খাবারের দাম ও রিকশা ভাড়া নির্ধারণে ডাকা হয়নি: দাবি ৮ ছাত্রসংগঠনের


RU Correspondent | Published: 2024-02-08 20:02:56 BdST | Updated: 2024-05-04 11:25:15 BdST

গত ২২ জানুয়ারি ছাত্রসংগঠন ও দোকানদারদের সঙ্গে আলোচনা করে ক্যাম্পাসের খাবারের দোকানগুলোর খাবারের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রশাসন। এরপর ৩১ জানুয়ারি একই পদ্ধতিতে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরের রিকশা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়।

এঘটনার কয়েক সপ্তাহ পরে বাম ৭টি ছাত্রসংগঠন ও ছাত্রদল দাবি করেছে, খাবারের দাম ও রিকশা ভাড়া নির্ধারণে তাদের ডাকা হয়নি। বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিষয়টি জানানো হয়। পৃথকভাবে নিজেদের বিষয়টি জানায় ছাত্রদল।

বাম ছাত্রসংগঠন সাতটি হলো- রাবি শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, নাগরিক ছাত্র ঐক্য, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলন, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, ছাত্র গণমঞ্চ এবং বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।

বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা রাবির ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনসমূহ দীর্ঘদিন যাবৎ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কাজ করে আসছি। সম্প্রতি প্রশাসন এবং ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনসমূহের প্রতিনিধিদের মধ্যস্থতায় ক্যাম্পাসে খাবারের মূল্য এবং রিকশা ভাড়া নির্ধারণের সংবাদ আমাদের নজরে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্রিয় রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আমরা স্পষ্ট করতে চাই, উক্ত ঘটনায় আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, রাবি শাখা ছাড়া কেবল 'রাকসু আন্দোলন মঞ্চ' নামক একটি কার্যত নিষ্ক্রিয় সংগঠনের প্রতিনিধি সেখানে আমন্ত্রিত হয় এবং অংশ নেয় বলে আমরা জানতে পেরেছি। কাজেই সবার জ্ঞাতার্থে আমরা জানিয়ে রাখতে চাই, উক্ত মঞ্চের সঙ্গে আমাদের কোনো সংযুক্ততা নেই।

খাবারের মূল্য নির্ধারণ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভর্তুকি বন্ধ রেখে, ডাইনিং ভেঙ্গে ক্যাটারিং চালু করে এবং প্রশাসন নিয়ন্ত্রিত ক্যাফেটেরিয়ায় অতিরিক্ত মূল্য অপরিবর্তিত রেখে শুধু ব্যাক্তিমালিকানাধীন দোকানে মূল্য নির্ধারণ, কোন সুফল আনতে পারে না। আমরা মনে করি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের খাবারের সমস্যার সমাধান কেবল পর্যাপ্ত ভর্তুকি দিয়ে ডাইনিংয়ের খাবারের মূল্য হ্রাস এবং মানবৃদ্ধির মাধ্যমেই সম্ভব।

রাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তবুদ্ধি ও মুক্ত চেতনার আধার। এখানে বিভিন্ন মতাদর্শ ও বিশ্বাসের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে হয়। কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এখন একটি দলবাজ রাজনৈতিক সংগঠনের কর্মীদের মত। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে দেখলে মনে হয়না তিনি আমাদের অভিভাবক বা শিক্ষক। তাকে মনে হয়, কোনো প্রাইভেট কোম্পানির সিইও এবং সাথে আওয়ামী লীগের বেতনভুক্ত কর্মচারী। খাবারের দাম ও রিকশা ভাড়া নির্ধারণে একতরফা সিদ্ধান্তের কারনে আমরা ছাত্রদল মনে করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মুক্তচিন্তার পরিচয় দিতে পারেননি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খাবারের দাম ও রিকশা ভাড়া নির্ধারণে ছাত্রলীগ ও রাকসু আন্দোলন মঞ্চের পাশাপাশি ক্যাম্পাসের তিন সাংবাদিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের ডাকা হয়েছিল।

এতো দেরীতে নিজেদের সম্পৃক্ততা না থাকার বিষয়ে বিবৃতি দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে রাবি শাখা বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি শাকিল হোসেন জানান, সব সংগঠনগুলো একসাথে হয়ে সিদ্ধান্ত নিতে তাদের একটু দেরী হয়ে গেছে।

একই বিষয়ে রাবি শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুলের কাছে জানতে চাইলে প্রথমে তিনি এবিষয়ে কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তবে, কিছুক্ষণ পরে নিজেই কল দিয়ে জানান, মূলত সব সংগঠন একসাথে হয়ে সিদ্ধান্ত নিতে একটু দেরি হয়েছে।

৮টি ছাত্র সংগঠনকে না ডাকার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, দাম ও ভাড়া নির্দিষ্টকরণ সাব-কমিটি সকল কাজ করেছে। তারা কোন ফরমেটে কি করেছে আমিও জানি না। তবে, ওই আলোচনা সভায় অনেকেই উপস্থিত ছিল। ডাকা হয়নি এমন অনেকেও ছিল। আমার মনে হয়, বাম সংগঠনগুলোও ছিল। প্রক্টর অফিস পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। তবে, ছাত্রদলকে ডাকা হয়েছিল কিনা বলতে পারছি না।