র‌্যাগিংয়ের দায়ে যবিপ্রবির ৩ শিক্ষার্থী আজীবন বহিষ্কার


Desk report | Published: 2022-05-22 09:00:01 BdST | Updated: 2024-05-04 09:22:15 BdST

তদন্তে র‌্যাগিংয়ে জড়িত থাকার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) তিন শিক্ষার্থীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কারে সিদ্ধান্ত নিয়ে কর্তৃপক্ষ।

শনিবার (২১ মে) দুপুরে যবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে রিজেন্ট বোর্ডের ৭৮তম বিশেষ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন।

আজীবন বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন- পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের (ইএসটি) আল-আমিন, গণিত বিভাগের সোহেল রানা এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বারিউল হক মুবিন। তাঁরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ বর্ষের শিক্ষার্থী।

বিভিন্ন বিভাগের আরও ১০ শিক্ষার্থীকে ভবিষ্যতে র‌্যাগিংয়ে জড়িত থাকবে না উল্লেখ করে অভিভাবকের সম্মতিসহ ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে মুচলেকা দিতে হবে মর্মে সভায় সিদ্ধান্ত হয়। মুচলেকা না দিলে ওই শিক্ষার্থীদের এক বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হবে। এছাড়া র‌্যাগিংয়ের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের নার্সিং অ্যান্ড হেল্থ সায়েন্স বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়।

তারা হলেন- পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহাবুব হাসান রকি, রসায়ন বিভাগের শেখ জুবায়ের, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ রায়হান রহমান রাব্বি, কেমিকৌশল (সিএইচই) বিভাগের পারভেজ মিয়া ও এস বি সানাউল্লাহ সাকিব, পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের (ইএসটি) মোহাইমিনুল হক ও খালিদুজ্জামান সৌরভ, বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং (বিএমই) বিভাগের রাফিউর রহমান অপূর্ব, কেমিকৌশল (সিএইচই) বিভাগের সালমান মোল্ল্যা, পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের (ইএসটি) সাইমুন নাইস। এদের মধ্যে প্রথম তিন জন ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এবং বাকি সাতজন ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

রিজেন্ট বোর্ডে উত্থাপিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত ১৭ এপ্রিল যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের ৩২০ নম্বর কক্ষ থেকে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সাব্বির আলমকে ডেকে নিয়ে গণিত বিভাগের সোহেল রানা, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বারিউল হক মুবিন এবং পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের আল-আমিন শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। ফলে সাব্বির আলম জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। ওই কক্ষে উপস্থিত অন্য ১০-১৫ জন ছাত্র তাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিল বলেও তদন্তে বেরিয়ে আসে।

সাব্বির জ্ঞান হারানোর পর তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করা হয় এবং এক থেকে দেড় ঘণ্টা হাসপাতালে না নিয়ে সময়ক্ষেপণ করা হয়। শারীরিক অবস্থার পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে তাকে ধরাধরি করে নিচে নামিয়ে যবিপ্রবির অ্যাম্বুলেন্সযোগে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ওই দিন রাতে সাব্বিরকে প্রাথমিক চিকিৎসা ও কিছু শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়। ১৮ এপ্রিল তাকে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই হলে ফেরত নিয়ে আসা হয় এবং প্রশাসনের কাছে কোনোরূপ অভিযোগ না করার জন্য হুমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ১৩ শিক্ষার্থীকে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তিনজনকে আজীবন বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত আসে।