বাংলাদেশ ও আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে সব সময় পাশে থাকবেন বলে জানিয়ে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের সন্তান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ বলেছেন, আমাদের পরিবার বিগত দিনের মতো সব সময় আওয়ামী লীগ ও দেশের দুঃসময়ে পাশে ছিল এবং থাকবে। দেশের ও দলের দুঃসময়ে আমি নিজেও পাশে থাকব।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘হটলাইন কমান্ডো’ নামের সচেতনতামূলক টিভি রিয়েলিটি শো সম্পর্কে জানান দিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এসময় সোহেল তাজ একথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, ‘সুদিনে আমি দলকে অন্যভাবে সাহায্য করছি। এছাড়া আমার এ প্রোগ্রামটা হচ্ছে সামজিক বিষয়বস্তু নিয়ে, এ প্রোগ্রামটা সোনার মানুষ তৈরি করার।
তিনি বলেন, একটা সমাজ যদি প্রস্তুত না থাকে, আপনি কী রাজনীতি করবেন? রাজনীতি কাকে নিয়ে করবেন? সমাজকে গড়তে পারলে, মানুষকে তৈরি করতে পারলে–অটোমেটিক সবকিছুরই সমাধান চলে আসবে।
আপনি যে রিয়েলিটি শো করছেন, কিছু দিন চলার পর তা শেষ হয়ে যাবে। মানুষ তা ভুলে যাবে। পাড়া-মহল্লায় যুবকদের তৈরি করার জন্য এবং চর্চা করার জন্য কোনো সাংগঠনিক ভিত্তি তৈরি করবেন কি না?
এ প্রশ্নের জবাবে হোসেল তাজ বলেন, ‘শো-এর পাশাপাশি আমরা কিছু কার্যক্রমও পরিচালনা করব। এর অংশ হিসেবে সচেতনামূলক কিছু কাজও করব। অনেক ধরনের কার্যক্রম থাকবে। স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়ে যাব। এটা শুধু টিভি প্রোগ্রামেই সীমাবদ্ধ থাকবে না।’
আগামী সেপ্টেম্বর থেকে ফিট নেশন মিডিয়ার ব্যানারে লাইফ স্টাইল বিষয়ক রিয়েলিটি শো ‘হটলাইন কমান্ডো’ নিয়ে টিভি পর্দায় হাজির হবেন সোহেল তাজ। বেসরকারি টেলিভিশন আরটিভি ১২ পর্বের এ অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে সোহেল তাজ বলেন: ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার জন্য দরকার সোনার মানুষ। আর সোনার মানুষ গড়তে আমার এ উদ্যোগ।
তিনি বলেন, রাজনীতির বাইরে থেকেও মানুষের জন্য কিছু করার ইচ্ছা থেকেই এ পদক্ষেপ। বহুদিন ধরেই দেশের মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য, জীবন যাপনের অভ্যাস ও ধরণ, সচেতনতা ও দায়িত্ববােধের বিষয়গুলো নিয়ে ভাবছিলাম। সে ভাবনা থেকেই জন্ম, লাইফ স্টাইল বিষয়ক রিয়েলিটি শো ‘হটলাইন কমান্ডো’র।
‘ছোট বেলার থেকে আর্মি ট্রেনিং আর কমান্ডো স্টাইল আমার পছন্দের ছিল। সে সময় স্কুলের বন্ধুরা আমাকে কমান্ডোও বলে ডাকত। আর ওই সময়তেই আর্নল্ড শোয়ার্জনেগারের কমান্ডো মুভি মুক্তি পায়। তাই সব মিলিয়ে আমার প্রোগ্রামের নাম করা হয়েছে ‘হটলাইন কমান্ডো’-যোগ করেন তিনি।
সোহেল তাজ জানান, ‘হটলাইন কমান্ডো’ টিম নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে নানা শ্রেণী-পেশার মানুষের দরজায় কড়া নাড়বো। জানতে চাইবেন তাদের জীবন যাপনের অভ্যাস ও ধরণ, স্বাস্থ্যগত সমস্যার কথা, খাদ্য অভ্যাস, বাসস্থান, কর্ম পরিবেশসহ নানা সমস্যার কথা।
সোহেল তাজ আরও বলেন, এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের ভেতরে যদি সচেতনতা বৃদ্ধি পায়, জীবনধারায় পরিবর্তন আসে তাহলেই আমাদের উদ্দেশ্য সফল হবে এবং আমরা ভবিষ্যতে আরো উৎসাহ পাবে। দেশকে ফিট রাখতে দেশের মানুষের ফিট থাকতে হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি জানান, বাংলাদেশে প্রতিবছর অসংক্রামক রোগের (নন কমিউনিকিকেল ডিজিস) কারণে প্রায় ৬০ ভাগ মানুষ মৃত্যবরণ করেন। যা ১০০ ভাগ প্রতিরোধযোগ্য। কেবল জীবন অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে এসব রোগ থেকে মুক্তি সম্ভব। এই মুক্তির পথগুলোই আমরা খোঁজার চেষ্টা করবো।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সোহেল তাজ এবং তার টিমের বিশেষ সদস্যরা মানুষকে সচেতন করবেন এবং হাতে কলমে সহায়তা করবেন জীবন যাপনের সহজ ও কার্যকর পথ বেছে নিতে।
অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত ও তথ্য সমৃদ্ধ করতে নলেজ পার্টনার হিসেবে দেশের বিশেষায়িত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিশেষজ্ঞ ব্যক্তির সহযোগিতা নেয়া হবে। এছাড়াও টিম ‘হটলাইন কমান্ডো শো’য়ের পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা উপজেলার স্কুল কলেজে অ্যাকটিভিশন করবে। সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ করবে। চাইবে মানুষের ভেতরে সাংগঠনিক ভিত্তি গড়ে উঠুক।
গত কয়েক মাসে নিজের ফেসবুক পেজে এ অনুষ্ঠান ঘিরে কয়েকটি ভিডিও আপলোড করেন তিনি। যা নিয়ে নানা মহলে আলোচনা- সমালোচনা তৈরি হয়। এ সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে সব কিছুর অবসান হলো।
সংবাদ সম্মেলনে সোহেল তাজের পারিবারিক সদস্য ছাড়াও পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান র্যানকন গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রৌম্য রউফ চৌধুরী, অনুষ্ঠান নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান কারুজ কমিউনিকেশনের প্রধান কাউসার মাহমুদসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।