হংকংয়ে নিরাপত্তা আইনে অর্ধশত গণতন্ত্রপন্থী গ্রেফতার


Dhaka | Published: 2021-01-06 19:12:22 BdST | Updated: 2024-05-03 16:07:30 BdST

বিতর্কিত নিরাপত্তা আইনে হংকংয়ে প্রায় অর্ধশত গণতন্ত্রপন্থী ও বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা সংস্থা এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত জুনে চীনের পার্লামেন্টে পাস হওয়া বিতর্কিত হংকং নিরাপত্তা আইনে বুধবার (৬ জানুয়ারি) সকালে ৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ফেসবুক পেজে ডেমোক্রেটিক পার্টি জানিয়েছে, গত বছরের অ্যাসেম্বলি নির্বাচনের আগে বিরোধীরা প্রার্থী বাছাইয়ে যে প্রাইমারি ভোটের আয়োজন করেছিল, সেই প্রেক্ষিতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের সবাইকে নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতারদের মধ্যে শিক্ষার্থী, সাবেক আইনপ্রণেতা, জেলা কাউন্সিলরসহ খ্যাতনামা বিরোধীদলীয় নেতা জেমস পো, ল্যাম চুক টিং, লেস্টার শাম ও বেনি তাই রয়েছেন। স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাদের মধ্যে মানবাধিকার মামলায় আইনজীবী হিসেবে হংকংয়ে চাকরিরত যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকও রয়েছেন।

এ বিষয়ে হংকং সরকার ও বেইজিং বলছে, গত বছরে প্রাইমারি ভোটে কয়েক হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করে। এর ফলে তারা জাতীয় নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘন করেছে।

গণতন্ত্রপন্থীরা বলছেন, সেপ্টেম্বর হংকংয়ে অ্যাসেম্বলি নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। তার আগে বিরোধীদের শক্তি বোঝার জন্য একটি প্রাইমারি ভোটের ব্যবস্থা করেন তারা। ওই ভোটের সঙ্গে প্রশাসনের কোনো সম্পর্ক নেই। বিরোধীরা বেসরকারিভাবে ওই ভোটের আয়োজন করেছিল। প্রাইমারি নির্বাচন হলেও অ্যাসেম্বলি নির্বাচন হয়নি। প্রশাসন মহামারির দোহাই দিয়ে নির্বাচন স্থগিত রেখেছে।

বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দাবি, নির্বাচন হলে বিরোধীরা অনেক বেশি আসন পেয়ে যাবে এবং হংকংয়ে চীনের প্রতিপত্তির ওপর বাধা সৃষ্টি করবে। এই ভয়ে নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়েছে।

গত বছরের জুনে চীনের পার্লামেন্টে বিতর্কিত হংকং নিরাপত্তা আইন পাস হয়। এতে আধা-স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলটির ওপর বেইজিংয়ের প্রভাব আরও বেড়েছে।

সমালোচকরা বলছেন, বিতর্কিত এই আইন হংকংয়ের জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়ে উঠতে পারে। তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, এটি হংকংয়ের বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতা, নাগরিক ও রাজনৈতিক স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করবে।

১৯৯৭ সালে যুক্তরাজ্য হংকংকে চীনের হাতে তুলে দেয়ার পর থেকেই জাতীয় নিরাপত্তা আইন পাসের দাবি ছিল বেইজিংয়ের। হংকংয়ের নেতারা সেই চেষ্টাও করেছিলেন, কিন্তু জনতার বাধার মুখে তা আর পাস করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত অধৈর্য হয়ে গত ২২ মে আইন প্রণয়নের দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নেয় চীন সরকার। হংকংয়ের স্বাধীন আইন ব্যবস্থা থাকলেও তাদের ক্ষুদ্র সংবিধানে এরকম একটি সুযোগ রাখা ছিল। ফলে বেইজিংয়ের হস্তক্ষেপে বেশি কিছুর করার ছিল না হংকংয়ের নেতাদের।

নতুন আইনে বর্ণিত চারটি অপরাধ হলো- বিচ্ছিন্নতা দাবি, কেন্দ্রীয় চীন সরকারের বিরোধিতা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং জাতীয় সুরক্ষা বিপন্ন করতে বিদেশিদের সঙ্গে জোট বাঁধা।