রাবিতে শিবির সন্দেহে ৯ শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে পুলিশে সোপর্দ


টাইমস প্রতিবেদক | Published: 2018-02-28 15:17:40 BdST | Updated: 2024-05-10 10:23:35 BdST

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিবির সন্দেহে ৯ শিক্ষার্থীকে মারধর করে পুলিশে দিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে এ ঘটনা ঘটে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিকেল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে নয়জনকে আটক করে ওই হলে ২৩১ নম্বর কক্ষে নিয়ে যায় ছাত্রলীগ। সেখানে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। বর্তমানে তারা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) চিকিৎসাধীন।

আটক শিক্ষার্থীরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী রহমতুল্লাহ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রথম বর্ষের আরিফুর রহমান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শাহরিয়ার তানজিম, দ্বিতীয় বর্ষের আবদুল কাদের, ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের মো. ইয়াকুব, সংস্কৃত ভাষা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের মিজানুর রহমান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির মো. তুহিন, নগরীর লোকনাথ স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী গোলাম রাব্বি এবং রাজশাহী সিটি কলেজের শিক্ষার্থী তন্ময়। এদের মধ্যে তুহিন, কাদের ও ইয়াকুব হাঁটতে পারছিল না।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকেলে কয়েকজন শিক্ষার্থী শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বসে গল্প করছিল। পরে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী তাদের শিবিরকর্মী সন্দেহে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে নিয়ে যায়।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘শহীদ মিনারে বসে তারা মিটিং করছে এমন তথ্য পেয়ে আমরা সেখানে যাই। তাদের কথাবার্তা সন্দেহজনক হওয়ায় তাদের হলে নিয়ে আসি। তাদের মধ্যে নয়জনের শিবিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় পুলিশে সোপর্দ করি।’

পুলিশের হাতে আটক মো. নোমান এবং গোলাম রাব্বির জানান, তারা একটি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিংয়ের সঙ্গে জড়িত। এ বছর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনার ব্যাপারে তাঁরা কথা বলছিলেন। এ সময় ছাত্রলীগের নেতারা তাঁদের হলে নিয়ে যায়। তারা তাঁদের লোহার পাইপ এবং ছুরি দিয়ে আঘাত করে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘শিবির সন্দেহে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কয়েকজনকে আটক করেছিল। পরে হলের প্রাধ্যক্ষ ও পুলিশের সহযোগিতায় আমরা তাদের উদ্ধার করেছি। এখন পরিস্থিতি শান্ত।’

জানতে চাইলে মতিহার থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাদত হোসেন বলেন, ‘আটক শিক্ষার্থীদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চিকিৎসার জন্য আমরা হাসপাতালে পাঠিয়েছি। অবস্থা স্বাভাবিক হলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

এসজে/ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮