‘পদ্মা সেতু নিয়ে বিরূপ মন্তব্যকারীরা কি আশাহত, না লজ্জা পেয়েছে’


টাইমস প্রতিবেদক | Published: 2020-12-13 04:02:02 BdST | Updated: 2024-05-04 18:07:20 BdST

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, জনগণের স্বপ্নের পদ্মা সেতু প্রায় সম্পন্ন হওয়ায় দেশবাসী উল্লসিত হলেও পদ্মা সেতু নিয়ে বিরূপ মন্তব্যকারী বিএনপিসহ কতিপয় ব্যক্তি-গোষ্ঠীরা কি এখন আশাহত, নাকি লজ্জা পেয়ে নিশ্চুপ- এ প্রশ্ন জনগণের।

শনিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে তথ্যমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন আয়োজিত ‘যদিও মানছি দূরত্ব, তবুও আছি সংযুক্ত’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

চট্টগ্রাম জেলার ডেপুটি কমিশনার ইলিয়াস হোসেন ওয়েবিনারে সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আমাদের আওয়ামী লীগ সরকার যখন পদ্মা সেতুর কাজে হাত দেয়, তখন কোনো অর্থ ছাড়ের আগেই বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতি হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছিল। তখন বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বিএনপিসহ দেশের কিছু গবেষণা প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তিবর্গ, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ বিভিন্ন সভা-সিম্পোজিয়ামে পদ্মা সেতু নিয়ে নানা অভিযোগ তুলেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে কানাডার আদালতে বিশ্বব্যাংকের অভিযোগই মিথ্যা প্রমাণিত হয়।

হাছান মাহমুদ বলেন, বিশ্বব্যাংক পরবর্তীতে প্রকল্পে অর্থায়ন করতে চাইলেও প্রধানমন্ত্রী সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন এবং সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু তৈরির সিদ্ধান্ত নেন। তখনও বিএনপিসহ এসব ব্যক্তি-সংস্থার মুখ বন্ধ ছিল না, তারা সবসময়ই এ প্রকল্প নিয়ে নেতিবাচক বক্তব্য অব্যাহত রেখেছেন। কিন্তু গত ১০ ডিসেম্বর পদ্মার দুই পাড় সংযুক্ত হওয়ার পর তাদের আর কোনো বক্তব্য শোনা যাচ্ছে না। তাই জনগণের এখন প্রশ্ন বিএনপিসহ এসব ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান কি লজ্জায় মুখ লুকিয়েছেন, নাকি আশাহত হয়েছেন? বলেন ড. হাছান।

দেশের বা সরকারের কোনো কাজে ভুল পেলে বিদেশিরা যে সুরে কথা বলেন বিএনপিসহ এসব সংস্থা-ব্যক্তি তার চেয়েও দশগুণ সুরে আওয়াজ তোলেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, দেশের এমন সাফল্যে যেখানে সবাই শেখ হাসিনা ও তার দলকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন সেখানে তাদের এমন নীরবতাই আসলে প্রমাণ করে তারা আসলে আশাহত হয়েছেন।

তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন জনগণের উদ্দেশে বলেছিলেন- আওয়ামী লীগ এ সেতু করতে পারবে না। আর করতে পারলেও কেউ এ সেতু দিয়ে যাবে না। তাই এখন জনগণের প্রশ্ন- বিএনপির নেতারা কি এখন সেতুর উপর দিয়ে যাবেন না নিচ দিয়ে যাবেন।

‘‌ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বিষয়ে আলোকপাত করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্বে বর্তমানে আইসিটিনির্ভর চতুর্থ শিল্প বিপ্লব চলছে। বাংলাদেশ আগের তিনটি শিল্প বিপ্লবে পিছিয়ে থাকলেও বর্তমানের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে সঙ্গেই পথ চলছে। ভারত যেখানে ২০১৬ সালে ‘ডিজিটাল ভারত’ কিংবা যুক্তরাজ্য যেখানে ২০১৮ সালে ‘ডিজিটাল ইউকে’ ঘোষণা দিয়েছিল, সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালেই ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশকে সত্যিই ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করেছেন।

ড. হাছান আরও বলেন, দেশে এখন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ১১ কোটি, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, যা আগামী বছর দ্বিগুণ করা সরকারে লক্ষ্য। এ খাতে ২০০৮ সালের ২৬ মিলিয়ন ডলার রফতানি আয় এখন এক হাজার মিলিয়ন বা ১ বিলিয়ন। করোনা মহামারীতে স্থবিরপ্রায় বিশ্বের যে ক’টি দেশ ধনাত্মক প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছিল, বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম।

এইচটি/আরএম