ঢাবিতে ছাত্রলীগের ডাকে আসতে দেরি, শিক্ষার্থীকে থাপ্পড়


ঢাবি টাইমস | Published: 2017-08-14 16:01:19 BdST | Updated: 2024-06-26 11:04:01 BdST

ছাত্রলীগের ডাকে হলের অতিথি কক্ষে আসতে দেরি করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের এক শিক্ষার্থীকে থাপ্পড় মারার অভিযোগ উঠেছে হল ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। থাপ্পড়ে আহত হয়ে ওই শিক্ষার্থী হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

এছাড়া ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে না যাওয়ায় তিন শিক্ষার্থীকে হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন হল ছাত্রলীগের আরেক নেতা। রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে হলের অতিথি কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগ নেতার থাপ্পড়ে আহত শিক্ষার্থী নাঈম ইসলাম উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা হলেন- হল শাখা ছাত্রলীগের পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম। ছাত্রলীগের হল সভাপতি জহিরুল ইসলামের সঙ্গে রাজনীতি করেন তিনি। খবর জাগো নিউজের।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, রাত ১০টায় হল ছাত্রলীগের সভাপতি জহির গ্রুপের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের অতিথি কক্ষে ডাকা হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উপস্থিত হতে না পারায় হলের পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক আরিফ একই স্থানে থাকা আরেক সিনিয়রকে দেখিয়ে তার নাম জানতে চান। কিন্তু নাঈম তা বলতে না পারায় ক্ষেপে যান আরিফ। একপর্যায়ে ওই শিক্ষার্থীর গালে সজোরে থাপ্পড় মারেন তিনি। এতে ওই শিক্ষার্থী আহত হন। পরে বন্ধুরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হলে নিয়ে আসেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ ধরনের সংবাদে তিনি বিব্রত। তিনি বলেন, ওই শিক্ষার্থীর আগ থেকেই জ্বর থাকায় গেস্টরুমে গেলে অসুস্থতাবোধ করে। পরে সিনিয়ররা তাকে রুমে পাঠিয়ে দেয়।

এদিকে, একইদিনে টিএসসিতে অনুষ্ঠিত ঢাবি ছাত্রলীগের এক আলোচনা সভায় উপস্থিত না থাকায় তিন শিক্ষার্থীকে হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন হল ছাত্রলীগের দফতর সম্পাদক মেহেদী হাসান মিজান। ওই তিন শিক্ষার্থী হলেন- ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের দিপু ইসলাম, ফারসি বিভাগের দ্বীন ইসলাম ও গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মিলন। তারা সবাই দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। পরে মিলনকে হলে উঠিয়ে নেন সভাপতি জহির।

গত কয়েকদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে আতঙ্ক হয়ে উঠেছে ছাত্রলীগ। কাউকে ধরেই ‘শিবির’ ট্যাগ ও ‘নারী কেলেঙ্কারি’তে জড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন ছাত্রলীগের কতিপয় উচ্ছশৃঙ্খল নেতারা। সিনিয়র নেতাদের কাছে নিজেদের আস্থাভাজন করতেই এটা করতে তারা।

এরআগে গত শনিবার রাতে ‘শিবির’ আখ্যা দিয়ে মনোবিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রকে ব্যাপক নির্যাতন করা হয়। পরে দেখা যায় ওই শিক্ষার্থী শিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। এমনকি ঘটনার পর তাকে দেখতেও যান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগ।

তার আগে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল্লাহকে ‘শিবির’ আখ্যা দিয়ে হলছাড়া করেন জিয়া হল ছাত্রলীগ। দুটি ঘটনাই ঘটে ওই হলের ছাত্রলীগ সভাপতি ইউসুফ উদ্দিন খানের অনুসারীদের মাধ্যমে।

তারও আগে বিজনেস ফ্যাকাল্টি ছাত্রলীগের সভাপতি বোরহান উদ্দিনের বিরুদ্ধে ‘নারী কেলেঙ্কারির’ অভিযোগে তাকে হলছাড়া করে জসিম উদদীন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহেদ খানের অনুসারীরা। পরে হল প্রশাসনের তদন্তে বোরহান নির্দোষ প্রমাণিত হন।

এমজে/ ১৪ আগস্ট ২০১৭