২৪ ঘণ্টার মধ্যে হেফাজত নেতা মামুনুলের গ্রেপ্তার দাবিতে সমাবেশ

কুষ্টিয়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙার ‘মূল ইন্ধনদাতা’ হিসেবে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবিতে সমাবেশ করেছে অপরাজেয় বাংলা নামের একটি সংগঠন।

আজ রোববার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এ দাবি করেন। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার প্রতিবাদে এবং এমন কাজের ‘মূল ইন্ধনদাতা’ মামুনুল হক গংদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবিতে অপরাজেয় বাংলা নামের সংগঠনটি এই সমাবেশের আয়োজন করে।

সমাবেশে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, ‘মৌলধারার লোকজন ধর্মীয় সহাবস্থানের ধারার মর্মমূলে আঘাত হানার কারণে ইউরোপ দীর্ঘদিন ধরে অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছিল। সে রকম একটি জায়গায় বাংলাদেশকে নিয়ে যেতে চায় ধর্ম ব্যবসায়ী-মৌলবাদী গোষ্ঠী। কোনো অবস্থাতেই আমরা তা হতে দেব না। যেকোনো মূল্যে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সমুন্নত রাখব। প্রতীক-ভাস্কর্যে আঘাত হানা সহজ, কিন্তু আদর্শ আমরা সমুন্নত রাখব। কোনো অবস্থাতেই এ ধরনের ঔদ্ধত্য আমরা সহ্য করব না। ২৪ ঘণ্টা সময় পর্যন্ত আমরা দেখব, তারপর কিন্তু আমরা আর বসে থাকব না। সবাইকে এ ব্যাপারে সোচ্চার হতে হবে। যেকোনো মূল্যে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হবে।’

সমাবেশে অংশ নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কি শুধু একজন ব্যক্তি? বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যকে আঘাত করা হয়েছে। এই আঘাত এসে লাগে আমাদের অস্তিত্বের শিকড়ে। সমস্যা ভাস্কর্যে নয়, সমস্যা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে। বাংলাদেশ না হয়ে প্রাণের পেয়ারে পাকিস্তান যারা চায়, তাদের বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সমস্যা। যারা বাংলাদেশের সংবিধান মানে না, তাদেরও সমস্যা আছে। বঙ্গবন্ধু কোনো ব্যক্তি নন, আদর্শের নাম। তিনি আমাদের হৃদয়ে আছেন।’

আয়োজক সংগঠন অপরাজেয় বাংলার সদস্যসচিব এইচ রহমান বলেন, ‘মামুনুল গংদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার দেখতে চাই। গ্রেপ্তার না করা হলে আমরা আন্দোলন করব, ঘেরাও করব...। ধর্ম সম্পর্কে মানুষ কম জানার কারণে মামুনুলরা মানুষকে বিভ্রান্ত করার সুযোগ পান। মামুনুলদের বলব, ভাস্কর্য পছন্দ না হলে পাকিস্তান-আফগানিস্তানে চলে যান, এই বাংলাদেশ তোমাদের নয়।’

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক পরিচালক উত্তম কুমার বড়ুয়া, অপরাজেয় বাংলার সদস্য মো. কাওসার, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা রাফিউল করিম প্রমুখ বক্তব্য দেন।