষ্ট হয়, যাতে বিভাগগুলোর শিক্ষাদান ও উন্নত মানের গবেষণাগুলো নিয়মিত হয়।"

"এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের অনেক বড় একটা ভূমিকা আছে, এক্ষেত্রে যদি আমরা আরো শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে ও নিয়ম মেনে সামনে আগাতে পারি তাহলে আগামী বছর আমরা আরো ভালো র‌্যাঙ্কিং করতে পারব। আর সেটাই হবে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। এজন্য সবাইকে সততার সাথে সামনে আগাতে হবে।", অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম যোগ করেন।

তিনি আরো বলেন, "যাঁরা ভালো ভালো গবেষণা করেন তাঁদের আমরা বলে দিয়েছি তাঁরা যাতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাফিলিয়েশন ব্যবহার করেন। এর আগে, যাঁরা উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করেন তাঁরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাফিলিয়েশন ব্যবহার করতেন না। এখন আমরা উদ্যোগ নিয়ে তাঁদের জানিয়েছি কোনোভাবেই যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাফিলিয়েশন বাদ না পড়ে। কারণ তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাফিলিয়েশন যোগ করলে বিশ্ববিদ্যালয় র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে যাবে।"