
প্রথম দফার ভোটে হেরে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নাটকীয়ভাবে জার্মান পার্লামেন্টে দ্বিতীয় দফার ভোটে জয় পেয়েছেন ফ্রিডরিশ মের্ৎস। মঙ্গলবার বিকেলে আয়োজিত এক জরুরি অধিবেশনে ৩২৫ জন পার্লামেন্ট সদস্য তাঁর পক্ষে ভোট দেন, যেখানে চ্যান্সেলর হতে প্রয়োজন ছিল ৩১৬ ভোট।
সিএনএন জানিয়েছে, গত ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে মধ্য-বাম সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট (এসপিডি) দলের সঙ্গে জোট গঠন করেন মের্ৎস। তবে চ্যান্সেলর নির্বাচনের প্রথম দফায় মাত্র ছয় ভোটের জন্য পরাজিত হন তিনি—যা জার্মান রাজনৈতিক ইতিহাসে নজিরবিহীন। এতে তাঁর নেতৃত্বাধীন জোটের ভেতরে অসন্তোষ ও অনিশ্চয়তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
প্রেসিডেন্টের অনুমোদনের পর মের্ৎস আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। তবে তাঁর যাত্রা শুরু হচ্ছে এক টালমাটাল রাজনৈতিক বাস্তবতায়। দ্বিতীয় দফার জয় সত্ত্বেও জোটের অভ্যন্তরীণ দ্বিধা এবং কট্টর-ডানপন্থী এএফডি পার্টির উত্থান জার্মান রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
সিডিইউ-এসপিডি জোটের হাতে ছিল মোট ৩২৮টি আসন—চ্যান্সেলর নির্বাচনের জন্য যথেষ্ট। ফলে দিনের শুরুটা মের্ৎসের জন্য হওয়ার কথা ছিল উৎসবমুখর। কিন্তু প্রথম দফার হঠাৎ পরাজয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। সাম্প্রতিক সময়ে এএফডির কড়া সমালোচনা এবং যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনের হস্তক্ষেপ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে। গোপন ব্যালটে কারা তাঁর বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন, তা জানা সম্ভব হয়নি।
নির্বাচনের পর মের্ৎস বলেন, তিনি একটি আক্রমণাত্মক সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাঁর নেতৃত্বে জার্মানি আবারও ২০২২ সালের ‘টার্নিং পয়েন্ট’ নিরাপত্তা নীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, যার মাধ্যমে সেনাবাহিনীর আধুনিকীকরণ এবং প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের ইউক্রেনে সহায়তা বন্ধ এবং ইউরোপ থেকে নিরাপত্তা প্রত্যাহারের হুমকির প্রেক্ষাপটে এই উদ্যোগ আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। দ্বিতীয় দফার ভোটে জয় পাওয়ার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এক্স-এ দেওয়া বার্তায় লেখেন, ‘আমরা আন্তরিকভাবে আশা করি জার্মানি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে এবং ইউরোপ ও ট্রান্সআটলান্টিক অঞ্চলে তার নেতৃত্ব আরও সুদৃঢ় হবে। ইউরোপের ভবিষ্যৎ এখন আমাদের ঐক্যের ওপর নির্ভর করছে।’