জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রের বিরুদ্ধে ফোকলোর বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে শারীরিক নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) আসমাউল হোসনা শান্তা নামের ফোকলোর বিভাগের ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবর শারীরিক নিপীড়নের লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগপত্রে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেন, সাড়ে ১১টার দিকে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে ৩য় তলা থেকে ৪র্থ তলায় উঠার সময় আজীজুল হক শামীম নিচে নামছিল। সাইডে জায়গা থাকা সত্ত্বেও আমার গায়ের উপর পড়ছিল, তখন আমি গায়ে পড়ার কারণ জিজ্ঞেস করায় তিনি আমার ব্যাচ জানতে চান।
অভিযোগপত্রে আরো উল্লেখ করা হয়, কথার এক পর্যায়ে শামীম লাথি দিয়ে চারতলা থেকে ফেলে দিবে এবং গালিগালাজ করে। এরপর উভয় পক্ষ চলে যায়। পরবর্তিতে আজিজুল হক শামীম আরো কয়েকজনকে নিয়ে ফোকলোর বিভাগে আসে এবং শান্তাকে ডাকে। একপর্যায়ে শান্তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও থাপ্পড় মেরেছে বলে জানান শান্তা।
শান্তার সাথে থাকা কয়েকজন প্রতক্ষ্যদর্শী শিক্ষার্থী এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আজীজুল হক শামীম তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা অস্বীকার করে বলেন, শান্তা নামের মেয়েটি আমাদের সাথে বেয়াদবি করেছে, আমি তাকে তার পরিচয় জানতে চেয়েছি কিন্তু তার গায়ে হাত তুলিনি, এটি মিথ্যাচার। শামীম আরো জানায়, তখন সে ক্লাসে ছিল। শামীমের সাথে থাকা কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন আমাদের সামনে এমন ঘটনা ঘটতে দেখিনি, এটি সত্য নয়।
এ ঘটনায় ফোকলোর বিভাগের শতাধিক বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবন থেকে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসনিক ভবনের নিচে অবস্থান নেয়। তারা অভিযুক্তের শাস্তির দাবীতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।
এসময় শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নিপীড়নের শিকার শিক্ষার্থী আসমাউল হোসনা শান্তা, আফরিন আক্তার, নূরে হাবিবা, আছিয়া আক্তার। ফোকলোর বিভাগের শিক্ষকরাও তাদের দাবীর সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে উপাচার্যের কাছে উপযুক্ত শাস্তির দাবী জানিয়েছেন। তারা এই ঘটনার উপযুক্ত বিচার দাবী করেন।
প্রশাসনিক ভবনের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের শান্ত করতে ব্যর্থ হয়ে সহকারী প্রক্টর নজরুল ইসলাম উপাচার্যের কক্ষে ফিরে যান। পরে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল উপাচার্যের সাথে দেখা করে এবং একটি অভিযোগপত্র দেয়। যেখানে তাদের ৪টি দাবীর কথা তুলে ধরেন, যার মধ্যে রয়েছে-
আজিজুল হক শামীম এর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি, ৬ ঘন্টার মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন, ২৪ ঘন্টার মধ্যে রিপোর্ট জানাতে হবে, ৪৮ ঘন্টার মধ্যে বিচার করতে হবে।
এই ঘটনায় উপাচার্য প্রফেসর ড. এ. এইচ. এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নিপীড়নের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমানিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। সুষ্ঠু তদন্ত করে দ্রুত সময়ে এর বিচার নিশ্চিত করা হবে।
এসএম/ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮