ঢাবি থেকে স্থায়ী বহিষ্কৃতদের নামের তালিকা প্রকাশে গড়িমসি প্রক্টরের


ঢাবি টাইমস | Published: 2020-01-31 23:20:10 BdST | Updated: 2024-05-05 03:53:51 BdST

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিতর্ককে থোড়াই কেয়ার করেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রাব্বানী। ভর্তি জালিয়াতি ও ডিজিটাল জালিয়াতির সাথে যুক্ত থাকায় গত মঙ্গলবার ৬৩ শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের পর তাদের নাম প্রকাশের বিষয়ে ইত্তেফাক থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ মন্তব্য করেন।

নাম প্রকাশের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘তোমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কে? তোমরা তালিকা প্রকাশের জন্য বার বার চাপ দিচ্ছো?’ শিক্ষার্থীরা বহিষ্কৃতদের নাম জানতে চাইছেন জানালে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বিতর্ককে থোড়াই কেয়ার করি না।’

এর আগে গত মঙ্গলবার ভর্তি জালিয়াতি ও ডিজিটাল জালিয়াতির সাথে যুক্ত থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৩ শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক সিন্ডিকেট। তবে জালিয়াতির সাথে যুক্ত হওয়া এসব শিক্ষার্থীর নাম প্রকাশে অনীহা দেখিয়ে আসছেন তিনি।

গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি তালিকা প্রকাশের বিষয়ে অনীহা প্রকাশ করেন। তার কাছে তালিকা নেই বলেও জানান। তবে উপাচার্যের আদেশের পর তালিকা নিজের কাছে আছে বলে স্বীকার করেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সদিচ্ছা সত্ত্বেও তিনি এ তালিকা প্রকাশে গড়িমসি করায় প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।

এর আগে গত বছরের জানুয়ারিতে জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি হওয়া ও জালিয়াতিতে জড়িত থাকায় ১৫ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট। তখনও বহিষ্কৃতদের নাম প্রকাশ করেছিল প্রশাসন। এরপরে বেশ কয়েকবার শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করা হলে তাদেরও তালিকা প্রকাশ করা হয়। তবে এবারের তালিকা না প্রকাশের বিষয়টি বিতর্কের জন্ম দিয়েছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘জালিয়াতির সাথে যুক্ত হওয়া শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করার পর তাদের নাম প্রকাশ না করায় প্রশাসনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কেননা, কে বা কারা বহিষ্কার হয়েছে তা আমরা জানি না। ফলে তারা চাইলেই আমাদের সাথে ক্লাস করতে আসতে পারে। সেক্ষেত্রে আমরা তাদের ধরতে পারবো না। কিন্তু আমরাতো তাদের সাথে একই ক্লাস শেয়ার করতে চাই না।’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি সূত্র বলছে, বহিষ্কৃতদের মধ্যে প্রক্টরের আশির্বাদপুষ্ট কয়েকজন শিক্ষার্থী থাকায় তাদের তালিকা প্রকাশে কিছুটা অনীহা দেখাচ্ছেন। এর মাধ্যমে ওইসব শিক্ষার্থীদের সুযোগ করে দিতে পারবেন।

তালিকা প্রকাশের বিষয়ে বেশ কয়েকবার প্রক্টরের সাথে যোগাযোগ করে এই প্রতিবেদক। এসময় তিনি বলেন, ‘তালিকাটি খুবই ‘সেনসেটিভ’। এটা এখন প্রকাশ করা যাবে না।’ তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান তালিকা প্রকাশের বিষয়ে সদিচ্ছা প্রকাশ করেন।

উপাচার্য বলেন, ‘জালিয়াতির সাথে জড়িতদের বহিস্কার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় যেসব শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে তাদের তালিকা প্রকাশ করতে কোন ধরনের দ্বিধা প্রশাসনের নেই। আমি প্রক্টরকে বলে দিচ্ছি। তিনি তালিকা দিয়ে দেবেন।’ তবে উপাচার্যের আদেশের পরও তালিকা দেননি তিনি।

ইত্তেফাক