কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের র্যালিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনায় ১১ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও ৫ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
আহতদের মধ্যে ৬ জনকে উলিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। উভয় গ্রুপের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, মঙ্গলবার সকালে জাতীয় শোক দিবসে দলীয় কার্যালয়ে পতাকা উত্তোলন করাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়।
এরপর উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত শোক র্যালিতে ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির নেতাকর্মীরা অংশ নেয়। এ খবর পেয়ে বর্তমান কমিটির প্রতিপক্ষ পদবঞ্চিত ছাত্রলীগের সদস্যরা তাদের ওপর হামলা চালায়।
এ সময় রামদা, চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের কর্মীরা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
এতে উভয় গ্রুপের ১১ জন আহত হন। এদের মধ্যে ৬ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা হলেন- রুবেল (২৫), জাহিদ হাসান (২১), মজিদুল (২২), জিহাদ হোসেন (২০), আজিজুল ইসলাম (১৯) ও আব্দুর রহিম (১৭)।
এছাড়া পৌর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম নয়ন, যুগ্ম আহ্বায়ক কৌনিক পান্ডে, জুলফিকার আলী জয়, নাজমুল ইসলাম, রাজকুমার বর্মন রাজুকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক প্রীতম সরকার জানান, উপজেলা সম্মেলন বাতিল করে পকেট কমিটি গঠন করা নিয়ে ছাত্রলীগের মধ্যে অসন্তোষ চলে আসছিল। মঙ্গলবার সকালে দলীয় কার্যালয়ে পতাকা উত্তোলন করা নিয়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। পরে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত শোক র্যালিতে বর্তমান কমিটির কতিপয় সদস্য রামদা, চাপাতি নিয়ে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে তাদের পক্ষের ৫ জন আহত হয়। আহতদের বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জানান, তাদের সংগঠনের শোক র্যালি শেষে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত শোক র্যালিতে যোগ দেন। মিছিলটি উলিপুর শহরের ওকে টি স্টলের সামনের সড়কে পৌঁছালে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে চাপাতি ও ক্ষুরের আঘাতে তাদের ৬ কর্মী আহত হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হোসেন মন্টু জানান, ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে অছাত্র ও অনুপ্রবেশকারীরা এ হামলার সঙ্গে জড়িত।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতি শিউলী জানান, ছাত্রলীগের কমিটিতে ছাত্রদলের অনুপ্রবেশকারীরা ঢুকে জাতীয় শোক দিবসের র্যালিতে এ হামলা চালিয়েছে।
উলিপুর থানার ওসি এস কে আবদুল্লাহ্ আল সাইদ জানান, পূর্ব বিরোধের জের ধরে শোক র্যালিতে ছাত্রলীগের দু'পক্ষের সংঘর্ষ ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এমএসএল