রাবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষিকার বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ


রাবি টাইমস | Published: 2017-08-22 15:46:36 BdST | Updated: 2024-05-14 22:00:13 BdST

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুখসানা পারভীনের বিরুদ্ধে এবার ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী বিভিন্নভাবে হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন। সোমবার (২১ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এ অভিযোগ দেন ওই শিক্ষার্থী।

অভিযোগ দেয়া রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১১-২০১২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাদিম মোস্তফা বলেন, আমার শিক্ষক রুখসানা পারভীন বিভিন্ন সময় আমাকে অপমান, অপদস্থ এবং হয়রানি করেছেন। বিশেষ করে তিনি একাডেমিক ও মানসিকভাবে চরম নির্যাতনের মুখোমুখি করেছেন। পরীক্ষায় ফেল করে দেয়ার ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে আমাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করেছেন। তিনি তার বাসায় কাজের মেয়ে সরবরাহের জন্য আমাকে বাধ্য করতেন। অপরাগতা প্রকাশ করলে ফেল করিয়ে দেয়ার ও পুলিশি হয়রানির হুমকি দিতেন। ৫-৬ বার কাজের মেয়ে সরবরাহ করেছি। পরবর্তীতে অপারগতা প্রকাশ করায় তিনি চতুর্থ বর্ষে তার কোর্সের (৪০৫) ইনকোর্স পরীক্ষা নেননি। কাজের মেয়ে সরবরাহ না করলে পরীক্ষা নেবেন না বলে পরিষ্কার জানিয়ে দেন। এমনকি পরবর্তীতে চূড়ান্ত পরীক্ষায়ও আশানুরূপ নম্বর দেননি।

নাদিম মোস্তফা অভিযোগ করেন, কোন মতে স্নাতক শেষ করলেও স্নাতকোত্তরে ভর্তিই হতে পারিনি রুখসানা পারভীনের কারণে। তিনি কয়েকবার হুমকি দিয়েছেন যে, আমি যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকি তাহলে তিনি আমাকে দেখে নেবেন এবং পুলিশি হয়রানি করবেন। তার এমন আচরণেই স্নাতকোত্তরে ভর্তি হইনি। এমন পরিস্থিতিতে তিনি বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি। খবর জাগো নিউজ।

তবে এসব বিষয়ে রুখসানা পারভীন বলেন, এগুলো সবই ওই ১১ শিক্ষকের ষড়যন্ত্র। তারা ওই শিক্ষার্থীকে আমার বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে আমার করা অভিযোগকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য। তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। তারা সবকিছু খতিয়ে দেখবে।

তবে ফোনালাপের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বারবার বিষয়টি এড়িয়ে যান ও অস্বীকার করেন।

ফোনালাপ থেকে জানা গেছে, নাদিম মোস্তফাকে ফোনে বিভিন্ন সময় পরীক্ষায় ফেল করে দেয়া, পুলিশি হয়রানির হুমকি, কাজের মেয়ে সরবরাহসহ বিভিন্ন কাজের কথা বলতেন রুখসানা পারভীন। সেগুলো না করলে পরীক্ষায় তার ফলাফলে প্রভাব পড়বে বলেও উল্লেখ করেন রুখসানা পারভীন।

উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ১১ শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন রুখসানা পারভীন। এর মধ্যে একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ‘যৌন হয়রানির’ অভিযোগও তোলেন। এ সময় ১১ জন শিক্ষক রুখসানার বিরুদ্ধে ‘আপত্তিকর মন্তব্যের’ অভিযোগ তোলেন। পরে গত ২ আগস্ট বিভাগের শিক্ষকরা ৭টি কারণ উল্লেখ করে বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক নাসিমা জামানের প্রতি অনাস্থা ও রুখসানা পারভীনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের দাবি জানিয়ে উপাচার্যকে লিখিত অভিযোগ দেন।

পরদিন অধ্যাপক নাসিমা জামান অর্থ আত্মসাতসহ নানা অভিযোগ তুলে বিভাগের ১১ শিক্ষকের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ দেন। ৪ আগস্ট বিভাগের ১১ জন শিক্ষক সংবাদ সম্মেলন করে সেই অভিযোগ অস্বীকার করেন। ৫ আগস্ট রাতে সভাপতির পদত্যাগ দাবিতে রোববার থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেন ওই ১১ শিক্ষক। এর প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সার্বিক বিষয় তদন্তের জন্য গত ৬ আগস্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।

টিআই/ ২২ আগস্ট ২০১৭