আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিবির আখ্যা দিয়ে অবরুদ্ধ বশেমুরবিপ্রবি ভিসি


Gopalganj | Published: 2020-03-10 02:43:07 BdST | Updated: 2024-05-04 18:41:16 BdST

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শহজাহানসহ প্রায় ৪০ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী তিন ঘন্টারও বেশি সময় ধরে অবরুদ্ধ থাকার পর অবরোধ তুলে নিয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এ অবরোধ তুলে নেন তারা।

এর আগে দুপুর একটার পর মুজিব বর্ষ উদযাপন উপলক্ষে উপাচার্যসহ শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী একাডেমিক ভবনের ৫০১নং রুমে মিটিংয়ে বসলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রুমের সামনে অবস্থান করে। এসময় বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে বাক বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পরে সেখানে বসে পড়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। কার্যত দুপুর ২টার দিকে ৫০১নং রুমে উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শহজাহানসহ প্রায় ৪০ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।

এসময় রুমে বাহিরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নানান স্লোগান দিতে দেখা গেছে। এদিকে, বেলা সাড়ে ৫টার দিকে পুলিশ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শিক্ষার্থী অবরোধ তুলে নেন। এসময় অবরোধ থেকে মুক্ত হন উপচার্যসহ শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

আন্দোলনরত ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানায়, ইউজিসির গঠিত ৭ সদস্যদের কমিটির ওপর আস্থা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের প্রতি ভরসা করে গত ১৮ ফেব্রুয়ারী প্রশাসনকে ১৫ দিন অনুমোদনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলাম। কিন্তু নির্ধারিত সময় শেষ হলেও গঠিত কমিটির কোন সাড়া না পেয়ে আমরা পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, সকল দপ্তরে তালা ঝুঁলিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছি। কিন্তু আমাদেরকে ‘শিবির কর্মী’ বলে আখ্যা দেওয়া বিষয়টি আমাদের অস্তিত্ব হুমকিস্বরূপ। এরই প্রতিবাদে উপচার্যসহ শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অবরূদ্ধ করা হয়েছিল।

এ বিষয়ে ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী কারিমুল হক বলেন, আমরা উপাচার্যের সাথে কথা বলতে গেলে আমাদেরকে জামায়াত-শিবির কর্মী বলে আখ্যা দিয়েছে এবং হলের সিট বাতিলের হুমকি দিয়েছে। তাই আমরা তাকে অবরুদ্ধ করে রাখি।

অবরোধ চলাকালীন সময়ে মুঠোফোনে উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শাহজাহান বলেন, তারা শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে মুজির জন্ম শতবর্ষ পালন বিষয়ে একাডেমিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে (৫০১নং কক্ষ) একটি মিটিং করছিলেন। এরই মধ্যে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এসে রুমের দরজাটি বন্ধ করে দিয়ে তালা ঝুঁলিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। তারা এখন মূলতঃ অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন বলে জানান। তাদেরকে মুক্ত করতে তিনি আইনশৃংখলা রক্ষাকারী সংস্থাকে জানিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ইউজিসির অনুমোদন ছাড়াই ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে ইতিহাস বিভাগে ১০০ শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেছিলেন সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন। কিন্তু চলতি বছরে ৬ ফেব্রুয়ারি ইউজিসি এক সভায় আগামী বছর থেকে ওই বিভাগে শিক্ষার্থী ভর্তি বাতিল ঘোষণা করলে ৩৩ দিন আন্দোলন-অবস্থানসহ ৫দিন যাবত অনশন কর্মসূচি পালন করছে ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা এবং তাদের শিবির কর্মী বলে আন্দোলন ভিন্নখ্যাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করায় ক্ষিপ্ত হয়ে উপচার্যসহ বাকীদের তালাবদ্ধ করে রাখেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।