চাকরি গেল সাবেক উপাচার্যের ছেলে-মেয়েসহ ৬ স্বজনের


Desk report | Published: 2023-11-08 20:08:34 BdST | Updated: 2024-10-13 22:38:47 BdST

খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ও সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মো. শহীদুর রহমান খানের ছেলে–মেয়েসহ ছয় স্বজনের নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে একজন শিক্ষক এবং পাঁচজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী।

ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৩ শিক্ষকের নিয়োগ বাতিলের জন্য আগের যে নির্দেশনা ছিল, তার মধ্যে সাবেক উপাচার্যের মেয়ে ছাড়া সবার ক্ষেত্রে তা স্থগিত করা হয়েছে। তবে নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত বাতিল হলেও ২৪ শিক্ষকের পদোন্নতি স্থগিত, একজন শিক্ষকের পদোন্নতি বাতিল ও একজন শিক্ষকের পদাবনতি করা হয়েছে।

আর অন্য ৪৬ শিক্ষক ও ৩ কর্মচারীর নিয়োগের বিষয়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়েছে। গত সোমবার ওই নির্দেশনা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সরকারি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।

যে ছয়জনের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে, তাঁরা হলেন—সাবেক উপাচার্য শহীদুর রহমান খানের মেয়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক ইশরাত খান, ছেলে সহকারী রেজিস্ট্রার শফিউর রহমান খান, শ্যালক শাখা কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন, তিন ভাতিজা কম্পিউটার অপারেটর মো. নিজাম উদ্দিন, মো. মিজানুর রহমান ও ল্যাব টেকনিশিয়ান মো. ইমরান হোসেন।

যে ২৪ জন শিক্ষকের পদোন্নতি স্থগিত রাখা হয়েছে, তার মধ্যে আছেন ২০ জন প্রভাষক ও ৪ জন সহকারী অধ্যাপক। এ ছাড়া প্রভাষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত ফিশারিজ রিসোর্সেস কনজারভেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মো. মেহেদী আলমের সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি বাতিল করা হয়েছে। অন্যদিকে মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড পাবলিক হেলথ বিভাগের মোহাম্মদ আশিকুল আলমকে সহকারী অধ্যাপকের পরিবর্তে নিয়োগকাল থেকে প্রভাষক হিসেবে পদাবনতি করা হয়েছে। তিনি কম যোগ্যতা নিয়ে ওই পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. আশিকুল আলম বলেন, আমরা আশা করিনি এমন সিদ্ধান্ত আসতে পারে। আমরা চাই না কারও চাকরি যাক। এ কারণে সাবেক উপাচার্যের মেয়ের ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পুনর্মূল্যায়নের আবেদন করা হবে। তা ছাড়া শিক্ষকদের জন্য অন্যান্য যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে, সেটিও পূর্নমূল্যায়নের জন্য সিন্ডিকেটের কাছে আবেদন করা হবে।

তিনি বলেন, ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রেখে শিক্ষকদের ধারাবাহিক যে আন্দোলন চলছিল, তা স্থগিত করা হয়েছে। কাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পুনরায় ক্লাস ও পরীক্ষা শুরু হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক আবুল কাশেম চৌধুরী বলেন, গত সোমবার বিকেলে ই-মেইলের মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই নির্দেশনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছে। এখন ওই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হবে।

জানা গেছে, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগে স্বজনপ্রীতি, আর্থিক লেনদেন সহ গুরুতর বিভিন্ন অনিয়মের প্রেক্ষিতে তদন্ত করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। ওই তদন্তের পর ২০২২ সালের ৩ আগস্ট ৭৩ জন শিক্ষকের নিয়োগ বাতিলের সুপারিশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরবর্তী সময়ে শিক্ষকরা আবেদন করায় মন্ত্রণালয় চলতি বছরের ২৪ মার্চ পুনর্মূল্যায়ন কমিটি গঠন করে। গত ২৩ আগস্ট কমিটি মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়।