শোকজ প্রত্যাহারের দাবিতে অনড় অবস্থানে কুবির শিক্ষক


টাইমস প্রতিবেদক | Published: 2017-08-14 15:50:45 BdST | Updated: 2024-05-11 21:37:21 BdST

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) স্থাপিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণে দুর্নীতি, দায়সারাভাবে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ তুলে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে দেয়া স্ট্যাটাসের প্রেক্ষিতে নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আসাদুজ্জামানের নিকট প্রশাসনের প্রেরিত কারণদর্শানোর চিঠির (শোকজ) প্রতিবাদে ২য় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ভূক্তভোগী শিক্ষক।

রোববার (১৩ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থানে বসেন তিনি।

এ সময় ওই শিক্ষকের দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করে কয়েকজন শিক্ষক ও বেশকিছু বিভাগের শিক্ষার্থীও অবস্থান নেয়।

তবে তার এই অবস্থানকে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আলী আশরাফ বলেন, তার কাছে যদি ভাস্কর্য নির্মাণে দুর্নীতির কোন তথ্য-প্রমাণ থাকে তাহলে তিনি তা উপস্থাপন না করে চিঠি প্রত্যাহারের জন্য অবস্থান করার কোন যৌক্তিকতা নেই।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণে দুর্নীতি, দায়সারাভাবে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ তুলে গত ৩১ জুলাই নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। ওই স্ট্যাটাসে উল্লেখিত অভিযোগের বিষয়ে তথ্য প্রমাণাদিসহ লিখিত বক্তব্য বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রারের নিকট গত মঙ্গলবার (৮আগস্ট) থেকে আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে উপস্থাপন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের কাছে অনুরোধ জানানো হয়। এরই প্রেক্ষিতে শিক্ষক আসাদুজ্জামান গত বৃহস্পতিবার থেকে তার বিরুদ্ধে আনীত চিঠি প্রত্যাহারের দাবিতে কার্যদিবসগুলোতে অবস্থান নেন এবং অবস্থান কর্মসূচি নিয়মিত চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামান জানান, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণে ত্রুটি ও গাফলতি ছিল বলেই একবার স্থাপনের পর ভেঙে আবার নতুন করে বসানো হয়েছে। আর এই সম্পর্কিত স্ট্যাটাস শুধু আমি একাই দেইনি। বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও দিয়েছেন। তাদের সবার বিরুদ্ধে তো ব্যবস্থা বা শোকজ দেয়া হচ্ছে না। শুধু আমাকেই কেন হয়রানি করা হচ্ছে? আমি মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করার জন্য এসব থেকে বিরত রাখতেই আমার বিরুদ্ধে এই প্রহসন। আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে আমার বিরুদ্ধে প্রেরিত চিঠি প্রত্যাহারের আবেদন জানাচ্ছি। অন্যথায় আমি আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাব।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আলী আশরাফ জানান, জাতির জনকের ভাস্কর্য নির্মাণে কোন ধরনের দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়নি। প্রথমবার স্থাপনের সময় এটির মূল নকশা ১৫ ফুট উচ্চতার জায়গায় ১১ ফুট দেয়া হয়েছিল যা এর শিল্পী মৃণাল হকের ব্যক্তিগত ত্রুটি ছিল। তাই পরবর্তীতে আমাদের চাপের মুখে মৃণাল হক এটি প্রতিস্থাপিত করেছেন মূল নকশা ও পিপিআর এর রুল অনুযায়ী। আর এই বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক তার ফেসবুক প্রোফাইলে যে স্ট্যাটাস দিয়েছেন, তা মানহানিকর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তির জন্য হুমকি স্বরূপ। তাই তার কাছে এ সম্পর্কিত তথ্য-প্রমাণ চাওয়া হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

এসজে/ ১৪ আগস্ট ২০১৭