হংকং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিয়েনআনমেন স্কয়ারের মূর্তি অপসারণ


Dhaka | Published: 2021-12-24 14:39:06 BdST | Updated: 2024-11-09 04:05:57 BdST

বেইজিংয়ের তিয়েনআনমেন স্কয়ারে গণহত্যাকাণ্ডে নিহতদের স্মরণে হংকং বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নির্মিত ভাস্কর্য সরিয়ে ফেলা হয়েছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানায়, নির্মাণ শ্রমিকরা বুধবার রাতভর কাজ করে তামার তৈরি ৮ মিটার উচ্চতার (২৬ ফুট) ভাস্কর্যটি সরিয়ে ফেলে। কাজ চলার সময় বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তারা প্লাস্টিক শিট দিয়ে এলাকাটি ঘিরে রাখেন।

সাংবাদিকরা সেখানে যেতে চাইলে নিরাপত্তাকর্মীরা বাধা দেন এবং ভিডিও ফুটেজ নিতেও সাংবাদিকদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা চলেছে।

১৯৮৯ সালের জুনে বেইজিংয়ের কেন্দ্রস্থলে তিয়েনআনমেন স্কয়ারে গণতন্ত্রের দাবিতে বিক্ষোভে জড়ো হওয়া শত শত ছাত্র-শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করেছিল চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট সরকার। গোটা বিশ্ব সেই নৃশংসতা প্রতক্ষ্য করেছে।

নিহত সেই বিক্ষোভকারীদের স্মরণেই ১৯৯৭ সালে ডেনমার্কের ভাস্কর্যশিল্পী জেনস গ্যালশিওট স্তূপীকৃত লাশের মূর্তি দিয়ে তৈরি করেন ‘পিলার অব শেম’ নামের ভাস্কর্য, যেটি গত ২৪ বছর ধরে হংকং বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে রাখা ছিল।

বুধবার রাতের অন্ধকারে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে সেই ভাস্কর্য। তিয়ানআনমেন স্কয়ারে বেইজিংয়ের চালানো হত্যাযজ্ঞ নিয়ে হংকংয়ে যে কয়েকটি স্মারক অবশিষ্ট রয়েছে তার একটি ছিল এই শিল্পকর্ম।

চীন সম্প্রতি হংকংয়ে রাজনৈতিক বিরোধিতা দমনের পদক্ষেপ জোরদার করার মধ্যে ভাস্কর্য সরিয়ে নেওয়ার এই পদক্ষেপ এল। চলতি বছরের অক্টোবরে হংকং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রাথমিকভাবে ভাস্কর্যটি অপসারণের নির্দেশ দিয়েছিল।

বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয় জানায়, পুরানো হয়ে যাওয়া ভাস্কর্যটি সরানোর সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোত্তম স্বার্থে বহিরাগত আইনি পরামর্শের ভিত্তিতে এবং ঝুঁকি বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। নড়বড়ে এই ভাস্কর্য কী বিপদ ডেকে আনে তা নিয়েও বিশ্ববিদ্যালয় উদ্বিগ্ন।

সরিয়ে ফেলা ভাস্কর্যটি সংরক্ষণাগারে রাখা হবে বলে জানিয়েছে হংকং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।ভাস্কর্যশিল্পী গ্যালশিওট ভাস্কর্য অপসারণকে ‘সত্যিকারের নৃশংস’ ঘটনা বলে অভিহিত করেছেন।

বিবিসির নিউজ আওয়ার প্রোগ্রামে তিনি বলেন, ১৯৮৯ সালে বেইজিংয়ে নিহতদের স্মরণে এটি মৃত ব্যক্তিদের নিয়ে তৈরি করা ভাস্কর্য। সুতরাং, এভাবে যখন এটিকে ধ্বংস করা হয়, তখন তা কবরস্থানে গিয়ে সব কবরের পাথরফলক ধ্বংস করার মতোই ব্যাপার।

গ্যালশিওট এই ভাস্কর্য সরানোর জন্য কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করা এবং ক্ষতিপূরণ দাবি করার কথা ভাববেন বলে জানিয়েছেন।