কৃষ্ণচূড়ার রঙে রক্তিম সাজে সেজেছে বশেমুরবিপ্রবি


Arafat Alam | Published: 2024-05-10 09:35:34 BdST | Updated: 2024-05-20 22:00:16 BdST

বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দিকে দিকে উঁকি দেয় আগুনঝরা রক্তরাঙা কৃষ্ণচূড়া। নজরকাড়া ফুলের রঙিন সাজে সেজেছে পুরো ক্যাম্পাস। প্রকৃতির এমন উপহার যেন শিক্ষার্থীদের হৃদয়ে এনে দেয় স্বস্তির ছাপ। ক্যাম্পাসে আসা শিক্ষার্থীদের সময়কে রাঙ্গিয়ে দিয়ে স্মৃতির পাতায় মধু মেশাতেই হয়তো প্রকৃতির এ আয়োজন। প্রতিবছরই শিক্ষার্থীদের মন পরিষ্কার রাখতে এপ্রিল মে মাস আসলেই শুরু হয় এদের আনাগোনা। ২-৩ মাস ধরে যখন হয়তো কঠিন বৃষ্টি অথবা প্রখর রোদ শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে আসতে বাধা দেয় ঠিক তখনই কৃষ্ণচূড়ার রঙিন সাজ রোদ বৃষ্টি ডেঙ্গিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে আসতে উৎসাহিত করে। কেবল ক্যাম্পাসের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা-করমচারি-কর্মকর্তারাই নন, নজরকাড়া এই ফুলের সৌরভ মুগ্ধ দূরদূরান্ত থেকে ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরাও। টুঙ্গিপাড়া ইনস্টিটিউট অভ হেলথ টেকনোলজি থেকে ঘুরতে আসে আট-নয়জন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পিপাসু শিক্ষার্থী। এদেরই মধ্যে একজন রাসেদ। রক্তিম-রঙিন সৌরভের সুবাসিত হয়ে বলে উঠে, এই ফুল যে পরিবেশের সৌন্দর্য এভাবে বৃদ্ধি করতে পারে আগে জানতাম না। কিছুদিন আগেই একবার এখানে এসেছিলাম। এখন এসে মনে হচ্ছে যেন ভিন্ন এক রাজ্যে আসলাম। এই তুখড় রোদের তাপ যেন ফুলগুলোর দিকে তাকালে ভূলেই যাই‌।

কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো একসময় পূর্ব আফ্রিকার মাদাগাস্কারে ছিলো। বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিখ রেজিয়া। এটি ফাবাসিয়ি ফ্যামিলির অন্তর্গত, যা গুলমোহর নামেও পরিচিত। এগুলো গড়ে ১১ থেকে ১২ মিটার লম্বা হয়ে থাকে। কিন্তু এর ঢাল-পালা শাখা-প্রশাখা অনেক দূর পর্যন্ত ছড়ানো থাকে। আমাদের দেশে এপ্রিল থেকে জুন এই তিনমাস দৃষ্টিনন্দন ফুলটির রাজত্ব থাকে। কৃষ্ণচূড়ার ফুলগুলোতে সাধারণত চারটি বড় পাপড়ি যুক্ত হয়। এগুলো গড়ে ৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। সৌন্দর্যবর্ধক হিসেবেই যদিও সার্বজনীন এরা পরিচিত তবে এই গুণ ছাড়াও এই গাছ উষ্ণ আবহাওয়ায় ছায়া দিয়েও এই গাছ বিশেষভাব পরিচিত।

উদ্ভিদবিদরা বলেন কৃষ্ণচূড়ার ফুলের বিভিন্ন রং হয়ে থাকে বিশেষকরে লাল, সাদা আর হলুদ।তবে বাংলাদেশে লাল রঙের কৃষ্ণচূড়াই সাধারণত বেশি দেখা যায়। লাল ও হলুদ রঙের কৃষ্ণচূড়ার প্রভাব বেশি সত্ত্বেও সাদা রঙের কৃষ্ণচূড়াও কালভদ্রে দেখা যায়।

সর্বোপরি লাল-সবুজ কৃষ্ণচূড়ার এই রক্তে রাঙানো দৃশ্য আকৃষ্ট করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী সহ সবাইকে। শিক্ষার্থীরা লম্বা সময় ধরে করা ক্লাসের পর ক্লান্তির ছাপে যখন শিক্ষার্থীরা থাকে মন ভালো করতে ক্লান্তির কাটানোর জন্যও আড্ডার স্থান হিসেবে বেছে নেয় লাল কৃষ্ণচূড়ার ছায়াকে। দর্শানার্থী পুরো ক্যাম্পাস ঘুরে এসে নিজেকে ক্যামেরার ফ্রেমবন্দি করতে ছুটে চলে কৃষ্ণচূড়ার তলে। কালের পালাবদলে এই ফুল ফুটে আবার আতিপ্রাকৃতিক নিয়ম হিসেবে চলে যায়। কিন্তু এটি আপন মায়ায় জড়িয়ে তার দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্যে বশেমুরবিপ্রবিকে সাজায় অপরূপ সাজে।যে সাজ হারিয়ে দেয় সব যে সৌন্দর্যকে। ক্যাম্পাসকে করে তোলে প্রাণবন্ত,জীবন্ত, আর অনন্য।